ক্রিকেটে ‘কোণঠাসা বাঘ’ হিসেবে পাকিস্তানের পরিচিতি সেই ১৯৯২ সাল থেকে। সবশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হয়েছিল ‘কুদরাত কা নিজাম’ বা প্রকৃতির খেয়ালের আলোচনা। টুর্নামেন্টের শুরুতে হেরে এমন এক অবস্থায় নিজেদের আবিষ্কার করে দলটি, যখন ভাগ্য আর নিজেদের হাতে ছিল না। এবারের বিশ্বকাপও ব্যতিক্রম নয়। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কাছে হারের পর সুপার এইটে যেতে শেষ দুই ম্যাচ জিতলেই শুধু হবে না; নিজেদের নেট রান রেট ও অন্য ম্যাচগুলোর ফলের দিকেও নজর রাখতে হবে।
তবে সবার আগে পাকিস্তানের সামনে সমীকরণ ছিল এমন—জিততে হবে কানাডার বিপক্ষে ম্যাচটি। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অবশেষে সেই জয় পেয়েছে বাবর আজমের দল। ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১০৬ রান তোলে কানাডা, পাকিস্তান সেটি পেরিয়ে যায় ১৫ বল ও ৭ উইকেট বাকি রেখে। জয়ের সঙ্গে নেট রান রেটেও নজর ছিল পাকিস্তানের। যুক্তরাষ্ট্রকে (০.৬২৬) টপকে যেতে ১৩.৫ ওভারের মধ্যে জিততে হতো পাকিস্তানকে, সেটি করতে পারেনি তারা। এ জয়ের পর তাদের নেট রান রেট ০.১৫০ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ০.১৯১-এ।
ইফতিখার আহমেদকে বাদ দিয়ে উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সাইম আইয়ুবকে ফেরায় পাকিস্তান, তিনি অবশ্য ১১ বলে করতে পারেন ৬ রান। বাবর-রিজওয়ানের জুটির ওপরই আবার ভর করতে হয় পাকিস্তানকে। ৩৩ বলে ৩৩ রান করে বাবর আউট হলে ভাঙে ৬২ বলে ৬৩ রানের জুটি। মাঝে ফখর জামান ফিরলেও মোহাম্মদ রিজওয়ান অপরাজিত থাকেন ৫৩ বলে ৫৩ রানে। এ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের ক্যারিয়ারের ৩০তম অর্ধশত ইনিংসটি এবারের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কারও প্রথম।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা কানাডার ইনিংসের ৪৯.০৬ শতাংশ রানই (৪৪ বলে ৫২) করেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যারন জনসন। শাহিন শাহ আফ্রিদিকে টানা দুই চারে ইনিংস শুরু করেছিলেন তিনি, তবে প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানের আর কেউ ৪ রানও পেরোতে পারেননি। শেষ দিকে অধিনায়ক সাদ বিন জাফরের ২১ বলে ১০ ও কলিম সানার ১৪ বলে ১৩ রানের সঙ্গে ডিলন হেইলিগারের ১১ বলে ৯ রানের ইনিংসে ১০০ পেরোয় কানাডা। পাকিস্তান সুযোগ হাতছাড়া না করলে অবশ্য সেটিও হতো না।
১৩ রানে ২ উইকেট নেন আমির, ২৬ রানের ২ উইকেট হারিসের। শাদাব খানের পর দ্বিতীয় পাকিস্তানি বোলার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১০০ উইকেটের মাইলফলকও ছুঁয়েছেন হারিস। অবশ্য শাদাবকে বোলিংয়েই আনেননি বাবর। ১টি করে উইকেট নেন আফ্রিদি, নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ আমির।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
কানাডা: ২০ ওভারে ১০৬/৭ (জনসন ৫২, সাদ ১০, সানা ১৩; আমির ২/১৩, রউফ ২/২৬, নাসিম ১/২৪, আফ্রিদি ১/২১)
পাকিস্তান: ১৭.৩ ওভারে ১০৭/৩ (রিজওয়ান ৫৩*, বাবর ৩৩; হেলিগার ২/১৮, গর্ডন ১/১৭)
ফল: পাকিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মোহাম্মদ আমির (পাকিস্তান)