হাম্বানটোটায় প্রথম ওয়ানডেতে পাকিস্তানের কাছে উড়েই গিয়েছিল আফগানিস্তান। ওয়ানডেতে নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর ৫৯ রানে অলআউট হয়ে তারা হেরেছে ১৪২ রানে।
সেই হাম্বানটোটাতেই দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ঘুরে দাঁড়ালেও কাঙ্ক্ষিত জয় পেল না হাশমতউল্লাহ শহীদির দল। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ১ উইকেটে হেরেছে তারা। এ নিয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা ৬ ওয়ানডের সবকটিতেই হারল আফগানিস্তান। রোমাঞ্চকর এ জয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিজেদের করে নিল বাবর আজমের দল।
দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আফগানদের ব্যাটিং যেন প্রথম ওয়ানডের ঠিক বিপরীত। রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান শুরুটা করেছেন দেখেশুনে, সতর্কভাবে। উইকেট ধরে রেখে পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে তাঁরা তুলেছেন মাত্র ৪৮ রান। ২১ ওভারে রান ছিল ৯১।
এরপর যেন খোলস থেকে বেরিয়ে আসেন গুরবাজ ও ইব্রাহিম। তাঁদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৩৯.৫ ওভারে ২২৭ রান তোলে আফগানিস্তান। জুটি ভাঙে ১০১ বলে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৮০ রানে ইব্রাহিমের আউটে। ৪৫তম ওভারে গুরবাজকেও হারায় আফগানিস্তান। আউট হওয়ার আগে ১৫১ বলে ১৪ চার ও ৩ ছয়ে ১৫১ রান করেছেন তিনি।
আফগানিস্তানের ওয়ানডে ইতিহাসে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। গত বছর ক্যান্ডিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ইব্রাহিম জাদরানের ১৬২ রানের ইনিংসটি ওয়ানডেতে আফগানিস্তানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।
ইব্রাহিম ও গুরবাজের পর আর কেউ খুব বড় কোনো ইনিংস খেলতে না পারলেও ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০০ রান তুলতে পারে আফগানরা। ওয়ানডেতে এ নিয়ে সপ্তমবার ৩০০ বা তার বেশি রানের স্কোর গড়ল দেশটি। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩৮ রান তুলেছে আফগানিস্তান। ভারতের গ্রেটার নয়ডায় সেটা তারা করেছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। পাকিস্তানের বিপক্ষে এবারই প্রথম ৩০০ রানের স্কোর করল আফগানিস্তান। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ২৫৭ রান, ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে।
বড় স্কোর তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল ভালোই। নবম ওভারে ৫২ রানে ফখর জামানের উইকেট হারালেও অধিনায়ক বাবর আজম ও ইমাম–উল হক দলকে নিয়ে যাচ্ছিলেন লক্ষ্যের দিকে। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাঁরা তোলেন ১১৮ রান।
কিন্তু ৬৬ বলে ৬ চারে বাবর ৫৩ রান করে ফজলহক ফারুকির বলে আউট হয়ে গেলে এলোমেলো হয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। ৪১ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারালে জয়ের সম্ভাবনা ফিকে হতে থাকে। কিন্তু ফিকে হয়ে যাওয়া সেই আশায় আবার রঙের প্রলেপ দেন শাদাব খান। ম্যাচ শেষ ওভারে নিয়ে যান তিনি। শেষ ওভারে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রান। ৩৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৪৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন তিনি।
কিন্তু শাদাব ছিলেন নন স্ট্রাইক প্রান্তে। শেষ ওভারের প্রথম বলেই তিনি প্রান্ত বদল করে স্ট্রাইকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ফজলহক ফারুকি বল ছোড়ার আগেই বেরিয়ে যান ক্রিজ ছেড়ে। তাঁকে মানকাডিং করেন ফারুকি।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ ওভারে প্রয়োজনীয় ১১ রান তুলে নেন নাসিম শাহ ও হারিস রউফ। এ ওভারে ফারুকিকে ২টি চার মারেন নাসিম। এর আগে এশিয়া কাপ টি–টোয়েন্টি শেষ ওভারে ফারুকিকে ২টি ছয় মেরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন তিনি।
পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৯১ রান করেন ইমাম। ১০৫ বলের ইনিংসটিতে মাত্র ৪টি চার মেরেছেন এই ওপেনার।