মেহেদী হাসান মিরাজ নিয়মিত অধিনায়ক নন। নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন চোটে না পড়লে এই ম্যাচে সহ-অধিনায়কের ভূমিকায় দেখা যেত তাঁকে। কিন্তু নাজমুলের চোট ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে নেতৃত্বের ভার তুলে দিয়েছে মিরাজের কাঁধে। তাই বাংলাদেশ সময় আজ রাত ৮টায় অ্যান্টিগায় শুরু হতে যাওয়া সিরিজের প্রথম ম্যাচটি নিশ্চিতভাবেই মিরাজের জন্য অন্য ম্যাচগুলোর তুলনায় একটু আলাদাই।
আর সেই আলাদা ম্যাচটা আরও বেশি মাহাত্ম্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে ভিন্ন এক কারণে। এটি যে মিরাজের ৫০তম টেস্ট। অর্থাৎ নিজের মাইলফলকের ম্যাচেই দলকে নেতৃত্ব দেবেন মিরাজ। আর দারুণ এই উপলক্ষটা ভালো কিছু করেই স্মরণীয় করে রাখতে চান এই স্পিন অলরাউন্ডার। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে সেই চাওয়ার কথাই বলেছেন মিরাজ।
৫০তম টেস্ট নিয়ে জানতে চাইলে মিরাজ বলেছেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। এটা দেশের জন্য, আমার জন্য অনেক বড় একটা পাওয়া। আমার মনে হয় দেশের জন্য ৫০টা টেস্ট খেলা অনেক বড় প্রাপ্তি। এখন এটা যেন স্মরণীয় করতে পারি, সেটাই আমার লক্ষ্য।’
সাম্প্রতিক সময়ে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পারফরম্যান্স বড্ড সাদামাটা। গত এক দশকে ১৭টি টেস্ট খেলে মাত্র ৫টিতে জিতেছে তারা। হেরেছে ৮টিতে এবং ড্র হয়েছে বাকি ৪ টেস্ট। যদিও এই পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের জন্য সুখবর নেই। উইন্ডিজের ৫ জয়ের ৩টিই বাংলাদেশের বিপক্ষে। সর্বশেষ ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২ ম্যাচের সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছিল বাংলাদেশ।
সেই পরিসংখ্যান মাথায় রেখেই এবার ভালো কিছু করতে চান মিরাজ, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকবে ভালো ক্রিকেট খেলা। কারণ, এর আগে আমরা যখন এখানে খেলেছিলাম, টেস্টে আমরা অতটা ভালো করতে পারিনি। গত চার বছরে আমরা যদি দেখি, এখানে দুইটা টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলাম, কিন্তু জিততে পারিনি। আমাদের লক্ষ্য থাকবে জেতার এবং সবাই যেন পারফর্ম করতে পারে।’
মিরাজের মাইলফলকের টেস্টে বাংলাদেশের জন্য আরেক আতঙ্কের নাম অ্যান্টিগা। কিংবদন্তি স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডসের নামে এই স্টেডিয়ামে ৬ ম্যাচ খেলে সব কটিই হেরেছে বাংলাদেশ।
তবে এই ইতিহাস বদলাতে চান মিরাজ, ‘অ্যান্টিগাতে এর আগে আমরা ভালো টেস্ট ক্রিকেট খেলিনি। খুব বাজেভাবে হেরেছিলাম। কিন্তু এবার আমরা নতুনভাবে এসেছি। আমরা এখানে প্রায় ১০ দিনের মতো অনুশীলন করেছি, একটা প্রস্তুতি ম্যাচও খেলেছি। খেলোয়াড়েরাও খুব ভালো প্রস্তুতি নিয়েছে। আমি অনেক আত্মবিশ্বাসী যে আমার দল অনেক ভালো করবে। সবাই ভালো ক্রিকেট খেলে আমরা যেন ম্যাচটা জিততে পারি। ব্যাটসম্যানরা, বোলাররা, সবাই যেন ভালো পারফর্ম করতে পারি, সেটাই হচ্ছে লক্ষ্য। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে খেলতে পারি, আশা করি এই টেস্টে ভালো একটা ফল আসবে।’
নাজমুলের পাশাপাশি এই সিরিজ থেকে ছিটকে গেছেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমও। নেই সাকিব আল হাসানও। সিনিয়রদের অভাব দলকে ভোগাবে কি না, জানতে চাইলে মিরাজ বলেন, ‘আপনি যেমনটা বললেন, আমাদের এই মুহূর্তে সিনিয়র খেলোয়াড় নেই। কিন্তু দলে এখন আমি, মুমিনুল এবং লিটন দাসের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছে। আমার মনে হয় দুই বছর আগের দলের চেয়ে আমরা এখন অনেক ভালো। আর আমরা সবাই অনেক ইতিবাচক। আমরা নেতিবাচক কিছু ভাবছি না। শুধু নিজেদের খেলাতেই মনোযোগ দিচ্ছি।’
সাকিবের না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে মিরাজ বলেছেন, ‘এ রকমটা হতেই পারে। অনেক সময় সিনিয়র খেলোয়াড়দের ছাড়াই আমাদের খেলতে হয়। মুশফিক যেমন চোটে পড়েছে। আবার সাকিব যেমন বলেছে সে অবসর নিতে যাচ্ছে। কাজটা কঠিন। কিন্তু এরপরও বিশ্বাস করি যে আমরা ভালো কিছু করতে পারি। আমরা দল হিসেবে এখন যথেষ্ট ভালো। কিছু তরুণ খেলোয়াড় উঠে এসেছে, তাদের ভালোই সুযোগ আছে এ ধরনের কন্ডিশনে পারফর্ম করার।’