উড়ছেন গুরবাজ, দাসুন শানাকা রান আউট হওয়ার পর
উড়ছেন গুরবাজ, দাসুন শানাকা রান আউট হওয়ার পর

টি-টোয়েন্টি সিরিজ: রোমাঞ্চকর জয়ে আফগানিস্তানের সান্ত্বনা

ওয়াফাদার মোমান্দের শেষ বলে ছক্কা মারলেন কামিন্দু মেন্ডিস, এরপরও আফগানিস্তান মাতল উল্লাসে। ডাম্বুলায় সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে ২১০ রানের লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কা থামল ২০৬ রানেই। ওয়ানডেতে আফগানরা হয়েছিল ধবলধোলাই, টি-টোয়েন্টি সিরিজও আগেই হেরেছিল তারা। এ সফরের শেষ ম্যাচে এসে অবশেষে সান্ত্বনার জয় পেল তারা, সেটিও রোমাঞ্চকর এক লড়াইয়ে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে তাদের বিপক্ষে টানা ৮টি ম্যাচ হারের পর অবশেষে জিতল আফগানিস্তান।

জিততে গেলে নিজেদের রেকর্ড নতুন করে গড়তে হতো শ্রীলঙ্কাকে, এর আগে সর্বোচ্চ ১৯৪ রানের লক্ষ্যে জিতেছিল তারা (২০১৮ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে)। পাওয়ারপ্লেতে কুশল মেন্ডিসের উইকেট হারালেও ৬৪ রান তুলে শুরুটা ভালোই হয়েছিল তাদের। তবে ৩০ বলে ৬০ রান করে চোট পেয়ে পাতুম নিশাঙ্কা উঠে গেলে একটু ছন্দপতন হয় তাদের। ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাও বেশিক্ষণ থাকেননি।

শ্রীলঙ্কাকে এরপর আশা জোগান কামিন্দু। সাদিরা সামারাবিক্রমার সঙ্গে ৩৩ বলে ৫৩ রানের পর দাসুন শানাকা ও আকিলা দনাঞ্জয়াকে নিয়ে খুব কাছেই চলে গিয়েছিলেন। সামারাবিক্রমা ও কামিন্দুর জুটি ভাঙেন সরাফউদ্দিন আহমেদের কনকাশন বদলি হিসেবে আসা কাইস আহমেদ। সরাফউদ্দিন মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন কুশল মেন্ডিসের ক্যাচ ধরতে গিয়ে।

বৃথা গেছে কামিন্দু মেন্ডিসের ইনিংস

১৯তম ওভারে শানাকা ও দনাঞ্জয়ার তিনটি বাউন্ডারিতে আসে ১৭ রান, শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৯। ওয়াফাদারের প্রথম ৩ বলে কামিন্দু মারেন দুটি চার। পরের বলটি হতে পারত নো বল, তবে কোমরসমান উচ্চতার ফুল টস করেও পার পেয়ে যান ওয়াফাদার। এরপর একটি ওয়াইড দিলেও পঞ্চম বৈধ বলে রান দেননি, আফগানিস্তানের জয় কার্যত নিশ্চিত হয় তাতেই।

এর আগে টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া আফগানিস্তান বড় স্কোরের ভিতটা পেয়েছিল হজরতউল্লাহ জাজাই ও রহমানউল্লাহ গুরবাজের ৪৪ বলে ৮৮ রানের ওপেনিং জুটিতেই। দুজন পাওয়ারপ্লেতে তোলেন ৭২ রান। অষ্টম ওভারে ২২ বলে ৪৫ রান করা জাজাই থামেন আকিলা দনাঞ্জয়ার বলে এলবিডব্লু হয়ে। গুরবাজ অবশ্য থাকেন আরও কিছুক্ষণ।

সে সময় আফগানিস্তানকে একটু চেপে ধরেছিল শ্রীলঙ্কা। ৯ বলে ১০ রান করে থামেন অধিনায়ক ইব্রাহিম জাদরান, ১৪তম ওভারে শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার বলে ক্যাচ দেন ৪৩ বলে ৭০ রান করা গুরবাজ। সে সময় শ্রীলঙ্কাকে একটু কমের মধ্যে আটকে দেওয়ার আশাও হয়তো করেছিল শ্রীলঙ্কা।

ফিফটি ইনিংসের পথে গুরবাজ

কিন্তু আজমতউল্লাহ ওমরজাই ও মোহাম্মদ নবীর ২৬ বলে ৪১ রানের জুটি সেটি হতে দেয়নি। ২৩ বলে ৩১ রান করা ওমরজাই থামলেও নবী শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ১৪ বলে ১৬ রানে। ৮ বলে ১৬ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন অভিষিক্ত মোহাম্মদ ইশাক। নিজেদের ইতিহাসে অষ্টমবারের মতো ২০০ রানের স্কোর তাতেই পায় আফগানিস্তান।

শ্রীলঙ্কার বোলিং-ফিল্ডিংও এদিন সুবিধার ছিল না। ২৩ ও ৬০ রানে দাঁড়িয়ে দুবার ক্যাচ তুলেও বেঁচে যান গুরবাজ। বোলিংয়ে বেশি ফুল লেংথ বা শর্ট লেংথে করে তারা, ১১টি ওয়াইডসহ অতিরিক্তও দেয় ২১ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান: ২০ ওভারে ২০৯/৫ (জাজাই ৪৫, গুরবাজ ৭০, ইব্রাহিম ১০, ওমরজাই ৩১, নবী ১৬*, জানাত ০, ইশাক ১৬*; ম্যাথুস ২-০-২১-০, তুশারা ৪-০-৪৮-০, পাতিরানা ৪-০-৪২-২, দনাঞ্জয়া ৪-০-৩৭-২, হাসারাঙ্গা ৪-০-৩৫-১, শানাকা ২-০-১৬-১)
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ২০৬/৬ (নিশাঙ্কা ৬০, কুশল মেন্ডিস ১৬, কুশল পেরেরা ০, হাসারাঙ্গা ১৩, সামারাবিক্রমা ২৩, কামিন্দু মেন্ডিস ৬৫*, ম্যাথুস ৪, শানাকা ১৩, দনাঞ্জয়া ৪*; ওয়াফাদার ৩-০-৩৫-০, ওমরজাই ৪-০-৪২-০, ফরিদ ২-০-৩০-০, নুর ৪-০-৩৭-১, নবী ৪-০-৩৫-২, কাইস ২-০-১৭-১, জানাত ১-০-৯-০)
ফল: আফগানিস্তান ৩ রানে জয়ী ও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রহমানউল্লাহ গুরবাজ