থার্ডম্যান বাউন্ডারি থেকে অনেকটা এগিয়ে। স্কয়ার লেগও তা-ই। শর্ট মিড উইকেট ৩০ গজে। খালেদ আহমেদ তাঁর তৃতীয় স্পেলের বোলিং শুরু করলেন এমন ফিল্ডিং সাজিয়ে। দুই বল পর প্রথম স্লিপ থেকে সরে লেগ স্লিপে দাঁড়ালেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো মুশফিক আরেকটু সরে গিয়ে দাঁড়ালেন ডিপ মিড উইকেটে। রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে আসা খালেদের লক্ষ্য তখন একটাই—ব্যাটসম্যানের শরীর।
একই ওভারের শেষ বলের আগে আরও একবার খেলা থামল। মিড অফ থেকে তামিম ইকবাল হাত নেড়ে কিছু একটা বললেন। সাকিব নিজেই সরে এলেন আগের জায়গায়। মুশফিক বাউন্ডারি থেকে দৌড়ে এলেন শর্ট মিড উইকেটে। এবার যে ফিল্ডিং সাজানো হলো, সেটি স্টাম্প টু স্টাম্প বোলিংয়ের।
ব্যাটসম্যান যদি লেগের দিকে ফ্লিক করেন, সেটা ধরার জন্য দুইজন ফিল্ডার সাজানো। খালেদ শেষ বলটা করলেন ফিল্ড অনুযায়ীই। কিন্তু টেক্টর বলটাকে ডিফেন্ড করলেন নিখুঁতভাবে।
ইনিংসের ৩৯তম ওভারেই তিন রকম কৌশল ব্যবহার করল বাংলাদেশ। কিছুই কাজে দিচ্ছিল না। ওদিকে দুই আইরিশ ব্যাটসম্যান হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফারের জুটি বড় হচ্ছিল। এমন অবস্থায় সাধারণত বোলার সাকিবই জুটি ভাঙার কাজটা করেন।
কিন্তু তিনি আজ তখন পর্যন্ত বোলিংয়ে আসেননি। আরেক অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ আসেন বাংলাদেশের উদ্ধার হয়ে। পানি পান বিরতির দুই ওভার পরেই টেক্টরকে বোল্ড করে ভাঙেন ৭৪ রানের জুটি। এরপর আরেক স্পিনার তাইজুল ইসলামের বোলিংয়ে আরও দুই ব্যাটসম্যানকে হারায় আয়ারল্যান্ড। প্রথম সেশনের মতো দ্বিতীয় সেশনেও ৩ উইকেট তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। চা বিরতির সময় ৫৫ ওভার শেষে আইরিশদের রান ৬ উইকেটে ১৪৫ রান।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উজ্জ্বল নাম হ্যারি টেক্টর। ইনিংসের ৪২তম ওভারে মিরাজের ফুল লেংথের বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন। ৯২ বলে ৫০ রানেই থামে তাঁর ইনিংস।
পরের ওভারেই আরেক স্পিনার তাইজুলের আঘাত। তাতে আউট হন সদ্য ক্রিজে আসা পিটার মুর। জিম্বাবুয়ের পক্ষে ৮টি টেস্ট খেলেছিলেন এই ব্যাটসম্যান, সর্বশেষটি ২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই মিরপুরেই। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১ রানেই আউট। সামনের পা সরিয়ে মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে তামিমের হাতে সহজ ক্যাচ তুলেছেন তিনি। এরপর আর দীর্ঘ হয়নি ক্যাম্ফারের ইনিংসও। তাইজুলের আর্ম বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি এই অলরাউন্ডার। আউট হওয়ার আগে করেছেন ৭৩ বলে ৩৪ রান।
৩ উইকেটে ১২২ রান থেকে আয়ারল্যান্ড পরিণত হয় ৬ উইকেটে ১২৪ রানে। মাত্র ২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে প্রবলভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ। আইরিশদের ‘মিনি ধস’-এর পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন ও লরকান টাকার। দুজন মিলে চা পান বিরতির আগে ৬৩ বল খেলে যোগ করেছেন ২১ রান।