ব্যাট হাতে ৫ বলে ২ রান আর বল হাতে ৪ ওভারে ৩১ রানে উইকেটশূন্য—এই হচ্ছে ভারতের বিপক্ষে শাদাব খানের পারফরম্যান্স। শুধু ভারত ম্যাচে নয়, পাকিস্তানের সহ–অধিনায়কের কাছ থেকে দল ভালো পারফরম্যান্স পায়নি নেদারল্যান্ডস ও শ্রীলঙ্কা ম্যাচেও। সব মিলিয়ে ৩ ম্যাচে ওভারপ্রতি ৬.৫৫ রান খরচে শাদাবের শিকার মাত্র ২ উইকেট।
বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে এমন ফর্মহীন থাকা একজনকে আর একাদশে রাখার প্রয়োজন দেখেন না পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররা। তাঁদের পরামর্শ, সামনের ম্যাচে শাদাবের জায়গায় যেন লেগ স্পিনার উসামা মিরকে খেলানো হয়। শাদাবের বদলে উসামাকে খেলানোর পক্ষে এরই মধ্যে কথা বলেছেন মিসবাহ–উল–হক, শহীদ আফ্রিদি, ওয়াহাব রিয়াজ ও কামরান আকমলরা।
পাকিস্তান দল সর্বশেষ তিন ম্যাচে দুই স্পিনার হিসেবে খেলিয়েছে মোহাম্মদ নেওয়াজ ও শাদাবকে। সাবেক অধিনায়ক ও কোচ মিসবাহর মতে, দুজনের মধ্যে নেওয়াজ অপেক্ষাকৃত ছন্দে আছে, ‘আমার মনে হয়, নেওয়াজ এখনো শাদাবের তুলনায় ভালো বোলিং করছে। গত দুই–তিনটা ম্যাচের দিকে যদি দেখেন, সে আত্মবিশ্বাস নিয়ে ব্যাটিংও করেছে। আর শাদাবের দিকে দেখুন। ভারতের বিপক্ষেও সঠিক জায়গায় বল ফেলার আত্মবিশ্বাস দেখা যায়নি।’ নেওয়াজও শাদাবের মতো তিন ম্যাচে দুটি উইকেটই নিতে পেরেছেন। তবে শাদাবকে আত্মবিশ্বাসহীনতার কারণে বিশ্রাম দেওয়া দরকার বলে মনে করেন মিসবাহ, ‘কেউ যদি টানা টি–টোয়েন্টি খেলে, তার জন্য হুট করে ৫০ ওভার ক্রিকেট খেলা কঠিন। আর এ ধরনের সমস্যার সমাধানে স্কোয়াডে একজন বোলারও আছে—উসামা মির। ওকে খেলানোর এখনই সময়।’
সাবেক ক্রিকেটার ওয়াহাব রিয়াজের পরামর্শও উসামাকে খেলানোর। তবে কাকে বাদ দিলে ভালো হয়, এ বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য করেননি গত আগস্টে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বলা এই বাঁহাতি পেসার, ‘শাদাব, নেওয়াজকে দুজনকে একসঙ্গে খেলানো উচিত নয়। এ দুজনের যেকোনো একজন খেললে, উসামা মিরই খেলুক। পাকিস্তান দল সব সময় অলরাউন্ডার খেলানোয় বেশি আগ্রহ দেখিয়ে থাকে। কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে, পেসাররা ভালো না করলে আপনার আসল অস্ত্র কারা হবে। আপনার এমন বোলার থাকতে হবে, যে উইকেট এনে দেবে।’
মিসবাহ ও রিয়াজ দুজনই উসামাকে খেলানোর কথা বলেছেন ভারত ম্যাচের পর। তবে আগে থেকেই এই পরামর্শ দিয়ে রেখেছেন কামরান আকমল। আহমেবাদাবাদে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগেই সাবেক এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান শাদাবকে সরিয়ে দিতে বলেছিলেন। আর সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি উসামাকে খেলানোর কথা বলে রেখেছেন বিশ্বকাপের শুরুর দিকেই।
শাদাব, উসামা দুজনই লেগ স্পিনার হলেও তাদের পার্থক্য তুলে ধরে আফ্রিদি বলেছিলেন, ‘দুজনের বোলিংয়ে বিশাল পার্থক্য। বিশেষ করে ড্রিফট এবং শরীরী ভাষার দিক থেকে উসামা অনেক এগিয়ে। শাদাব কিছু রান করে দিতে পারে কিন্তু দুজনের ব্যাটিংয়েও এখন খুব একটা পার্থক্য নেই। শাদাব একসময় পাকিস্তান দলের মেরুদণ্ড ছিল, আমি নিজেই ওর বড় সমর্থক ছিলাম। কিন্তু আপনি যদি পারফর্ম না করতে পারেন, অধিনায়ক হোন বা সহ–অধিনায়ক, আপনাকে বেঞ্চে বসে যেতে হবে।’
সহ–অধিনায়ক শাদাব পাকিস্তানের প্রথম তিন ম্যাচে বসেননি, পরের ম্যাচে কি বসবেন? বাবর আজমদের পরের ম্যাচ ২০ অক্টোবর, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।