লিগের দলগুলোর মধ্যে শক্তির ভারসাম্য রাখতেই পুল প্রথা। পুলের নির্দিষ্ট সংখ্যক খেলোয়াড়ের মধ্য থেকে প্রতিটি দল সর্বোচ্চ নিতে পারে ৪ জন করে। কিন্তু এবারের মেয়েদের ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে থাকছে না পুল পদ্ধতি। প্রতিটি ক্লাব যতজন খুশি জাতীয় দলের খেলোয়াড় নিতে পারবে। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের বিসিবি কার্যালয়ে মেয়েদের লিগের ক্লাবগুলোর সঙ্গে বিসিবির নারী বিভাগের এক সভায় এ সিদ্ধান্তই হয়েছে।
পুল না থাকায় লিগের বড় দলগুলো বাড়তি সুবিধা পাবে। স্বাভাবিকভাবেই আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান কয়েকটি ক্লাব জাতীয় দলের বেশির ভাগ ক্রিকেটার নিয়ে নেবে। বাকি দলগুলোকে খেলতে হবে জাতীয় দলের বাইরের খেলোয়াড়দের নিয়ে। এবারের লিগে পুল পদ্ধতি না থাকার কারণ জানতে চাইলে বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান শফিউল আলম চৌধুরী গতকাল মুঠোফোনে জানান, ইচ্ছা থাকার পরও দু-একটি ক্লাবের ইচ্ছায় তাঁদের পুল পদ্ধতি থেকে সরে আসতে হয়েছে।
শফিউল আলম বলেন, ‘টুর্নামেন্টটাকে ভারসাম্যপূর্ণ রাখতেই আমরা পুল চেয়েছিলাম। যে ক্লাবগুলো অংশগ্রহণ করবে তারা যেন ভারসাম্যপূর্ণ দল গড়তে পারে, এ কারণেই বেতনভুক্ত জাতীয় ক্রিকেটারদের নিয়ে পুল করেছিলাম। পুল না থাকলে যাদের আর্থিক সামর্থ্য বেশি, তারা শক্তিশালী দল গড়বে। কিন্তু যারা এদিক থেকে একটু দুর্বল, তারা ওই রকম দল করতে পারবে না।’
পুল পদ্ধতি রাখতে পারছেন না বলে একটু হতাশই মনে হলো নারী ক্রিকেটের প্রধানকে, ‘টুর্নামেন্ট যদি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ না হয় তাহলে উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। সামগ্রিকভাবে ক্রিকেটের ভালোর জন্যই পুল করেছিলাম। শেষ পর্যন্ত এবার পুল রাখতে পারিনি। দু-একটি ক্লাবের চাওয়ায় ও কিছু ভিন্নমত থাকার কারণে পারছি না। ব্যক্তিগতভাবে আমি অবশ্যই হতাশ। আমি মনে করি পুল রাখতে না পারাটা আমাদের জন্য একটা ব্যর্থতা।’
সভায় উপস্থিত কয়েকজন ক্লাব কর্মকর্তার দাবি, পুল পদ্ধতি বাদ দেওয়া হয়েছে মূলত মেয়েদের সর্বশেষ লিগে পঞ্চম হওয়া আবাহনীর ইচ্ছায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ক্লাব কর্মকর্তা বলেন, ‘ঈদের আগে এক সভায় ২৪-২৫ জন খেলোয়াড় নিয়ে পুল করার আলোচনা হয়। কিন্তু কয়েকটা দল জাতীয় দলের খেলোয়াড় বেশি নিতে চেয়েছিল। আমরা এর বিরোধিতা করেছিলাম। পুলের খেলোয়াড় সব দলে মোটামুটি সমানভাবে থাকা উচিত। আগে প্রতি দলে পুলের ৪ জন করে ক্রিকেটার খেলতে পারত। কিন্তু আজ (গতকাল) চেয়ারম্যান সাহেব পুল উঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করলেন।’
আবাহনীর ম্যানেজার শেখ মামুন অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে বলেছেন, ‘আমরা পুল সরিয়ে নেওয়ার কথা বলিনি। সভায় প্রতি দলে পুলের ৩ জন খেলোয়াড় নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, আমরা ৪ জনের কথা বলেছি। পরে তো পুল পদ্ধতি বাদই দেওয়া হলো। আবাহনী পুল চায় না, এমন কথা অন্য কেউ বলেছে কি না, আমার জানা নেই। তবে সভায় আমরা পুল বাদ দেওয়া নিয়ে কিছু বলিনি।’
দলবদল এবং লিগ শুরুর তারিখও ঠিক হয়েছে গতকালের সভায়। ১১ ও ১২ মে হবে দলবদল, লিগ শুরু ১৭ মে থেকে। খেলা হবে বিকেএসপির তিনটি মাঠে। গতবারের মতো এবারও লিগের অংশগ্রহণ ফি থাকছে ৩ লাখ টাকা। সে তুলনায় পুরস্কারের টাকার অঙ্ক অবশ্য বেশ কমই। চ্যাম্পিয়ন দল পাবে দেড় লাখ টাকা, রানারআপ এক লাখ টাকা, তৃতীয় সেরা দল ৫০ হাজার টাকা ও চতুর্থ সেরা দল পাবে ৪০ হাজার টাকা। যাতায়াতের জন্য প্রতি ম্যাচে ১০ হাজার টাকা করে পাবে দলগুলো। খাবারের জন্য ম্যাচপ্রতি থাকবে ৭ হাজার টাকা করে।