এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান যাবে ভারত—কদিন ধরে চলতে থাকা এ গুঞ্জনে গতকাল পানি ঢেলে দিয়েছিলেন বিসিসিআইয়ের সচিব ও এসিসির সভাপতি জয় শাহ। বোর্ড সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের পাকিস্তানে না যাওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানান। এ সময় এশিয়া কাপের জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যুর দাবিও করেন জয় শাহ।
বিসিসিআইয়ের এমন অবস্থানের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের এ অবস্থানের জেরে আগামী বছর ভারতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপ বর্জনের হুমকিও দিয়ে রেখেছে পিসিবি।
সৌরভ গাঙ্গুলীর জায়গায় গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে বিসিসিআইয়ের ৩৬তম সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রজার বিনি। নতুন সভাপতি দায়িত্ব নেওয়ার প্রাক্কালেই ভারতের পাকিস্তান সফর নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
এশিয়া কাপ খেলতে ভারতের না যাওয়ার সিদ্ধান্তে মানতে পারছেন না সাবেক পাকিস্তানি ক্রিকেটাররাও। এর মধ্যে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থানও পরিষ্কার করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।
বিবৃতিতে পিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আগামী বছর এশিয়া কাপ নিরপেক্ষ ভেন্যুতে স্থানান্তর করা নিয়ে এসিসি সভাপতি জয় শাহর বক্তব্য পিসিবিকে বিস্মিত ও হতাশ করেছে।’
কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়া জয় শাহর দেওয়া এমন বক্তব্যে হতাশ পিসিবি বিবৃতিতে আরও বলেছে, ‘এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল কিংবা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (আয়োজক) সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনা ও পরামর্শ ছাড়াই এমন মন্তব্য করা হয়েছে। এমনকি এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ও ফলাফল কী হবে, তা–ও ভাবা হয়নি।’
বিসিসিআইয়ের এ অবস্থান আগামী বছরের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে পিসিবি, ‘এ ধরনের মন্তব্য এশিয়ান এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্প্রদায়কে বিভক্ত করার আশঙ্কা রয়েছে। পাশাপাশি ২০২৩ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ খেলতে পাকিস্তানের ভারত সফর এবং ২০২৪–২০৩১ চক্রে ভারতে আইসিসির ভবিষ্যৎ ইভেন্টেও প্রভাব ফেলতে পারে।’
জয় শাহর মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জরুরি বৈঠকের জন্য চিঠি দেওয়ার কথাও বিবৃতিতে জানিয়েছে পিসিবি, ‘এসিসি সভাপতির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে এখনো এসিসির পক্ষ থেকে পিসিবির সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে কেউ যোগাযোগ করেনি। পিসিবি এই স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যত দ্রুত সম্ভব জরুরি বৈঠক ডাকতে এসিসির কাছে চিঠি দিয়েছে।’
বিসিসিআই সচিব জয় শাহর মন্তব্যের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটাররাও। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি টুইটারে লিখেছেন, ‘১২ মাস ধরে দুই দলের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের মধ্যে আনন্দময় অবস্থার সৃষ্টি করেছে। তবে কেন বিসিসিআই সচিব বিশ্বকাপ ম্যাচের আগমুহূর্তে এমন মন্তব্য করল? এটি ভারতে ক্রিকেট প্রশাসনের অভিজ্ঞতার অভাবের প্রতিফলন।’