৫ উইকেট পেয়েছেন নাহিদ রানা
৫ উইকেট পেয়েছেন নাহিদ রানা

নাহিদের ৫ উইকেট, শামসুরের সেঞ্চুরি

বৃষ্টির কবলে পড়েছিল ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দিনের তিনটি ম্যাচই। তবে শেষ পর্যন্ত ফল এসেছে তিনটিতেই। মোহামেডানকে হারিয়ে নিজেদের সম্ভাবনা উজ্জ্বল করেছে শাইনপুকুর, খুব কাছে গিয়েও রূপগঞ্জ টাইগার্সের সঙ্গে পেরে ওঠেনি সিটি ক্লাব। অন্য ম্যাচে ব্রাদার্সকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছে গাজী গ্রুপ।

নাহিদের ৫ উইকেটের পর শাইনপুকুরের জয়

জিতলেই আবাহনী ও শেখ জামালের পর তৃতীয় দল হিসেবে সুপার লিগ খেলা নিশ্চিত হতো মোহামেডানের। শাইনপুকুর পেসার নাহিদ রানার পর ব্যাটসম্যানদের সমন্বিত পারফরম্যান্সে তা হয়নি। বৃষ্টিতে ৩০ ওভারে ১৫৮ রানের পরিবর্তিত লক্ষ্য শাইনপুকুর ছুঁয়ে ফেলেছে ৬ উইকেট ও ১৪ বল বাকি থাকতেই। ১০ ম্যাচ শেষে দুই দলেরই এখন সমান ১৪ পয়েন্ট করে, রান রেটেও মোহামেডানকে (০.৬৮২) টপকে গেছে শাইনপুকুর (০.৯১৩)।

নাহিদের তোপ সামলে মোহামেডান ৫০ ওভারে ২২৭ রান তোলে ওপেনার ও অধিনায়ক ইমরুল কায়েস এবং আটে নামা আবু হায়দারের দুটি ফিফটিতে। টপ অর্ডার, মিডল অর্ডারের পর মোহামেডানের লোয়ার অর্ডারেও আঘাত করেন নাহিদ, ৪৫ রানে নেন ৫ উইকেট। ৬ ম্যাচের লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ৫ উইকেট নিলেন এই ফাস্ট বোলার।

শাইনপুকুরের রান তাড়ায় ২৪.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১২২ রান ওঠার পর বন্ধ হয় মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ম্যাচটি। পরিবর্তিত লক্ষ্যে কাজটি সহজ হয়ে আসে শাইনপুকুরের, দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর ও অধিনায়ক আকবর আলী ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২২৭/৯ (ইমরুল ৫৬, আবু হায়দার ৫১, আরিফুল ৩০; নাহিদ ৫/৪৫, হাসান ২/২০, রিশাদ ১/৪৭)
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাব: (লক্ষ্য ৩০ ওভারে ১৫৮) ২৭.৪ ওভারে ১৫৮/৪ (তানজিদ ৩৬, মার্শাল ৩০, আকবর ২৭*; মাহমুদউল্লাহ ১/১৪, নাঈম ১/২৭, আবু হায়দার ১/৪৫)
ফল: শাইনপুকুর ৬ উইকেটে জয়ী (ডিএলএস)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাহিদ রানা

গাজী গ্রুপের বড় জয়

আনিসুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, সাব্বির হোসেন ও আল-আমিন জুনিয়র—গাজী গ্রুপের ২ থেকে ৪ নম্বর ব্যাটসম্যানের সবাই পেয়েছেন ফিফটির দেখা কিন্তু কেউ যেতে পারেননি সেঞ্চুরি পর্যন্ত। তবে চারজনের ফিফটিতে ৩৪৪ রানের সংগ্রহ করা গাজী গ্রুপ ১৩০ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।

বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে ১২ রানে প্রথম উইকেট হারায় গাজী। আনিসুল ও হাবিবুরের ১৪৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে অবশ্য শক্ত ভিত পায় তারা। ৫৫ বলে ৮১ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন হাবিবুর, ফিফটি পাওয়া চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে সেঞ্চুরির সবচেয়ে কাছে যান তিনিই।

