ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল টেস্ট সিরিজ খেলতে অস্ট্রেলিয়া সফরে যাবে আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই সিরিজ হারবে, ৩২ বছর ধরে এটাই যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সর্বশেষ ১৯৯২ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল ক্যারিবীয়রা। এরপর দেশটিতে তারা হেরেছে টানা ছয়টি সিরিজ। ১৯৯৭ সালের পর তো অস্ট্রেলিয়ায় কোনো টেস্টই জেতেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৭ ম্যাচের ১৫টিতেই হেরেছে, বাকি ২টিতে করেছে ড্র। এবারও দুই ম্যাচের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে।
তবে দুই দলের সাম্প্রতিক সব সিরিজই কোনো না কোনো কারণে আলোচিত হয়েছে। ২০০৯ সালের সিরিজটা যেমন ক্রিকেটপ্রেমীরা এখনো মনে রেখেছেন রিকি পন্টিং ও কেমার রোচের দ্বৈরথের কারণে। ওই বছরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার রোচের। সে সময়ের ২১ বছর বয়সী তরুণ রোচ গতি ও বাউন্সারে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক পন্টিংকে বেশ ভুগিয়েছিলেন।
পার্থে সিরিজের শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে তো রোচের বাউন্সারে কনুইয়ে আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় পন্টিংকে। দলের প্রয়োজনে চোট নিয়েই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলেন পন্টিং, তবে ৯ নম্বরে! ক্যারিয়ারে ওই একবারই লোয়ার অর্ডারে ব্যাট করেছেন তিনি। এত নিচে নেমে ব্যাট করলেও সুবিধা করতে পারেননি। মাত্র ২ রান করে আউট হন সেই রোচের বলেই।
১৫ বছর পর সেই পন্টিং এবার অস্ট্রেলিয়া–ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বে, আর ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে চলে আসা ৩৫ বছর বয়সী রোচ সম্ভবত শেষবার অস্ট্রেলিয়া সফর করছেন। পরশু ব্রিসবেনের গ্যাবায় দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে এই দুজনকে আবার একত্র করে সিরিজের সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান ‘চ্যানেল ৭’। সেখানে এক আলোচনায় ২০০৯ সালের স্মৃতিতে ফিরে যান পন্টিং। রোচের পাশে দাঁড়িয়েই মজা করে বলেন, ‘আমি সব সময়ই বলে এসেছি, কেমার (রোচ), ওই স্পেলের কারণে তুমি এখনো আমার কাছে দেড় মিলিয়ন (১৫ লাখ) ডলার ঋণী। কারণ, এরপরই আইপিএল নিলামে তোমাকে নেওয়া হয়।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই সিরিজে রোচের পারফরম্যান্স দেখে তাঁকে কিনে নেয় আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি ডেকান চার্জার্স। ২০১০ সালে আইপিএলে অভিষেক হয় তাঁর। পন্টিং মজা করে বলা কথাগুলোর মাধ্যমে সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন। পন্টিংয়ের কথা শুনে রোচও রসিকতা করে বলেন, ‘আপনি কিন্তু (ওই স্পেলটা) আরও ভালোভাবে সামলাতে পারতেন!’
এ সময় পন্টিং–রোচের পাশে ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট ওপেনার ও কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার এবং ‘চ্যানেল ৭’–এর সঞ্চালক। তাঁরাও পন্টিং–রোচের রসিকতায় অট্টহাসিতে ফেটে পড়েন। এরপর পন্টিং আরও বলেন, ‘আমার মনে আছে, ছেলেদের বলেছিলাম, সে (রোচ) আসলে পার্থের চেয়ে অ্যাডিলেডে আরও জোরে বোলিং করেছিল।’