ভারতের ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বমুরার জন্য কি নতুন আইন চালু হচ্ছে
ভারতের ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বমুরার জন্য কি নতুন আইন চালু হচ্ছে

বুমরার জন্য নতুন আইন: বল করতে হবে বাঁ হাতে অথবা এক কদম দৌড়ে

বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের সবচেয়ে ভোগাচ্ছেন কে? উত্তরটা সবারই জানা—যশপ্রীত বুমরা।

তারকা এই ফাস্ট বোলার প্রথম চার টেস্টে নিয়েছেন ৩০ উইকেট। সিরিজে ভারতের নেওয়া ৪৪.৭৮ শতাংশ উইকেটই তাঁর। এই মুহূর্তে সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও বুমরা। তাঁর চেয়ে ১০ উইকেট কম নিয়ে দুইয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছেন যশপ্রীত বুমরা

সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। বাংলাদেশ সময় আগামীকাল ভোরে সিডনিতে শুরু পঞ্চম ও সিরিজ নির্ধারণী টেস্ট। শেষ ম্যাচে বুমরাকে উইকেট শিকার থেকে বিরত রাখতে নিশ্চয়ই নতুন কোনো পরিকল্পনা করছে স্বাগতিকেরা। তবে দলের কাজটা সহজ করতে একটা আইন চালু করতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ।

প্রায় ১০০ অতিথির সামনে অ্যালবানিজ রসিকতা করে বলেছেন, ‘যতবারই সে (বুমরা) বল করতে আসে, ততবারই খুব ভয়ংকর মনে হয়। তার জন্য আমরা এখানে (অস্ট্রেলিয়ায়) একটি আইন পাস করতে পারি। হয় তাকে বাঁ হাতে অথবা এক কদম দৌড়ে বল করতে হবে।’

নতুন বছর উপলক্ষে গতকাল রাতে সিডনির উপকণ্ঠে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় সরকারি বাসভবন কিরিবিলি হাউসে অস্ট্রেলিয়া ও ভারত দলকে নৈশভোজের নিমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন অ্যান্থনি অ্যালবানিজ ও তাঁর বাগ্‌দত্তা জোডি হেইডন। সেখানেই বুমরাকে নিয়ে মজার ছলে এসব কথা বলেন অ্যালবানিজ। তাঁর কথা শুনে উপস্থিত সবাই হেসেছেন।

দুই দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ

প্রতিবছরের ১ জানুয়ারি স্বাগতিক ও সফরকারী দলকে বাসভবনে আমন্ত্রণ জানানো অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর জন্য একরকম রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারও সেটির ব্যতিক্রম হয়নি। কাল রাতে দেড় ঘণ্টার অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে খোশগল্পে মজেছিলেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চেয়ারম্যান মাইক বেয়ার্ড, বিদায়ী প্রধান নির্বাহী নিক হকলি এবং শিগগিরই হকলির স্থলাভিষিক্ত হতে চলা টড গ্রিনবার্গ।

নৈশভোজে খাদ্য তালিকায় ছিল তন্দুরি, ভেড়ার মাংসের কাটলেট, গলদা চিংড়ি, বাগদা চিংড়ির রোল, পালং শাক, পনির ও মাংসের বিশেষ রোল, নানা ধরনের ফল এবং আইসক্রিম।

অন্যরা ফরমাল শু পরে গেলেও অস্ট্রেলিয়ার তরুণ ব্যাটিং প্রতিভা স্যাম কনস্টাস গিয়েছিলেন কেডস পরে। তিনি যে আক্ষরিক অর্থেই অন্যদের চেয়ে ব্যতিক্রম, এটি যেন তার আরেকটি উদাহরণ। কনস্টাসের বাড়ি সিডনির শহরতলি হার্স্টভিল এলাকায়। সেখান থেকে কিরবিলি হাউস কাছাকাছি দূরত্বে। তাই পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন কনস্টাস।

মেলবোর্নে বক্সিং ডে টেস্টে বুমরার বলে বেশ কয়েকবার র‍্যাম্প শট খেলে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন কনস্টাস। এরপর শৈশবের নায়ক বিরাট কোহলির সঙ্গে ধাক্কার ঘটনা তাঁকে আরও বেশি আলোচনায় নিয়ে এসেছে। কাল সেই বুমরার সঙ্গে ছবি তুলেছেন কনস্টাসের বাবা জিম ও মা পামেলা। কয়েক মিনিট পর কনস্টাস ও তাঁর দুই ভাই ছবি তুলতে দাঁড়িয়ে গেছেন কোহলির সঙ্গে।

ছবিটা কেমন হলো—কোহলির সঙ্গে সেলফি তুলে কি সেই কথাই বলতে চাইলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী?

গত নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী একাদশের হয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন কনস্টাস। ওই ইনিংসই তাঁর জাতীয় দলে ঢোকার পথ তৈরি করে দেয়।

১৯ বছর বয়সী এই প্রতিভাকে তিনিই দলে নিয়েছিলেন দাবি করে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজ কিছুটা কৃতিত্ব নিজেকেও দিয়েছেন, ‘আমিই তাকে (কনস্টাসকে) বিশেষ বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রী একাদশে নিয়েছিলাম। পরবর্তী সময়ে (অস্ট্রেলিয়া দলে) তার অন্তর্ভুক্তি জাতীয় ক্রিকেটে আমার একমাত্র অবদান। এর কিছুটা কৃতিত্ব আমার (হাসি...)।’

অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের সদস্যরা আলাদাভাবে প্রধানমন্ত্রী অ্যালবানিজের সঙ্গে ছবি তুলেছেন। কোহলি কিছুক্ষণ অ্যালবানিজ ও ক্রীড়ামন্ত্রী আনিকা ওয়েলসের সঙ্গে কথা বলেছেন। ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও অতিথিদের সঙ্গে মিশেছেন।

কিন্তু চাপে থাকা প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর অনুষ্ঠানের বেশির ভাগ সময় নীরব ছিলেন। বলার মধ্যে শুধু এটুকুই বলেছেন, ‘ভ্রমণের জন্য অস্ট্রেলিয়া একটি সুন্দর দেশ, কিন্তু সফরকারী দলের জন্য কঠিন। এখানকার দর্শকেরা সত্যিই অসাধারণ। আমাদের আরেকটি টেস্ট বাকি। আশা করি, দর্শকদের বিনোদন দিতে পারব।’

কনস্টাসের পরিবারের সঙ্গে বুমরা

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স বলেছেন, ‘মেলবোর্নে গত সপ্তাহে যা হয়েছে, তা আমাদের খেলা অন্যতম সেরা টেস্ট। এখন আমরা এই সপ্তাহের দিকে তাকিয়ে। এটা (সিরিজ) নির্ধারণী ম্যাচ। আমাদের জন্য সিরিজ জয়ের সুযোগ। মাঠে নামতে তর সইছে না।’