কেপটাউনের নিউল্যান্ডসে গতকাল উইকেটের বৃষ্টি ঝরেছে। প্রথম দিনই পড়েছে ২৩ উইকেট, যা কোনো টেস্টের প্রথম দিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ, দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে যেকোনো দিনই যৌথভাবে সর্বোচ্চ। এমন এক অদ্ভুত দিনে দিন শেষে এগিয়ে ভারতই। ৩৬ রানে এগিয়ে থেকে দিন শেষ করেছে রোহিত শর্মার দল।
প্রথম ইনিংসে ৫৫ রানে অলআউট হওয়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকা দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম দিন শেষ করেছে ৩ উইকেট ৬২ রান নিয়ে। প্রথম ইনিংসে ভারত তুলেছিল ১৫৩ রান। ভারতের স্কোর একসময় ছিল ৪ উইকেটে ১৫৩ রান। সেখান থেকে আর কোনো রান যোগ না করতেই অলআউট হয়ে গেছে তারা। এমন অদ্ভুত দিনের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং পরামর্শক অ্যাশওয়েল প্রিন্স দুষছেন উইকেটকে। সাবেক এই প্রোটিয়া ক্রিকেটারের মতে, উইকেট স্বাভাবিক ছিল না।
গতকাল নিউল্যান্ডসে বলের মুভমেন্ট, পিচের অসম বাউন্সে ব্যাটসম্যানদের জীবন হয়ে পড়েছিল দুর্বিষহ। প্রিন্স দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে নিউল্যান্ডসে ১১টি টেস্ট খেলেছেন। ঘরোয়া ক্রিকেটেও খেলেছেন অসংখ্য ম্যাচ।
তবে এমন উইকেট তিনি দেখছেন এবারই প্রথম, ‘প্রথম দিনে এত দ্রুতগতির উইকেট কখনো দেখিনি। একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনার গতিতে আপত্তি থাকে না, যদি সেই উইকেটের বাউন্স ধারাবাহিক থাকে, কিন্তু এখানে বাউন্স অসম ছিল। আপনি প্রথম দিনে কিছুটা সিম মুভমেন্ট প্রত্যাশা করেই থাকেন, কিন্তু সিম মুভমেন্টের সঙ্গে অসম বাউন্স ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি করে। মাঝেমধ্যে এটা হতে পারে, ভালো কোনো বোলিং লাইনআপ খুব দ্রুতই কোনো দলকে অলআউট করতে পারে, কিন্তু যদি দুই দলই ব্যাট করতে না পারে, তাহলে বুঝতে হবে এখানে (নিউল্যান্ডস) গড়বড় আছে।’
এই উইকেটে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্তই নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সিদ্ধান্তটির পক্ষে যুক্তি দিয়ে প্রিন্স বলেছেন, ‘উইকেট ঘাস ছিল, কিন্তু নিউল্যান্ডসে শেষ দিকে স্পিন ধরার প্রবণতা থাকে। তাই ব্যাটিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। আমার মনে হয় না, পিচ কেমন আচরণ করবে, সেই পূর্বাভাস আগে থেকে কেউ দিতে পারবে।’
গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে অনেকটা একাই ধসিয়ে দেন মোহাম্মদ সিরাজ। ক্যারিয়ার–সেরা বোলিংয়ে ১৫ রানে নেন ৬ উইকেট! কীভাবে এমন সফলতা, সেই প্রসঙ্গে সিরাজ বলেছেন, ‘এমন উইকেটে যেখানে অনেক সুইং ও অসম বাউন্স থাকে, বোলাররা লোভী হয়ে অনেক সময় অনেক কিছু করতে চায়। আমার মনে হয় একটা পরিকল্পনায় ধরে এগোনো ও নির্দিষ্ট জায়গায় বল করা গুরুত্বপূর্ণ। যদি অনেক কিছু করতে চান, আপনি নিজেকে ও দলকে চাপে ফেলে দেবেন। প্রথম টেস্টে যে ঘাটতি ছিল, সেটা পূরণ করে এই টেস্টে শক্তিশালী পারফরম্যান্স করার চেষ্টা ছিল। প্রথম টেস্টে করা ভুল বুঝতে পেরেছি, আজ (গতকাল) কাজটা ঠিকঠাক করেছি, সাফল্য পেয়েছি।’