ইংল্যান্ড- দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্ট সিরিজের আগে কথার লড়াই যেন থামছেই না। এ লড়াই শুরু করেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের কোচ মার্ক বাউচার। কয়েক দিন আগেই কোচের সুরে সুর মেলান দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক ডিন এলগার । কোচ অধিনায়ক দুজনেই ইংল্যান্ডের ‘বাজবল’ কৌশলের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। তবে এই প্রশ্নের জবাবে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস সাফ জানিয়ে দিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার ধরনে কোনো পরিবর্তন আনছে না তাঁরা।
দীর্ঘ মেয়াদে আক্রমণাত্মক ‘বাজবল’ খেলার কৌশল ইংল্যান্ডের ক্ষতির কারণও হতে পারে, ডিন এলগার মত ছিল এমন। দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট অধিনায়ক বলেছিলেন, ‘ইংল্যান্ডের নতুন কৌশল রোমাঞ্চকর। কিন্তু আমি এর ভবিষ্যৎ দেখছি না। কারণ, টেস্ট ক্রিকেটে অনেক কিছু সময়ের সঙ্গে হারিয়ে যায়।’ ইংল্যান্ড অধিনায়ক স্টোকস এত কিছু ভাবতে নারাজ, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে চান আক্রমণাত্মক ক্রিকেট। এরই মধ্যে দলকে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের বার্তাও দিয়েছেন তিনি। তাঁর মনযোগের পুরোটা জুড়েই শুধু নিজেদের খেলার ধরন,‘মনে হচ্ছে প্রতিপক্ষ আগ্রাসী কৌশল নিয়ে অনেক বেশি কথা বলছে। তবে আমরা শুধু আমাদের খেলাতেই মনোযোগ দিচ্ছি। আমাদের খেলার নিজস্ব একটা ধরন আছে , তাঁদেরও আছে। দিন শেষে এটা ব্যাট বলের লড়াই, এই লড়াইয়ে যে ভালো খেলবে তাদেরই জয়ের সম্ভাবনা বেশি। আমি এই ভেবে খুশি যে ডিন এলগার ও তাঁর দল ‘বাজবল’ নিয়ে আগ্রহী না হয়েও এই কৌশল নিয়ে কথা বলেই যাচ্ছে।’
ইংল্যান্ড টেস্ট দলের দায়িত্ব কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকসের কাঁধে ওঠার পর থেকেই ইংল্যান্ড টেস্টে আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছে। কোচ ম্যাককালাম ও অধিনায়ক বেন স্টোকসের প্রথম মিশন ছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। সে সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করার পথে ৩ টেস্টেই ২৭০ রানের বেশি তাড়া করে জিতেছিল ইংল্যান্ড। পরের টেস্টেই ভারতের বিপক্ষে ৩৭৮ রান তাড়া করে ৭ উইকেটে জয় পায় স্টোকসের দল। যা ইংল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে টেস্ট জয়ের রেকর্ড। তবে এরপরে বেশ খানিকটা সময় কেটে গেছে। স্টোকসরা প্রায় মাস খানিক টেস্ট ক্রিকেটের বাইরে। অধিনায়ক স্টোকস চান, ভারতের বিপক্ষে যেখানেই শেষ করেছিল ইংল্যান্ড, সেখান থেকেই আবার শুরু করতে, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আমাদের আগ্রাসী মনোভাবে যেন পাঁচ সপ্তাহের বিরতির প্রভাব না পড়ে। শেষ চার টেস্টে আমরা যেভাবে খেলেছি , সেভাবে খেললেই আমাদের জয়ের দারুণ সম্ভাবনা থাকবে।’
বেশ কিছুদিন ধরেই হাঁটুর ইনজুরিতে ভুগছিলেন স্টোকস। তবে বর্তমানে সে ইনজুরি অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছেন তিনি। ঠাসা সুচির কারণে ওয়ানডে থেকে অবসর নেওয়া স্টোকস নিজের বর্তমান ফিটনেস নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট, ‘এটা অনেক লম্বা প্রক্রিয়া, কিন্তু আমাদের অবিশ্বাস্য একটা মেডিকেল দল আছে। এই মুহূর্তে যেমন আছি তা নিয়ে আমি বেশ সন্তুষ্ট। এখন এটা বজায় রাখতে হবে।’
কথার লড়াই শেষে, মাঠের লড়াই শুরু হচ্ছে আজ থেকেই। ইংল্যান্ডের আগ্রাসী ক্রিকেটের জয়গান চলবে , নাকি রাবাদাদের হাত ধরে ভাঙবে ‘বাজবল’ এর অহম, সে উত্তর মিলবে আজ থেকেই।