নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বেঙ্গালুরু টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৪৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল ভারতের হার। নিজেদের ইনিংস নিউজিল্যান্ড ৪০২ রান করার পর আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ে ভারত। তখন সবার চোখ হারের ব্যবধান কত বড় হবে সেদিকে। ইনিংস হারও মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। কিন্তু এত সহজে আত্মসমর্পণ করতে রাজি ছিলেন না সরফরাজ খান। ঋষভ পন্তকে সঙ্গে নিয়ে শুরু করলেন প্রতিরোধ।
ব্যাট হাতে দুর্দান্ত খেলে ১৯৫ বলে ১৮ চার ও ৩ ছক্কায় করলেন ১৫০ রান। সেদিন তাঁকে সঙ্গ দিয়ে ৯৯ রান করেছিলেন পন্ত। এ দুজনের ব্যাটেই ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে করে ৪৬২ রান। যার ফলে ইনিংস হারের ঝুঁকি পেরিয়ে ভারত নিউজিল্যান্ডকে দেয় ১০৭ রানের লক্ষ্য। ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ভারত হারে ৮ উইকেটে। ৩৬ বছর পর ভারতের মাটিতে টেস্ট জেতে কিউইরা। কোনো কিছুই অবশ্য শেষ পর্যন্ত ম্লান করতে পারেনি ধ্বংস্তূপে দাঁড়িয়ে সরফরাজের করা ১৫০ রানের ইনিংসটিকে। কিন্তু এমন দুর্দান্ত ইনিংস খেলেও এখন দ্বিতীয় টেস্ট খেলা নিয়ে শঙ্কায় আছেন সরফরাজ। যার কারণ শুবমান গিলের ফেরা।
বেঙ্গুালুরু টেস্টে সরফরাজ সুযোগ পেয়েছিলেন ঘাড়ের চোটে পড়া গিলের বদলে। এখন পুনেতে দ্বিতীয় টেস্টে ফেরার জন্য প্রস্তুত গিল। প্রশ্ন হচ্ছে গিল ফেরায় ১৫০ রান করেও সরফরাজ দল থেকে বাদ পড়বেন কি না? এ ক্ষেত্রে দলে থাকার লড়াইটা হতে পারে লোকেশ রাহুল এবং সরফরাজের মধ্যে। দুজনই মূলত একই পজিশনে ব্যাট করেন। ফলে এ দুজন থেকে হয়তো একজনকে বাদ পড়তে হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে সেঞ্চুরিয়ান সরফরাজকে বাদ দেওয়ার সাহস ভারতের নির্বাচকেরা দেখাবেন কি?
বাদ পড়ার উদাহরণ যে নিকট অতীতেই আছে, সেটা মনে করিয়ে দিয়েছেন ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার আকাশ চোপড়া। ২০১৬ সালে ট্রিপল সেঞ্চুরি (৩০৩) করেও বাদ পড়েছিলেন করুণ নায়ার। আজিঙ্কা রাহানের বদলে খেলতে নেমে বীরেন্দর শেবাগের পর ভারতের দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ট্রিপল সেঞ্চুরি করেছিলেন নায়ার। কিন্তু পরের টেস্টে রাহানে ফিরে আসায় দলে জায়গা হয়নি তাঁর। একই নিয়ম মেনে প্রথম টেস্টে ১৫০ করা সরফরাজ দ্বিতীয় টেস্টে বাদ পড়েন কি না, সেটাই দেখার অপেক্ষা।
এ প্রসঙ্গে আকাশ বলেছেন, ‘করুণ ৩০০ করেছিল, কিন্তু সে পরের ম্যাচে বাদ পড়েছিল। কেন? কারণ সে আজিঙ্কা রাহানের জায়গায় খেলছিল। আর রাহানে ফিরে আসার পর সরে যেতে হয়েছিল নায়ারকে। এই হিসাবে সরফরাজকেও বাইরে থাকতে হবে। যদিও আমি মনে করি এটা হবে না।’