মূল দলের ক্রিকেটারদের আইপিএলে খেলার সুযোগ করে দিয়ে পাকিস্তানে দ্বিতীয় সারির দল পাঠিয়েছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (এনজেডসি)। টম ল্যাথামের নেতৃত্বাধীন দলটির বিপক্ষে টি–টোয়েন্টি সিরিজে প্রত্যাশিতভাবে ২–০ ব্যবধানে এগিয়েও গিয়েছিল পাকিস্তান।
কিন্তু খর্বশক্তির নিউজিল্যান্ডই এরপর পাকিস্তানিদের পিলে চমকে দেয়। ল্যাথাম, মার্ক চ্যাপম্যান ও জিমি নিশামের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তৃতীয় ও পঞ্চম টি–টোয়েন্টি জিতে নেয় কিউইরা। শিলাবৃষ্টিতে চতুর্থ ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ায় ২–২ সমতা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাবর আজমের দলকে।
শুধু এই সিরিজ নয়, সাম্প্রতিক সময়ে কোনো সংস্করণেই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না পাকিস্তান। সর্বশেষ ৯ সিরিজ ও টুর্নামেন্টের একটিও জিততে পারেনি তারা। এমনকি আফগানিস্তানের সঙ্গেও পেরে ওঠেনি। অথচ পাকিস্তানের বর্তমান দলটা বিশ্বমানের তারকায় ঠাসা। সর্বশেষ দুবার আইসিসি বর্ষসেরা খেলোয়াড়ও হয়েছেন দুই পাকিস্তানি—২০২১ সালে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও ২০২২ সালে বাবর আজম। এ ছাড়া মোহাম্মদ রিজওয়ান তো টি–টোয়েন্টির অনেক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন।
ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা এগিয়ে থাকলেও দলীয়ভাবে বারবার ধাক্কা খাচ্ছে। বিপরীতে নিউজিল্যান্ড শেষ পাঁচ দ্বিপক্ষীয় সিরিজের কোনোটিতেও হারেনি।
হঠাৎ কী হলো পাকিস্তানের যে, সিরিজ জিততেই ভুলে গেল! রমিজ রাজা মনে করেন, খেলার প্রতি নিবেদনের ঘাটতির কারণেই এমনটা হচ্ছে। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সাবেক এই চেয়ারম্যান বাবর আজম–শাদাব খানদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘এই পর্যায়ে এসে টানা ম্যাচ হারা মানায় না। সাম্প্রতিক হারগুলো থেকে অবশ্যই শিখতে হবে। ঈদের ছুটিতে ওরা বেশ সেমাই–ফিরনি–পায়েস খেয়েছে, যথেষ্ট আরাম করেছে। কিন্তু তারকাখ্যাতির ওপর নির্ভর করে ম্যাচ জেতা যায় না।’
দুঃসময় থেকে বেরোতে বাবরদের ফেসবুক–টুইটারের ব্যবহার কমিয়ে খেলায় মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন রমিজ, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার কমিয়ে ক্রিকেটে আরও মনোযোগী হতে হবে। দিন শেষে মাঠের পারফরম্যান্সই সাফল্য নির্ধারণ করবে।’
তীরে এসে তরি ডোবার এই গতিধারা পাকিস্তান ক্রিকেটের জন্য নতুন নয় বলে মত রমিজের, ‘সর্বশেষ এশিয়ায় কাপেও এমনটা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার কাছে সুপার ফোর পর্বের পর ফাইনালেও হেরেছে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাত ম্যাচের টি–টোয়েন্টি সিরিজের কথাও বলতে পারি। এগিয়ে থেকে ৩–৪ ব্যবধানে হেরেছে।’
নিউজিল্যান্ড দলকেও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন পাকিস্তানের হয়ে ১৯৯২ বিশ্বকাপ জেতা রমিজ, ‘নিউজিল্যান্ডের ধারাবাহিক ও চিত্তাকর্ষক পারফরম্যান্স পাকিস্তানকে মোমেন্টাম ধরে রাখতে দেয়নি। ফর্ম ও মনোযোগ ধরে রাখতে বেশ ভুগতে হয়েছে।’