রোহিত শর্মা আগে থেকেই জানতেন! শাহিন শাহ আফ্রিদির ইনসুইং ডেলিভারিটা তাঁর জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। এ নিয়ে অনুশীলনে বিশেষভাবে কাজও করেছেন। তবে এশিয়া কাপে এসে সেই আফ্রিদির পাতা ফাঁদেই পড়েছিলেন রোহিত। শুধু রোহিত নয়, ভারতের টপ অর্ডারকেই অনেকটা নাস্তানাবুদ করেছিলেন পাকিস্তানের তিন পেসার।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ভারতীয় টপ অর্ডারকে কীভাবে বিপদে ফেলেন পাকিস্তানি পেসাররা? কেনইবা আফ্রিদি, নাসিম শাহদের সাবলীলভাবে খেলতে পারেন না রোহিত শর্মারা? আগামীকাল সুপার ফোরের ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার আগে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন ভারতীয় ওপেনার শুবমান গিল।
এশিয়া কাপে প্রথম রাউন্ডের ম্যাচটি ছিল পাকিস্তানের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে গিলের প্রথম ম্যাচ। সেই ম্যাচে ৩২ বলে মাত্র ১০ রান করে হারিস রউফের বলে বোল্ড হন গিল। রোহিত আফ্রিদির বলে আউট হওয়ার আগে ২২ বলে করেছিলেন ১১ রান। আর কোহলি দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দিয়ে ৪ রান করে আফ্রিদির বলে বোল্ড হন। রোহিত এর আগেও বাঁহাতি পেসারদের ইনসুইং ডেলিভারিতে আউট হয়েছেন। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই আফ্রিদির ইনসুইং ইয়র্কারে তিনি এলবিডব্লিউ হয়েছিলেন। তারও আগে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফাইনালে একইভাবে আউট হয়েছিলেন মোহাম্মদ আমিরের বলে।
বাঁহাতি পেসারদের সামনে রোহিতের মতো দুর্বলতা আছে কোহলিরও। ওয়ানডেতে ২০২১ সালের পর থেকে বাঁহাতি পেসারদের বিপক্ষে রোহিতের গড় মাত্র ২৩, আউট হয়েছেন ছয়বার। একই সময়ে কোহলির গড় আরও কম—২১.৭৫। এই সময়ে কোহলি আউট হয়েছেন চারবার। পাকিস্তানের বিপক্ষে এই সমস্যা চোখে পড়ে আইসিসি টুর্নামেন্টে এসে।
এর কারণ হিসেবে গিল বলছেন, ‘ যখনই আমরা নতুন বোলারকে মোকাবিলা করি, তখনই তারা পার্থক্য গড়ে দেয়। আমরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলি না, তাদের বোলারদের খেলতে আমরা অভ্যস্ত নই। শাহিনের (আফ্রিদি) অনেক সুইং আছে, নাসিমের আছে পেস আর মুভমেন্ট এবং তারা উইকেট থেকেও সুবিধা আদায় করে নেয়। ভিন্ন ভিন্ন কন্ডিশনে তারা নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।’
জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর চলতি বছর ওয়ানডে ক্রিকেটে আর সেঞ্চুরি পাননি গিল। এরপর ওয়ানডেতে গিল ব্যাট করেছেন আট ইনিংস। এই আট ইনিংসেও ধারাবাহিকভাবে ভালো করতে পারেননি। সর্বশেষ ওয়ানডেতে নেপালের বিপক্ষে ৬৭ রানের ইনিংসের আগে বলার মতো ইনিংস আছে আর একটি। গত আগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
এমনিতেই ভারতীয় দলে প্রতিযোগিতা অনেক। সঙ্গে এশিয়া কাপের দলেই আছেন ওপেন করতে পারেন এমন দুজন—ঈশান কিষান ও লোকেশ রাহুল। তাই সর্বশেষ ম্যাচে ৬৭ রান করেও ওয়ানডেতে নিজের ফর্ম নিয়ে জবাব দিতে হলো গিলকে, ‘মাঝেমধ্যে টেকনিক্যাল কারণেই রানখরা হয় না, বোলাররা খুব ভালো করলেও হয়। আপনার প্রক্রিয়ার ওপর ভরসা রাখতে হবে। দলে নিজের ভূমিকা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব নেই। ওপেনারদের শুরুটা ভালো করতে হবে, শুরু থেকেই আধিপত্য করতে হবে।’
অধিনায়ক রোহিতের সঙ্গে ইনিংস শুরু করা নিয়ে গুল বলেন, ‘সে এমন একজন, যে শুরু থেকেই বোলারদের ওপর দাপট দেখাতে চায়। আমি মাটি কামড়ানো শট খেলতে পছন্দ করি। যেহেতু আমরা দুজন দুই কৌশলে খেলি, এটা প্রতিপক্ষের জন্য কঠিন হতে পারে।’