শিরোনাম দেখে অবাক লাগতে পারে। না, এটা কোনো গাণিতিক সমীকরণ নয়। তবে এটিকে নাসের হুসেইনের কথার গাণিতিক রূপ বলতে পারেন।
ধর্মশালা টেস্টে শনিবার টেস্ট ইতিহাসে তৃতীয় বোলার ও প্রথম পেসার হিসেবে ৭০০ উইকেটের মাইলফলকের দেখা পান জেমস অ্যান্ডারসন। সামনে ২০০ টেস্ট খেলার হাতছানিও আছে তাঁর সামনে। ইংল্যান্ড পেসারের এই অর্জনকে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড়ের (৯৯.৯৪) সঙ্গে তুলনা করেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক ও ধারাভাষ্যকার নাসের।
স্কাই ক্রিকেট পডকাস্টে এমন কথা বলেছেন নাসের। লোকে এখন যেমন ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড় দেখে ভাবে—তিনি কীভাবে এটা অর্জন করেছিলেন; ভবিষ্যতে অ্যান্ডারসনের নামের পাশে ৭০০ উইকেট ও ২০০ টেস্ট দেখেও লোকে এমনটাই ভাববে বলে মনে করেন ৫৫ বছর বয়সী সাবেক এ ক্রিকেটার।
অ্যান্ডারসনের ৭০০ উইকেটের মাইলফলক প্রসঙ্গে নাসের বলেছেন, ‘অবিশ্বাস্য! আমার মনে হয়, বছর দশেক পর কিংবা আগামীর দিনগুলোতে এটা হবে সেই সব পরিসংখ্যানের অংশ, যা দেখে লোকে ভাববে “সে এটা কীভাবে করল!”’ নাসের আরও একটি বিষয় মনে করিয়ে দিয়েছেন। ৪১ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন এ পর্যন্ত ১৮৭ টেস্ট খেলেছেন। অর্থাৎ টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ২০০ টেস্ট খেলার মাইলফলকও তাঁকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এর আগে শুধু শচীন টেন্ডুলকারই ২০০ টেস্ট খেলেছেন।
অ্যান্ডারসনের ৭০০ উইকেটের মাইলফলক এবং সামনে ২০০ টেস্ট খেলার হাতছানি—এ দুটি বিষয়ের মাহাত্ম্য বোঝাতে গিয়ে নাসের বলেছেন, ‘পেসার হিসেবে শুধু ৭০০ উইকেট শিকারের ব্যাপারটিই নয়, অবসর নেওয়ার আগে সে ২০০ টেস্ট খেলারও চেষ্টা করবে। এটা হবে অনেকটাই ডন ব্র্যাডম্যানের ৯৯.৯৪ ব্যাটিং গড়ের মতো। আমরা এটায় (ব্র্যাডম্যানের ব্যাটিং গড়) তাকিয়ে বলি, “টেস্ট ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং গড় কীভাবে ৯৯.৯৪?” আমার মনে হয়, জিমি অবসর নেওয়ার অনেক বছর পর, আমরা পেছন ফিরে তাকিয়ে বলব “একজন ফাস্ট বোলার কীভাবে ৭০০ উইকেট পায় এবং ২০০ টেস্ট খেলতে পারে!’”
নাসের ইংল্যান্ডের অধিনায়ক থাকতে ২০০৩ সালে ইংল্যান্ড দলে অভিষেক অ্যান্ডারসনের। ফাস্ট বোলারদের ক্যারিয়ার লম্বা করা খুব কঠিন এবং অনেক পরিশ্রমের ব্যাপার—তা মনে করিয়ে দিয়ে নাসের আরও বলেছেন, ‘জোরে বল করা অনেক কষ্টের কাজ। বিছানা থেকে ওঠার পর জুতা পরে মাঠে নেমে শরীর যতই বেগড়বাই করুক, আমার মতো কিংবা তোমার (পডকাস্টের সঞ্চালক মাইকেল আথারটন) মতো অধিনায়ক শেষ সেশনে দ্বিতীয় নতুন বল হাতে তুলে দিয়ে বলবে “জিমি, তুমি কি আরেকবার বোলিং করতে পারবে?’’ জিমি কখনো হতাশ করেনি।’
দক্ষতা, উইকেট নেওয়ার ক্ষুধা ও ফিটনেস ধরে রাখার জায়গা থেকে অ্যান্ডারসনকে অনন্য বলেই মনে করেন নাসের। টেস্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় অ্যান্ডারসনের ওপরে শুধু মুত্তিয়া মুরালিধরন (৮০০) ও শেন ওয়ার্ন (৭০৮)। নাসের মনে করেন দুই কিংবদন্তি স্পিনারের মাঝে থেকেই সম্ভবত ক্যারিয়ার শেষ করবেন অ্যান্ডারসন, ‘এখন তার সামনে শেন ওয়ার্ন—৭০৮ উইকেট। সে হয়তো এ মৌসুমেই তাকে ছাড়িয়ে যাবে। সর্বকালের সেরা দুই স্পিনারের মাঝে থেকে সে সম্ভবত ক্যারিয়ার শেষ করবে।’