গত মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজে ব্যর্থতার সোজাসাপটা কারণই দেখিয়েছিলেন মুমিনুল হক—প্রস্তুতির ঘাটতি। মুমিনুল যদি কথাটা না-ও বলতেন, তবু বিষয়টা বুঝতে অসুবিধা হতো না কারও। প্রস্তুতির অভাব এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছিল দুই টেস্টের ওই সিরিজে।
বিপিএলের পর প্রিমিয়ার লিগ খেলে আসা ব্যাটসম্যানরা টেস্ট ক্রিকেটটাও যেন খেলছিলেন সাদা বলের ক্রিকেটের মতো। পরিণতি—ব্যাটিং–ব্যর্থতার মাশুল দিয়ে বাংলাদেশ সিরিজ হারে ২-০ ব্যবধানে। পাঁচ মাসের বিরতির পর পাকিস্তান সফর দিয়ে এ মাসেই আবার টেস্টে ফিরতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানে দুটিসহ আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৮টি টেস্ট খেলবে নাজমুল হোসেনের দল। তার আগে গত শ্রীলঙ্কা সিরিজের ভুল থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগিয়ে ক্রিকেটারদের বিশেষ প্রস্তুতির ব্যবস্থা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
গত ২৫ মে থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত সিলেট ও চট্টগ্রামে টাইগার্স ক্যাম্পের অধীন টেস্ট দলের সম্ভাব্য ক্রিকেটাররা অনুশীলন করেছেন, অনুশীলন ম্যাচ খেলেছেন। আলাদা করে শুধু টেস্ট দলের ক্রিকেটারদের নিয়ে এর আগে এমন ব্যাপকভাবে কাজ হয়নি বলে ধারণা ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা বিসিবির কোচ সোহেল ইসলামের, ‘লাল বলের সিরিজের আগে যেমন প্রস্তুতি নেওয়া হতো, তার চেয়ে এবারের প্রস্তুতি ভালো। এবার আমরা অনেক বেশি মনোযোগী ছিলাম। দুই মাস আগে থেকে খুব নিখুঁতভাবে সব কাজ করার চেষ্টা করেছি।’
ক্যাম্প নিয়ে সোহেল বলেছেন, ‘এখানে শুধু জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছিল, তা নয়। টাইগার্সের খেলোয়াড়ও ছিল। শেষের দিকে এইচপির ছেলেরা এসেছে। ম্যাচের পাশাপাশি আমরা ওয়ান টু ওয়ান কোচিং, ফিটনেস—সবকিছু দেখেছি। খেলার মধ্যে এ ধরনের বিশেষায়িত কাজগুলো করা হয় না। ক্যাম্পে তা করতে পেরেছি।’
ক্যাম্পে ক্রিকেটারদের সঙ্গে অনেকটা সময় কাটিয়েছেন নির্বাচক আবদুর রাজ্জাক। রাজ্জাক জানিয়েছেন তাঁর অভিজ্ঞতার কথা, ‘পরিকল্পনা ছিল, আমরা ক্যাম্পের শুরুতে অনুশীলন করে ঢাকায় ফেরার আগে কয়েকটা ম্যাচ খেলব। কিছুটা চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেটা আমরা মোটামুটি করতে পেরেছি।’ সাবেক এই ক্রিকেটার ‘চ্যালেঞ্জ’ শব্দটা দিয়ে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি আর আবহাওয়ার কথাই বুঝিয়েছেন, ‘শেষের দিকে যা হয়েছে, তা না হলে আরেকটু ভালো হতো। এগুলো আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবু এর মধ্যে যা হয়েছে, তা খুব খারাপ হয়নি।’
অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মেহেদী হাসান মিরাজ দুই মাসের এই ক্যাম্প নিয়ে বেশ তৃপ্ত, ‘একটা টেস্ট সিজনের আগে যতটা প্রস্তুতি নেওয়া যায়, সেটা নিতে পেরেছি। কোচরা আগামীতে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ আসতে পারে, সে অনুযায়ী অনুশীলন পরিকল্পনা সাজিয়েছেন। খেলোয়াড়েরা এর সুফল পাবে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের পর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেননি পেসার খালেদ আহমেদ। তাঁর জন্য এই ক্যাম্প তাই ছিল দারুণ একটা সুযোগ, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে উপকৃত হয়েছি। শ্রীলঙ্কা সিরিজের পর প্রিমিয়ার লিগে চোটে পড়েছিলাম। সেরা ছন্দে ফিরতে অনুশীলনের পাশাপাশি ম্যাচও খেলতে হতো। ক্যাম্পে ম্যাচ খেলায় সেটা হয়েছে।’