আইসিসির পূর্ণ সদস্যদেশ না হয়েও প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে আগামী বছর দেশটিতে টুর্নামেন্টটি হবে কি না, সেটি ঘিরে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। ভারতের সংবাদমাধ্যম নিউজ ১৮ জানাচ্ছে, এখনো অবকাঠামোগত দিক দিয়ে প্রস্তুত হয়ে ওঠেনি যুক্তরাষ্ট্র।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে পরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সহ-আয়োজক হওয়ার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। তবে টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র বছরখানেক বাকি থাকলেও অবকাঠামোর দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখনো দীর্ঘ পথ। নিউজ ১৮ বলছে, শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্টটি এ অঞ্চল থেকে সরিয়ে ইংল্যান্ডকে আয়োজন করার জন্য অনুরোধ করতে পারে আইসিসি। এমনিতে ২০৩০ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের সঙ্গে যৌথভাবে আয়োজন করার কথা ইংল্যান্ডের। সে ক্ষেত্রে ২০৩০ সালের টুর্নামেন্ট আয়োজনের স্বত্ব দেওয়া হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রকে।
নিউজ ১৮-কে একটি সূত্র বলেছে, ‘একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবকাঠামোগত অবস্থা খুব একটা উৎসাহব্যঞ্জক নয়, আইসিসি ২০২৪ ও ২০৩০ সালের আসরের আয়োজক অদল-বদল করতে পারে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রও সব ঠিকঠাক করার সময় পাবে। এই মুহূর্তে ভেন্যুগুলোকে প্রস্তুত করতে তাড়াহুড়া করা হচ্ছে। ইংল্যান্ডকে এরই মধ্যে ২০৩০ সালের আয়োজনের স্বত্ব দেওয়া হয়েছে, আর তারা এমন একটা টুর্নামেন্ট জুন-জুলাইয়ে আয়োজনও করতে পারবে।’
অন্য একজন সাবেক কর্মকর্তা বলেছেন, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রে টুর্নামেন্ট আয়োজন ‘ঝুঁকিপূর্ণ হবে যাবে’। আরেকজন সাবেক প্রশাসক বলেছেন, ‘কোথায় করবেন আয়োজন? যেটা বলতে পারি, সম্প্রতি আইসিসির পরিদর্শনের পর অস্থায়ী ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে, যেখানে গ্যালারি থেকে শুরু করে সবই এমন হবে। তবে সেটি করাও বেশ কঠিন কাজ হবে। আর সেটিও যে আইসিসির মানদণ্ড পূর্ণ করবে, তার পুরো নিশ্চয়তা নেই। একটা ভেন্যুতে আইসিসির অনেক চাহিদা থাকে, এমন স্টেডিয়াম সেগুলো পূরণ করবে বলে মনে হয় না।’
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের সাবেক অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান ও এখনকার সদস্য অতুল রাই গত মাসে বলেছেন, এখনকার পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বকাপ আয়োজন ‘খুবই কঠিন’। তাঁর মতে, ‘আইসিসিরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে উপযুক্ত অবকাঠামো ছাড়া কিছুই হবে না। আমাদের এখন সুযোগ-সুবিধা নেই, ফলে আইসিসি এখানে অস্থায়ী ভেন্যু বানানোর জন্য বিনিয়োগ করবে কি না সেটি তাদের ব্যাপার। তবে এটি কঠিন একটা পরিস্থিতি; সত্যি বলতে কি আইসিসিও সেটি বুঝছে।’
যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত দুটি ভেন্যুতে পুরুষদের ৩২টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে। এর মধ্যে ২০টি হয়েছে ফ্লোরিডার লডারহিলের সেন্ট্রাল ব্রোয়ার্ড রিজিওনাল পার্ক স্টেডিয়াম টার্ফ গ্রাউন্ডে। সে মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেছে বাংলাদেশ, ভারতও। তবে এ ভেন্যুর মান নিয়েও সংশয় আছে রাইয়ের, ‘এমনকি ফ্লোরিডার মাঠেও অনেক কাজ করতে হবে। আইসিসি ইভেন্টের জন্য এটিও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্ট আয়োজনের সামর্থ্য এসব মাঠের নেই। এ কারণে আইসিসি অস্থায়ী ভেন্যু খুঁজছিল। তবে এটা আইসিসির ওপর নির্ভর করছে; কারণ, তারাই সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমরা পূর্ণ সদস্য নই বলে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের সঙ্গে সরাসরি চুক্তি সইও হয়নি। ফলে এটি আসলে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও আইসিসির ব্যাপার।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে সংশয় থাকলেও আগামী জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হচ্ছে দেশটির প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগ—মেজর লিগ ক্রিকেট। এর পাঁচটি দলের মধ্যে তিনটিই ভারতীয় মালিকানার।