এ সাম্রাজ্যটা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটারদের। টি-টোয়েন্টি ও আর বড় বড় ছক্কা তাদের জন্য ডালভাত। সহজলভ্য। আর অন্য দেশের ক্রিকেটারদের জন্য বিরিয়ানি। কসরত আছে। যে কারণে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে শুধু ক্যারিবীয় ক্রিকেটাররাই এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কা মারতে পারেন। এত দিন এমনটাই হয়ে এসেছে।
অবশেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই সাম্রাজ্যে হানা দিতে পেরেছেন একজন। যাঁর খেলার ধরন ক্যারিবীয় ক্রিকেটারদের মতো হলেও আদতে তিনি একজন দক্ষিণ আফ্রিকান—হাইনরিখ ক্লাসেন। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে যার এলোপাতাড়ি চার-ছক্কা দেখে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রমিজ রাজা নাম দিয়েছিলেন হালাকু খান।
ক্লাসেন এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কার কীর্তি গড়েছেন গতকাল, ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে। ডারবানে কাল স্বভাববিরুদ্ধ ২২ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলার পথে একটি ছক্কা মারেন ক্লাসেন।
যেটি ছিল এই বছরে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে তাঁর শততম ছক্কা। চতুর্থ ক্রিকেটার হিসাবে এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কার ক্লাবে ঢুকেছেন ক্লাসেন। এর আগে এই কীর্তি ছিল তিন ক্যারিবীয় ক্রিকেটার—ক্রিস গেইল, নিকোলাস পুরান ও আন্দ্রে রাসেলের।
তবে গেইলের নামটা একটু আলাদা করে বলার দাবি রাখে। সাবেক এই ক্রিকেটার এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কা মেরেছেন ৬ বার। বাকিরা সবাই ১ বার করে। এক পঞ্জিকাবর্ষে ১০০ ছক্কার কীর্তি প্রথমবার দেখা যায় ২০১১ সালে। সেই বছর গেইল ছক্কা মারেন ১১৬টি। এরপরের দুই বছরেও ১০০ ছক্কার বেশি মারেন এই ওপেনার। মাঝে ২০১৪ বাদ দিয়ে আবার ন্যূনতম ১০০টি করে ছক্কা মারেন ২০১৫, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে।
গেইলের পর এ তালিকায় নাম লেখান আন্দ্রে রাসেল। তিনি ২০১৯ সালে ছক্কা মারেন ১০১টি। গেইলের কীর্তি কতটা বিশেষ, সেটা বোঝা যায় রাসেলের কীর্তি দেখেই। এত বছর ধরে ধারাবাহিক বিধ্বংসী ব্যাটিং করার পরও মাত্র একবারই এক পঞ্জিকাবর্ষে ছক্কার সেঞ্চুরি করতে পেরেছেন রাসেল। আরেক টি-টোয়েন্টি কিংবদন্তি কাইরন পোলার্ড তো এই কীর্তি কোনো দিন করতেই পারেননি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা নিকোলাস পুরানও বিশেষ একটা দাবি করতে পারেন। কারণ, এক বছরে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারার রেকর্ড এই বাঁহাতির। তিনি চলতি বছর এখন পর্যন্ত ছক্কা মেরেছেন ১৬৫টি, যা সর্বোচ্চ। এ জন্য খেলেছেন ৬৭ ইনিংস। কাল ক্লাসেন ১০০ ছক্কা মেরেছেন নিজের ৪৯ ইনিংসে।
সবচেয়ে বড় কথা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটারদের সাম্রাজ্যে তিনিই প্রথম নন–ক্যারিবিয়ান।