দিনের প্রথম আধা ঘণ্টায় দাপট দেখালেন নিউজিল্যান্ড পেসাররা, শেষ বেলায় ‘বৃষ্টি’।
মাঝের যা কিছু, সবই হ্যারি ব্রুক আর জো রুটের। আরও স্পষ্ট করে বললে ২৪ বছর বয়সী ব্রুকের। রুট আগে নেমেছেন, সেঞ্চুরি করে অপরাজিতও আছেন। তবে মাত্র ষষ্ঠ টেস্ট খেলতে নামা ডানহাতি ব্যাটসম্যান ব্রুকের ছায়াতেই যেন ঢাকা পড়লেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক।
বৃষ্টি-বাগড়ায় আগেভাগে দিনের খেলা শেষ হয়ে যাওয়ার আগে ১৬৯ বলে ১৮৪ রানে অপরাজিত থাকলেন ব্রুক। পরের ১২ বলে ১৬ রান করতে পারলে তিনি হয়ে যাবেন টেস্ট ক্রিকেটের চতুর্থ দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান!
ব্রুকের মারমুখী ব্যাটিংয়ের দিনে রুট অপরাজিত ১৮২ বলে ১০১ রান নিয়ে। জোড়া সেঞ্চুরির সুবাদে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়েলিংটন টেস্টের প্রথম দিন শেষ ইংল্যান্ডের রান দাঁড়িয়েছে ৩ উইকেটে ৩১৫।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা ইংল্যান্ডের শুরুটা ছিল অবশ্য ভীতিজাগানিয়া। ৭ ওভারের মধ্যে ২১ রান তুলতেই নেই টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান।
বেসিন রিজার্ভের সকালের সুবিধা কাজে লাগিয়ে সুইং আদায় করে নেন ম্যাট হেনরি, টিম সাউদিরা।
হেনরির বলে জ্যাক ক্রাউলির উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে শুরু। এর পর হেনরিরই আরেকটি ডেলিভারিতে অলি পোপ আর সাউদির বলে বেন ডাকেটও ফেরেন পেছনে ক্যাচ দিয়ে, দুজনই স্লিপে।
কিউই পেসারদের ওই দাপুটে বোলিংয়ের সামনে শুরু হয় ব্রুক–রুটের প্রতিরোধ–যাত্রা।
‘বাজবল’ ক্রিকেট যে শুধু চালিয়ে খেলা নয়, পরিস্থিতি বুঝে প্রথাগত ব্যাটিংও—সেটিই দেখান প্রথমে। দিনের প্রথম ঘণ্টা কাটিয়ে দেওয়ার পর ধীরে ধীরে চেনা চেহারায় আবির্ভূত হতে শুরু করেন ব্রুক।
সর্বশেষ চার ইনিংসে পঞ্চাশ পার করা এই ডানহাতি ফিফটি স্পর্শ করেন লাঞ্চ–বিরতির আগে, ৫১ বলে।
দ্বিতীয় সেশনে তিন অঙ্কে পৌঁছান ১০৭ বলে। ছয় টেস্টে এটি তাঁর চতুর্থ সেঞ্চুরি। ব্রুকের সেঞ্চুরির সময় রুট ছিলেন ৫০ রানে। এর পর দলের তরুণ ব্যাটসম্যানটির সঙ্গে রানের গতি বাড়ানোয় হাত লাগান তিনিও।
প্রথম টেস্টের রিভার্স সুইপ খেলে আউট হওয়ার পর সমালোচিত হয়েছিলেন রুট। আজ শুরুর দিকে গুটিয়ে থাকলেও পঞ্চাশের পর রিভার্স সুইপও খেলা শুরু করেন।
তবে রুটের তুলনায় ব্রুক ছিলেন দ্বিগুণ গতিতে এগিয়ে। দেড় শ পার করে ছুটতে থাকেন দুই শ’র দিকেও। ৬৫তম ওভারের শেষ বলে ২ রান নিয়ে ২৯তম সেঞ্চুরি তুলে নেন রুট।
এর পরপরই বৃষ্টি বাধায় খেলা বন্ধ হয়ে গেলে ব্রুককে মাঠ ছাড়তে হয় ১৮৪ রানে অপরাজিত থেকে।
পরে প্রথম দিনের খেলা সমাপ্তির ঘোষণা দেন দুই আম্পায়ার।
আগামীকাল দ্বিতীয় দিনে ব্রুককে হাতছানি দিচ্ছে চতুর্থ দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ড।
২০০৬ সালে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৮২ বলে দুই শ ছুঁয়েছিলেন বীরেন্দর শেবাগ। ভারতীয় ওপেনারকে পেছনে ফেলতে পরের ১২ বলেই ১৬ রান করতে হবে ব্রুককে।
রেকর্ড হাতছানি দিচ্ছে জুটিতেও। রুটের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে এখন পর্যন্ত উঠেছে ২৯৪ রান। ইংল্যান্ডের হয়ে চতুর্থ উইকেটে এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ।
৩১০ রান নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে ২০০৬ অ্যাডিলেড টেস্টের পল কলিংউ–কেভিন পিটারসেনের জুটি। শীর্ষে ১৯৫৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে কলিন কাউড্রে–পিটার মে জুটির ৪১১ রান।