সেঞ্চুরি পেয়েছেন শামসুর রহমান

রান তাড়ায় ব্রাদার্সের শুরুটা হয় ধীরগতিতে। ২৮.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১০৭ রান তোলার পর বৃষ্টি নামলে কাজটা অসম্ভব হয়ে যায় তাদের, পরিবর্তিত লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩০৯ রান। মানে ১২.৩ ওভারে তুলতে হতো ২০২ রান। ৩ বল বাকি থাকতে অলআউট তারা। গাজী গ্রুপের আটজন বোলিং করেন, ছয়জনই পান উইকেটের দেখা। সর্বোচ্চ ৪টি নেন পেসার আবদুল গাফফার।

১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে গাজী গ্রুপ এখন পয়েন্ট তালিকার ৭ নম্বরে। ১০ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ঠিক পরেই ব্রাদার্স।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৫০ ওভারে ৩৪৪/৭ (হাবিবুর ৮১, সাব্বির ৭৪, আনিসুল ৬৫, আল-আমিন জুনিয়র ৬৪; রাহাতুল ৩/৫৬, জুবাইর ১/৩২)
ব্রাদার্স ইউনিয়ন: ৪০.৩ ওভারে ১৭৮ (মজিদ ৫১, রহমতউল্লাহ ২৬; গাফফার ৪/৩৪, পারভিজ ২/১৩, হাবিবুর ১/৪)
ফল: গাজী গ্রুপ ১৩০ রানে জয়ী (ডিএলএস)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হাবিবুর রহমান

শামসুরের সেঞ্চুরির পর টাইগার্সের রোমাঞ্চকর জয়

রূপগঞ্জ টাইগার্সের দেওয়া ২৯৮ রানের লক্ষ্যে শুরুটা ভালোই হয়েছিল সিটি ক্লাবের, ২২.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১১১ রান তুলে ফেলেছিল তারা। এরপর বৃষ্টিতে ৪১ ওভারে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৬ রান। সাজ্জাদুল হকের ৩৭ বলে ৬৯ রানের ইনিংসের পরও ৫ রান দূরেই থামতে হয়েছে তাদের।

তিনে নামা আবদুল্লাহ আল মামুনের ৮১ ও চারে নামা শামসুর রহমানের ৯৩ বলে ১০৬ রানের ইনিংসে টাইগার্স তোলে ২৯৭ রান। ৫৬ বলে ফিফটি করা শামসুর সেঞ্চুরি পান ৯০ বলে, ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে মারেন ৮টি ছক্কা। ক্যারিয়ারে শামসুরের এটি চতুর্থ শতক।

রান তাড়ায় সিটি ক্লাবকে শুরুতে আশা জোগান অধিনায়ক শাহরিয়ার কমল, ৭৬ বলে ৬৫ রানের ইনিংসে। এরপর সাজ্জাদ খুব কাছে নিয়ে গেলেও পার করাতে পারেননি তাদের। রেলিগেশন লিগে খেলার শঙ্কায় থাকা দুই ক্লাবেরই এখন ১ ম্যাচ বাকি থাকতে সমান ৪ পয়েন্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব: ৫০ ওভারে ১৯৭/৮ (শামসুর ১০৬, আবদুল্লা ৮১, মাহফিজুল ৩৪; ইরফান ৩/৫৬, সোহেল ৩/৫৯, নাইমুর ২/৭০)
সিটি ক্লাব: (লক্ষ্য ৪১ ওভারে ২৬৬) ৪১ ওভারে ২৬০/৮ (শাহরিয়ার ৬৫, সাজ্জাদুল ৬৯*, আশিকুল ৪৮; আরাফাত ৪/৩২, আবদুল্লা ২/৪৯, হাসিম ১/৩১)
ফল: রূপগঞ্জ ৫ রানে জয়ী (ডিএলএস)
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আবদুল্লাহ আল মামুন