পয়েন্ট তালিকার একেবারে নিচের দিকে থাকা দুই দলের খেলা। সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে মোসাদ্দেক হোসেনের পরিবর্তে দুর্দান্ত ঢাকাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ, এ ছাড়া ম্যাচটা নিয়ে বাড়তি আগ্রহের আর কোনো কারণ ছিল না। অবশ্য এমন ম্যাচও অনেক সময় ছড়াতে পারে টি-টোয়েন্টির রোমাঞ্চ। তখন আর এটা মনে থাকে না যে ম্যাচটা খেলছে কারা। ক্রিকেটীয় উত্তেজনাই হয়ে ওঠে বড় আকর্ষণ।
বিপিএলে আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচ সে রকম কিছুও দেখাল না। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে মঞ্চস্থ হলো আরও একটি অল্প রানের নিরানন্দ ম্যাচ। যেন খেলার জন্যই খেলল দুই দল! এ ম্যাচের আগে পয়েন্ট তালিকার একেবারে শেষে থাকা দুর্দান্ত ঢাকার ৮ উইকেটে করা ১২৪ রানের জবাবে সিলেট স্ট্রাইকার্স ৫ উইকেটের জয় পেয়েছে ১ ওভার থাকতে। এ ম্যাচের আগে সিলেট, ঢাকা ২ দলের পয়েন্টই ২ করে থাকলেও নেট রান রেটে এগিয়ে ছিল সিলেটই। আজকের জয়ের পর ঢাকার চেয়ে পয়েন্টের ব্যবধানেও এগিয়ে গেল তারা।
সিলেটের অফ স্পিনার নাঈম হাসানের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই বাউন্ডারি খুঁজে পায় ঢাকার ওপেনার সাব্বির হোসেনের ব্যাট। ঠিক পরের বলেই উল্টে গেল দান—রায়ান বার্লকে ক্যাচ দিয়ে সাব্বিরের বিদায়।
তবে এরপর মোহাম্মদ নাঈম আর সাইফ হাসান মিলে যা খেললেন, সেটাই আসলে টি-টোয়েন্টি। পাওয়ার প্লেতে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫২ রান তোলার পথে ওই স্পিনার নাঈমের ওপর দিয়েই ঝড়টা বেশি গেল, আর সেটা বইয়ে দিলেন সাইফ। নাঈমের দ্বিতীয় ও ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ চার বলে তিনি মারলেন ৪, ৪, ৬ ও ৪।
পরের ওভারেও সে ধারা কিছুটা ধরে রেখে তানজিম হাসানকে দুই বাউন্ডারি মারেন মোহাম্মদ নাঈম। ২৯ বলে ৩৬ রানের ইনিংসের নাঈমের দুটি ছক্কা আরিফুলের করা দশম ওভারের পর পর দুই বলে। পরের দুই ওভারে অবশ্য ফিরে যেতে হয়েছে সাইফ, নাঈম দুজনকেই। ১১তম ওভারের প্রথম বলে বেনি হাওয়েলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে সাইফের ব্যাট থেকে আসে ৩২ বলে ৪১ রান। সামিত প্যাটেলের পরের ওভারে নাঈম ক্যাচ দেন হ্যারি টেক্টরের হাতে। আর ওখানেই মূলত শেষ ঢাকার ‘অগ্রযাত্রা।’
শেষ পর্যন্ত পুরো ২০ ওভারই ব্যাটিং করেছে ঢাকা, অলআউটও হয়নি। নাঈম-সাইফের ৬৮ রানের জুটিটা ভাঙার পর আরও ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ৪২ রানই যোগ করতে পেরেছে তারা।
শূন্য রানে অপরাজিত শরীফুল ইসলামকে বাদ দিলে শেষ ৬ ব্যাটসম্যানের ৫ জনের রানই তাদের খেলা বলের চেয়ে কম। সাঈম আইয়ুবের একটি চার ছাড়া আর কারও ব্যাট থেকেই আসেনি কোনো চার বা ছক্কা। তাসকিনের রান আউটটি সহ শেষ ২ বলে পড়েছে ২ উইকেট। সিলেটের পেসার রেজাউর রহমান ৩ উইকেট নিয়েছেন ২০ রানে।
১২৫ রানের জয়ের লক্ষ্য বেশি নয়। তবে দিনের প্রথম ম্যাচে ১৪৯ রান করেও খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে ৩৪ রানের জয় পেয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। মাত্র ১২৪ রানের পুঁজি পাওয়া ঢাকাকে সেটা কিছুটা হলেও স্বপ্ন দেখাতে পেরেছে হয়তো। বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম ১৭ রানের মধ্যে সিলেটের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল ঢাকা।
কিন্তু এরপর সিলেট আরও ৩ উইকেট হারালেও তাদের জয় ঠেকাতে পারেনি তাসকিনের দল। নাজমুল হোসেনের ২৫ বলে ৩৩ এবং ষষ্ঠ উইকেটে দুই বিদেশি বেনি হাওয়েল ও রায়ান বার্লের ৫৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে খেলা শেষ ১ ওভার বাকি থাকতেই। হাওয়েল অপরাজির ছিলেন ২৬ বলে ৩০ রান করে, বার্ল অপরাজিত ২৯ করেছেন ৩১ বলে।
দুর্দান্ত ঢাকা : ২০ ওভারে ১২৪/৮ (সাইফ ৪১, নাঈম ৩৬; রেজাউর ৩/২০, সামিত ২/১৯)।
সিলেট স্ট্রাইকার্স : ১৯ ওভারে১২৯/৫ (নাজমুল ৩৩, হাওয়েল ৩০*, বার্ল ২৯*; শরীফুল ৩/২৭, উসমান ২/১৬)।
ফল : সিলেট স্ট্রাইকার্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : বেনি হাওয়েল।