নেপালের ইনিংসে তৃতীয় ওভারের শেষ বল। স্ট্রাইকে ছিলেন নেপাল অধিনায়ক রোহিত পৌড়েল। সে ওভারে জোড়া উইকেট নেওয়া তানজিমের বল ডিফেন্ড করলেন রোহিত। এরপরই রোহিতের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে দেখা যায় বাংলাদেশের পেসার তানজিমকে।
পরিস্থিতি শান্ত করতে হস্তক্ষেপ করতে হয় নন–স্ট্রাইকে থাকা ব্যাটসম্যান আসিফ শেখ ও আম্পায়ার স্যাম নোগাসকিকে । দুজনের মধ্যে এমন উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের কারণ তখন বোঝা যাচ্ছিল না। ম্যাচ শেষে মিক্সড জোনে সাংবাদিকদের রোহিতের দিকে তেড়ে যাওয়ার কারণ জানিয়েছেন তানজিম।
মিক্সড জোনে তানজিম বলেছেন, ‘এটা সহজাত ছিল, পরিকল্পনা করে করিনি। সে আমার দিকে আক্রমণাত্মকভাবে তাকিয়ে ছিল, যেটা আমি পছন্দ করিনি। আমি ওকে বলেছি, তুমি আমার দিকে তাকিয়ে আছ কেন? আমি জায়গামতো বোলিং করার চেষ্টা করেছি। আক্রমণাত্মক মানসিকতা এমনিতেই চলে আসে। এটা পরিকল্পনা করে করি না।’
উইকেট যেমনই হোক, ১০৬ রানের পুঁজি নিয়ে জেতা খুব কঠিন। বাংলাদেশও টি-টোয়েন্টিতে এর আগে এত কম রান ডিফেন্ড করতে পারেনি। তবে তানজিম জানিয়েছেন, বাংলাদেশ দল যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিল, ‘এই রান ডিফেন্ড করা সম্ভব, আমাদের মাথায় এই চিন্তাই ছিল। আমরা দেখেছি উইকেটে বোলারদের জন্য সাহায্য ছিল। স্পিনাররা টার্ন পেয়েছে, পেসাররা বাড়তি বাউন্স পেয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ছিল আমরা এই রান ডিফেন্ড করতে পারব, আত্মবিশ্বাসী ছিলাম।’
বাংলাদেশের হয়ে এটাই তাঁর সেরা স্পেল কি না, এ প্রশ্নে তানজিম বলেছেন, ‘আমারও সেটা মনে হয়। আমি এই স্পেলটা করতে খুব উপভোগ করেছি। আজকে বোলিং করতে খুব উপভোগ করেছি। নেপালের পেসাররাও ভালো করেছে, আমরা সেটা লক্ষ করেছি। তারা অতিরিক্ত বাউন্স পেয়েছে, আমরা সেটা নিয়ে কথা বলছিলাম। আমরা উইকেটে জোরে বল করতে চেয়েছি। এরপর দেখতে চেয়েছি কী হয়।’
তানজিম বরাবরই আক্রমণাত্মক। বয়সভিত্তিক দল থেকেই আক্রমণাত্মক পেসার হিসেবে একটা পরিচিত আছে তাঁর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার পরও এই ধারাই দেখা যাচ্ছে। তানজিম মনে করেন, ক্রিকেটে আক্রমণই শেষ কথা, ‘যেকোনো মুহূর্তে আক্রমণাত্মক থাকতে হবে। অ্যাটাক ইজ দ্য বেস্ট ডিফেন্স। আমি ওকে (রোহিতকে) বলছিলাম, কাজটা সহজ নয়। আলহামদুলিল্লাহ, আমরা ম্যাচটা জিতেছি।’
এবারের বিশ্বকাপে দারুণ বোলিং করছেন মোস্তাফিজুর রহমান। ডেথ ওভারে তাঁর বোলিং যেন ব্যাটসম্যানদের জন্য ধাঁধার নাম হয়ে উঠেছে। আজ নেপালের বিপক্ষে ১৯তম ওভার মেডেন দিয়েছেন তিনি। তাঁর ওই ওভারের কারণেই ১২ বলে ২২ রানের সমীকরণ নেপালের জন্য নেমে আসে ৬ বলে ২২ রানে। মোস্তাফিজের প্রশংসায় তানজিম বলেছেন, ‘আমরা কখনো আশা হারাইনি। কারণ আমরা জানতাম, শেষে মোস্তাফিজ ভাই আছেন, আমরা সবাই ওনার ওপর ভরসা রাখি। আমাদের ওনার প্রতি অগাধ বিশ্বাস আছে। উনি সেটা করেও দেখিয়েছে। ৪ ওভারে মাত্র ৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন, ১৯তম ওভারে মেডেন উইকেট নিয়েছে। আমাদের বিশ্বাস ছিল, আমরা শেষ পর্যন্ত খেলে ম্যাচটা বের করে নিয়ে আসব।’