আইপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব
আইপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব

আইপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স কেমন

আজ শুরু হচ্ছে আইপিএলের ১৬তম আসর। এই প্রথম আইপিএলের এক আসরে খেলবেন তিন বাংলাদেশি। কলকাতা নাইট রাইডার্সে আছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস, দিল্লি ক্যাপিটালসে মোস্তাফিজুর রহমান। সাকিব, মোস্তাফিজ আইপিএল খেলছেন আগেও। লিটনের জন্য এবারই প্রথম। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটিতে বাংলাদেশের আরও কয়েকজন ক্রিকেটার খেলেছেন এর আগে। যাঁদের মধ্যে আছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, আবদুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আশরাফুল ও তামিম ইকবাল।

আইপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কেমন খেলেছিলেন, সেটি জেনে নেওয়া যাক—

আবদুর রাজ্জাক

আইপিএলে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার আবদুর রাজ্জাক। ২০০৮ সালে আইপিএলের প্রথম আসরেই ডাক পেয়েছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। রাজ্জাককে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার দিয়ে কিনেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। একটিই ম্যাচ খেলেছিলেন রাজ্জাক। রাজস্থান র‍য়্যালসের বিপক্ষে সেই ম্যাচে বোলিংটাও ভালো হয়নি। ২ ওভারে ২৯ রান দিয়ে উইকেটবিহীন থাকার পর সেই আসরে আর একাদশে সুযোগ পাননি।

মোহাম্মদ আশরাফুল

মোহাম্মদ আশরাফুলও আইপিএলে একটি ম্যাচই খেলতে পেরেছিলেন। ২০০৯ সালে ডাক পেয়েছিলেন শচীন টেন্ডুলকারের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে। ৭৫ হাজার মার্কিন ডলারে কেনা আশরাফুলকে দিল্লি ডেয়ার ডেভিলসের বিপক্ষে খেলিয়েছিল মুম্বাই। ১০ বল খেলে মাত্র ২ রান করতে পেরেছিলেন আশরাফুল। পরের ম্যাচে বাদ পড়েন। এরপর আর একাদশে ফিরতে পারেননি।

মাশরাফি বিন মুর্তজা

আইপিএলে মাশরাফি বিন মুর্তজা খেলেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সে

২০০৯ আইপিএল নিলামে মাশরাফিকে ৬ লাখ মার্কিন ডলার দামে কিনে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। এখন পর্যন্ত এটিই আইপিএলে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সর্বোচ্চ দাম। তবে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের নেতৃত্বাধীন দলটিতে মাত্র এক ম্যাচে সুযোগ পান মাশরাফি। কলকাতার ম্যাচটি ছিল ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ২১ রান দরকার ছিল ডেকানের। মাশরাফির করা ওভারটি থেকে ২টি ছয় ও ২টি চার মেরে ডেকানকে জিতিয়ে দেন রোহিত শর্মা। ৪ ওভারে ৫৮ রান খরচ করে পরের ম্যাচেই একাদশ থেকে বাদ পড়েন মাশরাফি। সেটিই আইপিএলে তাঁর একমাত্র ম্যাচ হয়ে থাকে।

তামিম ইকবাল

২০১২ সালে ৫০ হাজার মার্কিন ডলারে তামিম ইকবালকে কিনেছিল পুনে ওয়ারিয়র্স। তবে ওই আসরে একটি ম্যাচেও খেলার সুযোগ পাননি তিনি। পরের বছরও পুনের সঙ্গে ছিলেন তামিম। সুযোগ পাননি সেবারও। ওই দুই আসরে পুনে অষ্টম ও নবম হয়ে আসর শেষ করে। পরবর্তী সময়ে আর্থিক ঝামেলায় জড়িয়ে আইপিএল থেকে প্রত্যাহার হয় পুনের ফ্র্যাঞ্চাইজিটির।

আইপিএলে এবারও কলকাতার হয়ে খেলবেন সাকিব

সাকিব আল হাসান

সাকিব আল হাসান প্রথমবার আইপিএলে ডাক পান ২০১১ সালে। সেবার কলকাতা তাঁকে ১ কোটি ৫০ লাখ রুপিতে কিনে নেয়। ২০১৪ সালে পরের নিলামেও তাঁকে ধরে রেখেছিল দলটি। ছয় মৌসুম কলকাতার হয়ে খেলার পর সাকিব ২০১৮ সালে যোগ দেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদে, খেলেন ২ মৌসুম।

এরপর আবারও কলকাতায় ফেরেন ২০২১ সালে। তবে সেবার তাঁর পারফরম্যান্স ছিল খুবই হতাশাজনক। ২০২২ মৌসুমে আর ডাকই পাননি। মাঝে ২০১৩ সালে চোট আর ২০২০ সালে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার কারণে খেলতে পারেননি।

সব মিলিয়ে ৯ মৌসুমে ২টি ফ্র্যাঞ্জাইজির হয়ে মোট ৭১টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। এর মধ্যে ব্যাট হাতে ৫২ ইনিংসে ১৯.৮২ গড়ে রান তুলেছেন ৭৯৩। ১২৪ স্ট্রাইক রেটে রান তোলা সাকিবের ফিফটি ২টি। তবে ব্যাটিংয়ের চেয়ে বেশি ছন্দে দেখা গেছে বোলিংয়ে। ৭০ ম্যাচে ৬৩ উইকেট। সেরা বোলিং ১৭ রানে ৩ উইকেট।

মোস্তাফিজ এর আগে আইপিএলে আলো ছড়িয়েছেন হায়দরাবাদের জার্সিতে।

মোস্তাফিজুর রহমান

মোস্তাফিজুর রহমান আইপিএলে প্রথম খেলেন ২০১৬ সালে। আর প্রথমবারেই বাজিমাত। সেবার সানরাইজার্স হায়দরাবাদের শিরোপা জয়ে অন্যতম ভূমিকা ছিল মোস্তাফিজের। ১৬ ম্যাচে ৬.৯ ইকোনমিতে তুলে নেন ১৭ উইকেট। প্রতি ম্যাচের ডেথ ওভার বোলিংয়ে অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের প্রধান ভরসা ছিলেন মোস্তাফিজ।

সাত বছর পর এবারও মোস্তাফিজের অধিনায়ক ওয়ার্নার। দুজন খেলছেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। মোস্তাফিজ মাঝে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসেও খেলেছেন। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৪৬ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৪৬ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৩ উইকেট।