বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সাত নম্বর ব্যাটসম্যান কে

এশিয়া কাপের দলে সাত নম্বরের সম্ভাব্য ব্যাটসম্যান আছেন চারজন। তাঁদের মধ্যে কে হবেন সাত নম্বর ব্যাটসম্যান?

২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাব্বির রহমান, ২০১৯–এ মোসাদ্দেক হোসেন। আরও একটি ওয়ানডে বিশ্বকাপ যখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে, তখন পুরোনো প্রশ্নটা ঘুরেফিরে সামনে আসছে। এবার কে হবেন বাংলাদেশ দলের সাত নম্বর ব্যাটসম্যান? সাব্বির এ মুহূর্তে জাতীয় দলের আশপাশেও নেই।

এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলেও জায়গা হয়নি মোসাদ্দেকের। এশিয়া কাপের জন্য ঘোষিত ১৭ সদস্যের দলে যাঁরা আছেন, তাঁদের মধ্যে সাত নম্বরে সম্ভাব্য নাম পাওয়া যাচ্ছে চারটি—আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, শামীম হোসেন ও শেখ মেহেদী।

শেষ আফগানিস্তান সিরিজে সাত নম্বরে খেলেছেন আফিফ। তিন ম্যাচের মধ্যে দুটি ইনিংসে (০, ৪) সুযোগ পেয়ে বিশেষ কিছু করতে পারেননি তিনি। তবু তাঁর ওপর আস্থা রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশের হয়ে এই পজিশনে সবচেয়ে বেশি খেলেছেন আফিফই। ২০ ম্যাচের ১৭ ইনিংসে ব্যাট করে রান করেছেন ৩৭৬। আফিফের পরই আছেন মিরাজ। ১২ ম্যাচে ৯ ইনিংসে তাঁর মোট রান ১২৪। আপাতত সাত নম্বরে মিরাজের নামটাই বেশি শোনা যাচ্ছে।

এর বাইরে সাত নম্বরের প্রতিযোগিতা বাড়ানোর জন্য দলে রাখা হয়েছে অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা শামীমকে। ইমার্জিং এশিয়া কাপের পারফরম্যান্স দিয়ে দলে ঢুকে গেছেন শেখ মেহেদীও।

শেষ পর্যন্ত কে হবেন বাংলাদেশ দলের সাত নম্বর ব্যাটসম্যান? ওয়ানডে ম্যাচের শেষে বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের চাহিদাটা কে পূরণ করবেন? বিকেএসপির ক্রিকেট উপদেষ্টা নাজমূল আবেদীন দলের সমন্বয়ের কথা চিন্তা করে শেখ মেহেদীর নামটা বেছে নিলেন, ‘সমন্বয়ের বিষয়টি এখানে গুরুত্বপূর্ণ। তিন পেসার, তিন স্পিনারের দল হলে কিন্তু শেখ মেহেদী চলে আসবে আলোচনায়। সাতে মিরাজ, আটে মেহেদী। এরপর তিন পেসার।’

এতে বাংলাদেশ দলের লেজের সারির ব্যাটিং কিছুটা শক্তিশালী হবে বলেও বিশ্বাস নাজমূলের, ‘নয় নম্বরে তাসকিন ব্যাটিংয়ে এলে টেইলটা কিছুটা স্থিতিশীলতা পাবে। সে ক্ষেত্রে শেখ মেহেদীই এগিয়ে থাকবে। আফিফ–শামীমরা শেখ মেহেদীর চেয়ে অনেক ভালো ব্যাটসম্যান। কিন্তু বোলিং করার ব্যাপারটা মেহেদীকে এগিয়ে রাখবে। ওয়ানডেতে ছয়টা বোলিং অপশন থাকলে ভালো।’

আমাদের টপ অর্ডারে একটা সমস্যা ছিল। তখন মিডল অর্ডারের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল ছিলাম। লিটন-শান্তরা ভালো করায় সেটা অনেকটা কমে এসেছে। আর মিডল অর্ডারে হৃদয়ের আসাটা দলের জন্য বিগ প্লাস। আশা করব, সে যেভাবে খেলছে, তা ধরে রাখবে। আর লোয়ার মিডল অর্ডারে যারা আছে, সবাই পজিটিভ প্লেয়ার, সবাই একটা জায়গার জন্য লড়ছে। এটা দলের জন্য ভালো।
হাবিবুল বাশার, নির্বাচক, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল

নির্বাচক হাবিবুল বাশার স্বাভাবিকভাবেই আলাদা করে কারও নাম বলতে চাইলেন না। নিরাপদ পথে হেঁটে তিনি সবার মধ্যেই ভালো সম্ভাবনা দেখেন, ‘যে চারজনের নাম বলছেন, এরা সবাই দলের জন্য খেলে। ওই জায়গায় রানটা বড় হয় না। ঝুঁকি নিতে হয়। কিন্তু ওরা দলের জন্য খেলে। এটাই সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট। আর ওদের মধ্যে ওই জিনিসটা আছে। তখন তো বড় ইনিংসের দরকার নেই। যে কাজ ওদের করতে হবে, সে জন্য যে দক্ষতা দরকার, তা ওদের আছে। সাহসও আছে। ওরা সবাই তরুণ। এখন ওরা অ্যাডভেঞ্চারাস হবে। সেদিক থেকে ওদের নিয়ে আমরা আশাবাদী।’

একটা জায়গার জন্য চার ক্রিকেটারের যে প্রতিযোগিতা, সেটাকেও হাবিবুল দেখছেন রঙিন সময়ের আভাস হিসেবে, ‘আমাদের টপ অর্ডারে একটা সমস্যা ছিল। তখন মিডল অর্ডারের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল ছিলাম। লিটন-শান্তরা ভালো করায় সেটা অনেকটা কমে এসেছে। আর মিডল অর্ডারে হৃদয়ের আসাটা দলের জন্য বিগ প্লাস। আশা করব, সে যেভাবে খেলছে, তা ধরে রাখবে। আর লোয়ার মিডল অর্ডারে যারা আছে, সবাই পজিটিভ প্লেয়ার, সবাই একটা জায়গার জন্য লড়ছে। এটা দলের জন্য ভালো।’

প্রশ্নটা যেহেতু সাত নম্বর পজিশন নিয়ে, প্রতিযোগিতার চাপ সরিয়ে কে কতটা আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে পারেন, সেটাই হয়তো দিয়ে দেবে এই প্রশ্নের উত্তর।