দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ওমান, অস্ট্রেলিয়ার পর এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্র। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন করল ১০টি দেশ বা অঞ্চল। তবে রেকর্ডটি বদলাল না। কখনোই স্বাগতিক দল শিরোপা জেতেনি এ টুর্নামেন্টে। গতকাল ইংল্যান্ডের কাছে হারের পর যুক্তরাষ্ট্র আর আজ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিদায় নেওয়ার পর নিশ্চিত হলো—এবারও অক্ষুণ্ন থাকছে সে রেকর্ড।
স্বাগতিক হয়েও শিরোপা জেতার খরা কাটানোর ক্ষেত্রে এবার নিশ্চিতভাবেই মূল বাজি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঘিরে। যদিও প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে এসেই পাকিস্তানকে হারিয়ে সুপার এইটে উঠে চমক দেখায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে আইসিসির সহযোগী দেশটির ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক অ্যারন জোনস গতকালই বলেছেন, সুপার এইটে ওঠাই তাদের জন্য বড় পাওয়া, ‘আমাদের প্রথম বিশ্বকাপ। আমার মনে হয় না লোকে ভেবেছে আমরা এখানে এসে (সুপার এইটে) বড় দলগুলোর সঙ্গে খেলব। আশা করি এটি আমেরিকান জনগণের চোখ খুলে দেবে। আমরা বিশ্বকাপের সময় অনেক বার্তা ও কল পেয়েছি।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলও বলছেন স্বাগতিক হিসেবে পাওয়া সমর্থনের কথা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পর তিনি বলেছেন, ‘(সমর্থকেরা) দারুণ ছিল। প্রতিটি ভেন্যু যেগুলোতে আমরা খেলেছি এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সব কটিতে তারা আমাদের যা দিয়েছে, দল হিসেবে সেগুলোকে সাধুবাদ জানাই। অনেক দিন ধরে ক্রিকেট নিয়ে উৎসাহটা কমে এসেছিল, সেটি ফিরতে দেখে ভালো লাগছে। এখন মানুষ খেলোয়াড়দের ঘিরে মিছিল করছে। সংগীতের সময় আমরা খেলোয়াড়েরা কিছু অনুভব করি আর সেটা ঠিক পথেই এগোচ্ছে। শুধু অ্যান্টিগা নয়, পুরো ক্যারিবীয় অঞ্চলের মানুষকেই ধন্যবাদ এগিয়ে আসার জন্য।’
২০১২ ও ২০১৬ সালে শিরোপাজয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজের টি-টোয়েন্টিতে সোনালি সময়টা পেরিয়ে গেছে, বলা হয় এমন। ২০১৬ সালের পর থেকে সেমিফাইনালে উঠতেও ব্যর্থ দলটি। এবারও সেটি করতে না পারলেও পাওয়েল দেখতে পাচ্ছেন ইতিবাচক দিক, ‘বড় পরিসরে তাকালে দেখবেন, আমরা বিশ্বকাপ জিতিনি বা সেমিফাইনালেও উঠিনি। কিন্তু গত ১৫ মাসে যে ক্রিকেট খেলেছি, র্যাঙ্কিংয়ে ৯ নম্বর থেকে ৩ নম্বরে এসেছি—এটা প্রশংসাযোগ্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট নিয়ে ক্যারিবীয়তে অনেক উন্মাদনা আছে। এখন সেখানেই কাজ শুরু করতে হবে। দল হিসেবে কাজ করতে হবে এবং ক্যারিবীয় মানুষদের গর্বিত করতে হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচটি ছিল কার্যত কোয়ার্টার ফাইনাল—জিতলেই নিশ্চিত সেমিফাইনাল আর হারলেই বিদায়। সেখানে ১৩৫ রানের স্কোর নিয়েও লড়াই করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটিকেও ইতিবাচক হিসেবে দেখেন পাওয়েল, ‘ছেলেদের কৃতিত্ব দিতে হবে, শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে। ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে এমন পারফরম্যান্স ভুলে যেতে চাইব। আমরা মাঝের ওভারগুলোতে ভালো ব্যাটিং করিনি। এটা সহজ উইকেট ছিল না, বিশেষ করে ইনিংসের শুরুতে। মাঝের ওভারে গুচ্ছাকারে উইকেট হারিয়েছি, আমাদের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে সেটি। আমরা বলেছি যে সর্বস্বটা দেব। দল বিশ্বাস করেছিল সেটি, স্কোরে মাত্র ১৩৫ রান থাকার পরও।’