সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট

নতুন কিছু বলেননি হাথুরুসিংহে

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আদর্শ কাঠামোটা কেমন, সেটা ক্রিকেট–সংশ্লিষ্ট সবারই জানা। অথচ সে জানা কাঠামোটাই আজ পর্যন্ত পরিপূর্ণভাবে গড়ে ওঠেনি বাংলাদেশের ক্রিকেটে।

এখনো জাতীয় ক্রিকেট লিগ শুরুর সপ্তাহখানেক আগে ঢাকায় বসে জাতীয় নির্বাচকেরা দল সাজিয়ে দেন। দলের কোচ, ট্রেনার, ফিজিও, ম্যানেজার ঠিক হয় লিগ শুরু হবে হবে সময়ে, সেটাও ঠিক করে বিসিবি। মাত্র কয়েক দিনের অনুশীলনেই দলগুলো খেলতে নেমে যায় দেশের মূল প্রথম শ্রেণির আসরে। একটা টেস্ট খেলুড়ে দেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট এভাবেও চলতে পারে, এটা হয়তো অন্য টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলো ভাবতেও পারে না।

বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে আলোচনা–সমালোচনা অনেক হলেও সে তুলনায় অবস্থার উন্নতি হয়েছে কমই। অবশেষে জাতীয় দলের প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেও একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন বদল আনার। সম্প্রতি বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির সঙ্গে এক আলোচনায় হাথুরুসিংহে কিছু প্রস্তাবও দিয়েছেন। অবশ্য হাথুরুসিংহের যা চাওয়া, সেটি বছর দুই আগে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের দেওয়া প্রস্তাবের চেয়ে ভিন্ন কিছু নয়।

মাত্র কয়েক দিনের অনুশীলনেই প্রথম শ্রেণির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন ক্রিকেটাররা

টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে বিভাগীয় পর্যায়ের দলগুলোর অনুশীলন সুযোগ–সুবিধা বাড়ানো, খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি ও বেতন বৃদ্ধি, দল নির্বাচন প্রক্রিয়া, লিগ আয়োজনের সময়, পয়েন্ট পদ্ধতি, দলগুলোর ভেন্যু থেকে ভেন্যুতে যাতায়াত, মাঠ–উইকেট—সব বিষয়ই সুনির্দিষ্টভাবে বলা ছিল মিনহাজুলের প্রস্তাবে।

সেই প্রস্তাব এখনো আলোর মুখ না দেখলেও এবার হাথুরুসিংহেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে একই রকম পরিবর্তন চাইছেন বলে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন বিসিবির টুর্নামেন্ট কমিটির প্রধান আহমেদ সাজ্জাদুল আলম। প্রথম আলোকে সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘হাথুরুসিংহে কিছু আইডিয়া নিয়ে আমাদের সঙ্গে বসেছিলেন। আমরা অবশ্য দুই বছর আগেই এ রকম প্রস্তাব বোর্ডে দিয়েছিলাম। তখন সেটা বেশি দূর এগোয়নি। বিষয়টি নিয়ে হাথুরুসিংহে বোর্ডপ্রধানের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। তিনি যেহেতু চেষ্টা করছেন, হয়তো এবার পরিবর্তন আসবে।’

টুর্নামেন্ট কমিটি চাইছে, প্রতিটি বিভাগীয় দলের কার্যক্রম সারা বছর চালু রাখতে। প্রতিটি বিভাগের জন্য নির্দিষ্ট কোচ, ম্যানেজার, ট্রেনার, ফিজিও থাকবেন; যাঁদের অধীন ক্রিকেটাররা সারা বছর অনুশীলনের মধ্যে থাকবেন। অনুশীলন উইকেটের চরিত্রও হতে হবে ভিন্ন ভিন্ন। প্রতিটি বিভাগে অনূর্ধ্ব-২৩ কার্যক্রম চালুরও ইচ্ছা টুর্নামেন্ট কমিটির। অনূর্ধ্ব-১৯ পেরিয়ে আসা ক্রিকেটারদের ধরে রাখতেই বিভাগীয় ক্রিকেটে অনূর্ধ্ব-২৩ ধাপ যোগ করতে চায় টুর্নামেন্ট কমিটি।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের জন্য খেলোয়াড় দরকার হলে অনূর্ধ্ব-২৩ দলের ক্রিকেটাররা সুযোগ পাবেন। জাতীয় লিগের পাশাপাশি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের আটটি দলের অনূর্ধ্ব-২৩ দলও তিন দিনের ক্রিকেট খেলবে। আর এমন বছরব্যাপী কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন কাঠামো পরিবর্তন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের কমিটির সঙ্গে হাথুরুসিংহের আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন মিনহাজুলও। এ নিয়ে তিনি আবারও বলেছেন, ‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালো করতে হলে এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।’

বিভাগীয় পর্যায়ে অনূর্ধ্ব-২৩ দলও চান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন

বিসিবি সম্প্রতি পাঁচটি আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার অ্যাডহক কমিটি অনুমোদন দিয়েছে। কমিটিগুলো এর মধ্যে কার্যক্রমও শুরু করেছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের যে কাঠামো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, বোর্ড সে পথে এগোলে তার বাস্তবায়ন করতে হবে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থাকেই। আহমেদ সাজ্জাদুল আলম বলেছেন, ‘তখন আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার মাধ্যমেই কাজ করবে টুর্নামেন্ট কমিটি। আমরা পরিকল্পনা দেব, টাকাপয়সা দেব, কাজটা বাস্তবায়ন করবেন ওনারা।’

এর আগে অবশ্য প্রস্তাবটাতে সায় দিতে হবে বোর্ডকে।