আঙুলে চোট থাকায় এমনিতেও সিরিজটা খেলার কথা নয় সাকিব আল হাসানের। আর এখন তো তিনি আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনেরই প্রার্থী। মাগুরা-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে অংশ নেবেন নির্বাচনে। বাংলাদেশ অধিনায়কের সকল ব্যস্ততা এখন নির্বাচনকে ঘিরেই।
তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কাল থেকে শুরু দুই টেস্টের সিরিজের দল থেকে অন্তত মনস্তাত্ত্বিকভাবে দূরে নন সাকিব। গতকাল বাংলাদেশ দলের নতুন টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেনকে ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন, বাংলাদেশ দলকে জানিয়েছেন শুভকামনা।
আজ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে সিরিজের অধিনায়ক নাজমুল এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘সাকিব ভাইকে অবশ্যই আমরা মিস করব। আমার মনে হয় প্রত্যেকটা খেলোয়াড়ই মিস করবে। দলের ব্যাপারে গতকাল রাতে তিনি ফোন করেছিলেন, অভিনন্দন জানিয়েছেন। দলের সব খেলোয়াড়দের শুভকামনা জানিয়েছেন, যেন তারা ভালো করে। বলেছেন, আমরা যে জিনিসটা পারি, ওটাই যেন আমরা করি।’
সাকিবের অনুপস্থিতিতে টেস্ট দলের নেতৃত্ব এই সিরিজে প্রথম দেবেন নাজমুল। তবে ওয়ানডেতে এর আগে তিন ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেছেন। বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে, এরপর সদ্য সমাপ্ত ভারত বিশ্বকাপে সাকিব চোট পেয়ে সাকিব টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে যাওয়ার পর দুই ম্যাচে।
বিশ্বকাপের আগে ওয়ানডে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন তামিম ইকবাল। সাকিবও বলেছেন, বিশ্বকাপের পর আর অধিনায়কত্ব করবেন না। সিদ্ধান্তটা সব সংস্করণের ক্ষেত্রেই কি না, সেটি অবশ্য এখনো নিশ্চিত নয়। তবে এ রকম একটা পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ অধিনায়ক ঠিক করার চিন্তাটা স্বাভাবিকভাবেই উঁকি দিচ্ছে বিসিবিতে।
সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ অধিনায়ক হিসেবে নাজমুল আর মেহেদী হাসান মিরাজের নামই আলোচনায় বেশি ছিল। দু জনের মধ্যে এই সিরিজে দায়িত্ব পেলেন নাজমুল। জানা গেছে, আজ-কালের মধ্যে ঘোষণা হতে যাওয়া আসন্ন নিউজিল্যান্ড সফরের দলেও তিনিই অধিনায়ক থাকবেন। তিন ওয়ানডে ও তিন টি-টোয়েন্টির এই সিরিজে সাকিব এবং তামিমের না খেলাটা একরকম নিশ্চিত।
পরিস্থিতির কারণে আপাতত সিরিজ ধরে ধরেই অধিনায়কত্ব করতে হচ্ছে নাজমুলকে। তবে সাকিব ও তামিমের ভবিষ্যৎ চিন্তা জেনে যাওয়ার পর হয়তো বিসিবি তাঁকেই লম্বা সময়ের জন্য অধিনায়ক করতে চাইবে। নাজমুলও আজ আবার বলেছেন, সে দায়িত্ব নিতে তিনি প্রস্তুত, ‘আগেও যেটা বলেছিলাম, আমি মনে করি আমার সব সংস্করণেই অধিনায়কত্ব করার সামর্থ্য আছে। যেই অধিনায়ক হবে, তার জন্য লম্বা সময় অধিনায়কত্ব করাটা ভালো হবে, সুবিধার হবে।’
২০১০ সালের পর নাজমুলই দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক হলেন। অভিষেক টেস্ট খেলার পাঁচ বছরের মধ্যে এ দায়িত্ব পেলেন তিনি। এর আগে মুশফিকুর রহিম ও মুমিনুল হক টেস্ট নেতৃত্ব পেয়েছিলেন টেস্ট অভিষেকের ছয় বছর পর।
ক্যারিয়ার ও অধিনায়কত্ব নিয়ে সাকিবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্বাচনের পরই জানতে পারবে বিসিবি। তবে তামিমের পরিকল্পনা বিসিবির জেনে যাওয়ার কথা ছিল গতকালই। কিন্তু এ নিয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে গতকাল রাতে তাঁর বসার কথা থাকলেও সেই বৈঠকটা শেষ পর্যন্ত হয়নি। সেটি হতে পারে আজ।