চুক্তি ছিল দুই বছরের। আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত। কিন্তু এর আগেই তাঁকে বিদায় করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আজ আনুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহেকে শোকজ এবং সাসপেন্ড করার ঘোষণা দেন বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ।
মিরপুরে আজ সংবাদ সম্মেলনে ফারুক বলেছেন, ‘বরখাস্ত করার আগে আমরা তাঁকে নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স।’
মূলত অসদাচরণের জন্যই হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘দুই তিনটি ঘটনা ঘটেছে, যেগুলি আসলে একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য খুব পীড়াদায়ক ছিল। পাশাপাশি এটা দলের জন্যও খুব একটা ভালো উদাহরণ ছিল না। সেগুলি বিবেচনা করে আজকে আমরা তাঁকে একটা কারণ দর্শাও নোটিশ এবং দায়িত্ব থেকে অব্যহতির চিঠি দিয়েছি।’
গত বছর ভারতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের সময় জাতীয় দলের ক্রিকেটার নাসুম আহমেদকে শারীরিকভাবে আঘাত করেছিলেন বলে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল। সেই ঘটনার যে একটা বড় ভূমিকা আছে তাঁর বরখাস্ত হওয়ার পেছনে, সেটাও স্পষ্ট ফারুকের কথায়। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন, ‘একজন জাতীয় দলের খেলোয়াড়কে আপনি কখনোই শারীরিকভাবে আঘাত করতে পারেন না। এটার শাস্তি সেটাই, যেটা এখন হচ্ছে।’
আগামী সপ্তাহেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই টেস্টের সিরিজ শুরু হবে। সেই সিরিজের আগে ভারত সফর শেষে পরশু রাতে হাথুরুসিংহে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে ঢাকায় ফিরেছেন। কিন্তু ঢাকায় তাঁর আর থাকা হচ্ছে না।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে এটা ছিল হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় অধ্যায়। প্রথমবার বাংলাদেশের কোচের দায়িত্বে ছিলেন ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। সেবার হাথুরুসিংহে নিজেই কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে তিনি ই–মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। সেবার তাঁর সঙ্গে চুক্তি ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বাংলাদেশের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মাসখানেক পরই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন হাথুরুসিংহে।
ফারুক আহমেদ বিসিবির দায়িত্ব নেওয়ার পরই হাথুরুসিংহেকে সরিয়ে দেওয়ার আভাস দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুর অধীনে ১০টি টেস্ট, ৩৫টি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি–টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে হারজিত সমানে সমান—৫টি জয় ও ৫টি হার। তবে ওয়ানডেতে ফল ছিল হতাশাজনক—৩৫ ম্যাচে ১৩টি জয়, হার ১৯টি, ৩ ম্যাচে ফল হয়নি। টি–টোয়েন্টিতে ৩৫ ম্যাচের ১৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ১৫টি, একটিতে ফল হয়নি।