ডেভিড ম্যালানের কাছে ওয়ানডে ক্রিকেট মানেই সুযোগ কাজে লাগানোর একটা উপলক্ষ। ক্যারিয়ারে ৩৯.৫০-এর নিচে গড় নামেনি, তৃতীয় ম্যাচের পর থেকে ৮৭-এর ওপরে স্ট্রাইক রেটও ছিল। তবুও ইংল্যান্ড দলের লাইনআপ এমন, প্রায় চার বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড প্রথম ওয়ানডেটা ছিল এ বাঁহাতির ছিল মাত্র ১৬তম। গতকাল আরেকবার সুযোগ কাজে লাগালেন এ বাঁহাতি, বাংলাদেশকে হারিয়ে দিলেন তো প্রায় একাই!
কন্ডিশন কঠিন হলেও বাংলাদেশ অবশ্য তাঁর কাছে অপরিচিত নয় মোটেও। ২০১৩-১৪, ২০১৪-১৫ মৌসুমে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) খেলেছেন প্রাইম দোলেশ্বরের হয়ে। মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামেই প্রিমিয়ার লিগে এর আগে সাতটি ৫০ ওভারের ম্যাচ খেলেছেন। ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে সেটি নিয়ে স্মৃতিচারণাও করলেন ১১৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা ম্যালান, ‘তাদের হয়ে দুটি মৌসুম খেলা দুর্দান্ত ছিল, আমার খেলায় সাহায্য করেছে। ইংল্যান্ডে তো উইকেটের স্কয়ারে খেলা যায়। এখানে দিনের বেলা বল স্কিড করে, তবে পরে গতি কমে আসে। ফলে ইংল্যান্ডের চেয়ে ভিন্নভাবে স্পিন খেলা শিখেছিলাম। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর আগে তো এটি আমার খেলায় উন্নতি করতে দারুণ সহায়তা করেছে।’
ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে যত খেলবেন, খেলারও উন্নতি হবে। অতীতে সফল হোন বা না, ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে শেখার সুযোগটা দারুণ। এখানে কিছু অভিজ্ঞতা আছে আমার।ডেভিড ম্যালান, ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যান
ডিপিএলের পর বিপিএলেও চারটি মৌসুম খেলেছেন ম্যালান। সব মিলিয়ে ভিন্ন কন্ডিশনে খেলার উপকারিতা ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, ‘ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে যত খেলবেন, খেলারও উন্নতি হবে। অতীতে সফল হোন বা না, ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে শেখার সুযোগটা দারুণ। এখানে কিছু অভিজ্ঞতা আছে আমার। উইকেটে শুরু করাটা তেমন সহজ ছিল না। তবে কঠিন সময়ে নিজের প্রক্রিয়ার ওপর আস্থা রাখতে হয়, পরে কাজে লাগাতে হয়। বিশেষ করে যখন শিশির পড়ে।’
প্রথম ম্যাচে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়েও ভালো হোঁচটই খেয়েছিল ইংল্যান্ড। তবে ম্যালান বলছেন, আস্থা হারাননি তাঁরা, ‘উইল জ্যাকস ও আমি আলোচনা করছিলাম, দরকারি রানরেট সাড়ে পাঁচের ওপর উঠতে দেব না। আমরা জানতাম, নতুন ব্যাটারদের জন্য কাজটি কঠিন হবে। সবারই এমন উইকেটে অভ্যস্ত হতে সময় দরকার। যদি দরকারি রানরেট পাঁচের ওপর উঠত, তাহলে একজন ঝুঁকি নিতাম। তবে কম লক্ষ্য, ছোট মাঠ বলে আমাদের ভাগ্যটা ভালো ছিল। আমরা জানতাম, মাঝে দু-তিনটি (বাউন্ডারি) মারলেই পুরো ম্যাচের মোমেন্টাম বদলে যাবে।’
বাংলাদেশের রান আর ২০-৩০ বেশি হলে অবশ্য তাঁদের ঝুঁকি নেওয়া ছাড়া উপায় থাকত না, ম্যালান ইঙ্গিত দিয়েছেন এমন, ‘বাংলাদেশকে ২০৯ রানে আটকে দেওয়া দারুণ ছিল। ২৫০-২৬০ হলে তো ভিন্ন হতো ব্যাপারটা। আমাদের বোলারদের ওপর আরও চড়াও হতে হতো। তারা দুর্দান্ত বোলিং করছিল, ঠিক সময়ে উইকেট নিয়েছে, আমাদের চেপে ধরছিল। তবে আমরা জুটি গড়েছি, পারও হয়েছি।’
ঠিক আগের ওয়ানডেতেও ম্যালান সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সে ম্যাচে ওপেনিংয়েই নেমেছিলেন। গতকাল খেলতে হলো তিনে। আপাতত সুযোগ পেয়েই খুশি তিনি, ‘ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডে খেলা দারুণ। ২০১৭ সাল থেকে আমি পানি বয়ে নিয়েছি, সুযোগের অপেক্ষায় থেকেছি। এখন পর্যন্ত মাত্র ১৬টি ম্যাচ খেলেছি, তবে সুযোগ পাওয়া দারুণ। অবশ্যই এর পেছনে সূচি, চোটের কারণ আছে। তবে আমার দারুণ লাগে। জয়ে অবদান রাখতে পারাও দারুণ।’