এর আগে কয়েকবার কাছে গিয়েও পাকিস্তানকে হারাতে পারেনি আফগানিস্তান। শারজায় গতকাল প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে আফগানদের উল্লাসটা তাই একটু বেশিই। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক রশিদ খানের কথাতেই পাওয়া গেছে পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম জয়ের উল্লাসের ছোঁয়া।
পাকিস্তানের ক্রিকেট মহলে এর উল্টো চিত্র দেখা যাওয়াটাই স্বাভাবিক। শাদাব খানের নেতৃত্বে খেলা তরুণ দলটিকে ধুয়ে দিচ্ছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজে তরুণ অনেক ক্রিকেটারকে বাজিয়ে দেখতে চেয়েছে পিসিবি। সে কারণে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে নিয়মিত অধিনায়ক বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহিন আফ্রিদি, হারিস রউফ ও ফখর জামানকে।
দলে থাকা দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ইফতিখার আহমেদ ও শান মাসুদকে একাদশে রাখা হয়নি। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছে চারজন ক্রিকেটারের। পাকিস্তানের সাবেক উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান কামরান আকমলের আপত্তিটা এখানেই, ‘পাঁচজন ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে, এরপরও কেন ইফতিখার ও শান মাসুদকে নেওয়া হয়নি। তাদের খেলানোর ইচ্ছা না থাকলে তাদেরও এই সিরিজ থেকে বিশ্রাম দেওয়া যেত।’
বাবর আজমের অবর্তমানে এই সিরিজে নেতৃত্বের ভার শাদাব খানের কাঁধে। কয়েক বছর ধরেই পাকিস্তানের সহ-অধিনায়ক শাদাব। ঘরোয়া ক্রিকেটেও আছে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা। এরপরও শাদাবের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কামরান, ‘শাদাব উইকেটটা ঠিকভাবে পড়তে পারেনি। ও বুঝতে পারেনি, এই উইকেট কী প্রয়োজন ছিল।’
কামরানের মতো শাদাবের দিকে আঙুল তুলেছেন সাবেক ওপেনার সালমান বাটও, ‘উইকেটে স্পিন বোলারদের জন্য সহায়তা ছিল। কিন্তু শাদাব পেসারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছে, নিজেও বেশি পেসে বোলিং করেছে। নজিবউল্লাহ জাদরান যখন ক্রিজে এল, কোনো স্লিপও রাখা হয়নি। ইহসানউল্লাহর বিপরীতে আফগান ব্যাটসম্যানরা ঠিকভাবে খেলতে পারছিল না, কিন্তু তখন সব ফিল্ডারদের বাউন্ডারিতে রেখেছিলেন শাদাব।’
আফগান অধিনায়ক রশিদ খানের অবশ্য এত কিছু না ভাবলেও চলছে। ম্যাচ শেষে উল্লসিত রশিদ জানিয়েছেন জয়ের ছন্দটা তিনি ধরে রাখতে চান, ‘জিতে ভালো লাগছে। কারণ, তাদের বিপক্ষে আমরা সব সময়ই হেরেছি। কখনো কখনো খুব কম ব্যবধানে হেরেছি। আশা করছি ছন্দটা ধরে রাখতে পারব। উন্নতিটা শুধু এই সিরিজের জন্য নয়, আগামী বিশ্বকাপের জন্যও উন্নতির ধারা বজায় রাখা জরুরি।’
এর আগে এই দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল গত বছরের এশিয়া কাপে। সেই ম্যাচ চলাকালে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান আসিফ আলীর সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন আফগান পেসার ফরিদ আহমদ মালিক। মাঠে একে–অপরকে মারতেও উদ্যত হন এই দুই ক্রিকেটার।
তাঁদের সেই দ্বন্দ্বের রেশ ছিল ম্যাচ শেষেও। দুই দেশের সমর্থকেরাও জড়িয়েছিলেন হাতাহাতিতে। এই সিরিজের আগে আফগান ক্রিকেটার ও সমর্থকদের আচরণ যেন সংযত থাকে, তা নিয়ে আফগান বোর্ডকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন পিসিবি প্রধান নাজাম শেঠি।
এ বিষয়ে ম্যাচ শেষে রশিদ কোনো কথা না বললেও ক্রিকেটাররা যে দুই দলের সর্বশেষ লড়াইটা মাথায় রেখেই মাঠে নেমেছিলেন, তা তাঁদের ‘চওড়া হাসিতেই’ স্পষ্ট।