চুক্তিটা ছিল দুই বছরের। কিন্তু এক বছর হতে না হতেই বিসিবির চাকরি ছেড়ে দেশে ফিরে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞ কিউরেটর টনি হেমিং। বিসিবি তাঁকে এনেছিল মূলত পূর্বাচলের শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নির্মাণের জন্য।
হেমিং কেন চুক্তির মাঝপথে বিসিবির চাকরি ছেড়ে দিলেন, তা নিয়ে ক্রিকেটাঙ্গনে কৌতূহল আছে। শোনা যাচ্ছে, বিসিবির গ্রাউন্ডস বিভাগের এক কর্মকর্তার সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরেই তাঁর এমন সিদ্ধান্ত। তবে এ নিয়ে বিসিবি থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তাঁর চলে যাওয়ার খবর জানিয়ে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘টনি হেমিং বিসিবির জন্য অত্যন্ত মূল্যবান সম্পদ ছিলেন। তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের ক্রিকেট অবকাঠামোয় অনেক উন্নতি এনেছে। তাঁর কাজের ধরন বাংলাদেশের মাঠ প্রস্তুতিতে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রাখবে।’
শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রামে বাংলাদেশ দলের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে নিয়মিত কাজ করেছেন হেমিং। বরিশালের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে নতুন উইকেট তৈরি করেছেন তিনি। গত সপ্তাহেও তিনি বরিশাল ও সিলেটে কাজ করেছেন। এর মধ্যেই হুট করে এল তাঁর চাকরি ছাড়ার খবর।
উইকেট প্রস্তুতিতে বিশেষজ্ঞ হেমিং একজন মৃত্তিকা বিশারদ। বাংলাদেশে আসার আগে পার্থে ওয়াকার মৃত্তিকা বিশারদ ও পরামর্শক ছিলেন হেমিং। পালন করেছেন আইসিসি ক্রিকেট একাডেমি ও দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের প্রধান কিউরেটরের দায়িত্বও। অস্ট্রেলিয়ার এমসিজিতে দীর্ঘদিন কাজ করা ছাড়াও একসময় ছিলেন পার্থের অপ্টাস স্টেডিয়ামের অ্যারেনা ম্যানেজার।
হেমিং আইসিসির পিচ পরামর্শক ছিলেন ওমান ক্রিকেট একাডেমিতে। আইসিসি ক্রিকেট একাডেমির আন্তর্জাতিক উপস্থাপক ও প্রশিক্ষক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতা আছে ফুটবলে কাজ করারও। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে কিং ফাহাদ ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল স্টেডিয়ামে অ্যারেনা ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন হেমিং।
২০২১ সালে এএফএল (অস্ট্রেলিয়ান রুলস ফুটবলের ফাইনাল) গ্র্যান্ড ফাইনাল হয়েছিল অপ্টাস স্টেডিয়ামে। সে ম্যাচের মাঠ প্রস্তুত করেছিলেন হেমিং। উইকেট ও মাঠ বানানোর কাজে ‘হেমো’ নামে পরিচিত হেমিংকে কিংবদন্তিই মনে করা হয়।