এ কোন রোহিত শর্মা! দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতেও তো মুম্বাইকে এই রোহিতেরই নেতৃত্ব দেওয়ার কথা। সেটা আর হচ্ছে কোথায়! উল্টো টানা ব্যর্থ হয়ে মুম্বাইকে শুরুতে বিপদেই ফেলছেন রোহিত।
পাঞ্জাব ও চেন্নাইয়ের বিপক্ষে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর গতকাল বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে করেছেন ৭ রান। অর্থাৎ, সর্বশেষ তিন ম্যাচে রোহিতের রান—০, ০, ৭। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ রসিকতা করে রোহিতকে ‘ক্রিকেটের জেমস বন্ড’ বলে ডাকছেন। ইয়ান ফ্লেমিংয়ের বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ডের কোড নম্বর যে ০০৭!
রোহিতকে এ নিয়ে বেশ সমালোচনার মুখেও পড়তে হচ্ছে। কেউ গঠনমূলক সমালোচনা করছেন, কেউ আবার অত কিছুর ধার ধারছেন না। ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্তই যেমন বলেছেন, এখন রোহিতকে ‘নো হিট’ নামে ডাকা উচিত। এর আগে তাঁর এমন বাজে ফর্ম দেখে সুনীল গাভাস্কার বলেছিলেন, রোহিতের বিশ্রাম দরকার। সেটা রোহিতের জন্য তো বটেই, ভারতের জন্যও ভালো হবে বলে মনে করেন তিনি।
আইপিএলের মতো জাঁকজমকপূর্ণ আসর থেকে বিশ্রাম নেওয়ার ঘটনা খুব একটা নেই। সঙ্গে মুম্বাইয়ের এই মুহূর্তে প্লে–অফের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখতে প্রতিটি ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তাই ফর্মে ফিরতে হলে রোহিতকে এই আইপিএলেই জ্বলে উঠতে হবে।
আইপিএলে এত বাজে রোহিত এর আগে কবে খেলেছেন? রোহিতের এমন ফর্ম কি খুবই অবাক করা? এই প্রশ্নের উত্তর, না। কারণ, আইপিএলে কয়েক মৌসুম ধরেই ধারাবাহিক নন রোহিত। মুম্বাই অধিনায়ক আইপিএলে ৩০ বা এর চেয়ে বেশি গড়ে রান করেছেন সর্বশেষ ২০১৬ সালে। তবে ওই মৌসুমগুলোতে ধারাবাহিকভাবে না হলেও গুরুত্বপূর্ণ অনেক সময়ই রোহিত জ্বলে উঠেছেন। এই যেমন ২০২০ সালের ফাইনালে দিল্লির বিপক্ষে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন রোহিত।
গত মৌসুমে রোহিতের গড় ছিল ২০-এর কম। ১৪ ম্যাচে সব মিলিয়ে রান করেছিলেন ২৬৮। এত দিন ওটাই ছিল আইপিএলে রোহিতের সবচেয়ে বাজে মৌসুম। তবে এবার রোহিত আরও ধুঁকছেন। এখন পর্যন্ত খেলা ১১ ইনিংসে রান করেছেন ১৯১, গড় মাত্র ১৭.৩৬। তাই অনেকেই মনে করছেন, এবার গতবারের চেয়েও খারাপভাবে শেষ হতে যাচ্ছে ভারত অধিনায়কের আইপিএল মৌসুম।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রোহিতের সেঞ্চুরি তিনটি। আইপিএলে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। তবে সেই রোহিতের ব্যাট কেন কথা বলছে না? ভারতের সাবেক কোচ ও ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী মনে করছেন, এর কারণ রোহিতের শট নির্বাচন। স্টার স্পোর্টসে এই সাবেক কোচ বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, তার আরেকটু সময় নেওয়া প্রয়োজন। তার শট নির্বাচন খুব একটা ভালো হচ্ছে না। সে বলেছিল, মুম্বাইয়ে তার ভূমিকাটা ভিন্ন। তবুও নিজেকে আরেকটু সময় দেও। রোহিতের সবচেয়ে বড় শক্তি তার শট খেলার সামর্থ্য, অন্য যেকোনো ব্যাটসম্যানের চেয়ে সে পেস বল খেলায় বেশি সময় পায়।’