হাসান মাহমুদের গুড লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা বলটি তামিম ইকবালের ব্যাট ছুঁয়ে যায় উইকেটকিপার নুরুল হাসানের গ্লাভসে। নীল দলের অধিনায়ক তামিমের ইনিংস থামে মাত্র ২ রানে। সবুজ দলের ক্রিকেটাররা তখন তামিমের উইকেট উদ্যাপন করছিলেন, তামিম এগোচ্ছিলেন ড্রেসিংরুমের পথে। হঠাৎ কী ভেবে ড্রেসিংরুমে না এসে ঘুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরের পথে হাঁটা শুরু করেন তামিম। সেখানে ৩০ মিনিট ব্যাটিং করার পর ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন তিনি।
ইংল্যান্ড সিরিজের প্রস্তুতি ম্যাচে তামিম রান না পেলেও তাঁর দল জিতেছে বড় ব্যবধানে। ইয়াসির আলীর ৬১ রানের সৌজন্যে নীল দল ৪২.৪ ওভারে ২০৫ রান করে। সবুজ দলের বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৪ উইকেট নিয়েছেন। ৩ উইকেট নিয়েছেন হাসান।
রান তাড়ায় নীল দলের বোলাররাও দাপট দেখিয়েছে। ইবাদত হোসেনের এক স্পেলেই উড়ে গেছে সবুজ দলের টপ অর্ডার। ৪ উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। বাকি কাজটা করেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ (৩ উইকেট) ও নাসুম আহমেদ (২ উইকেট)। বোলারদের সৌজন্যে সবুজ দল অলআউট হয় মাত্র ২১.৩ ওভারে ১০১ রান করে। ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানের হার যখন নিশ্চিত হয়, তখন মিরপুরে ফ্লাডলাইট জ্বললেও দিনের আলো ফুরিয়ে যায়নি।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচের জন্য ১৪ সদস্যের দল ঘোষণা করেছিল বিসিবি। সিরিজ শুরুর আগে আরও একজন সেই দলে যুক্ত করবে বলে জানিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেছিলেন, ওয়ানডে দলের ১৫তম সদস্য কে হবেন, সেটা জানা যাবে এই প্রস্তুতি ম্যাচের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে। সেই আলোচনায় ছিলেন ইয়াসির আলী ও মাহমুদুল হাসান।
আজ প্রস্তুতি ম্যাচে দলের বিপদে রান পেয়েছেন ইয়াসির। তামিম, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজদের ব্যর্থতার দিনে ইয়াসিরের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৮ বলে ৬১ রানের ইনিংস। ১১টি চার মেরেছেন তিনি। আউট হয়ে ফেরার পথে তিনি ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের বাহবা পেয়েছেন।
ম্যাচটি মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্রিকেটারদের সামনে থেকে দেখার প্রথম সুযোগ ছিল এটি। সেটি তিনি কাজেও লাগিয়েছেন। সবুজ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেনের সঙ্গে খেলার ফাঁকে কথা বলতে দেখা গেছে তাঁকে। মিরাজ, মোস্তাফিজকেও সময় দিয়েছেন। অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকের সঙ্গেও হাথুরুসিংহের বেশ সময় নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে।
প্রস্তুতি ম্যাচের আরও একটি দিকে সবার আগ্রহ ছিল। নীল ও সবুজ-দুই দলেই ছিলেন একজন করে লেগ স্পিনার। নীল দলে আমিনুল ইসলাম, আর সবুজ দলে খেলেছেন রিশাদ হোসেন। পেসারদের দাপটে নীল দলের আমিনুলের আর বোলিং করতে হয়নি। তবে রিশাদকে ৯ ওভার বোলিং করিয়েছেন নাজমুল। ৩৪ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি। রিশাদের বোলিংয়ের সময় স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথকে ভিডিও করতে দেখা যায়।
হাথুরুসিংহের এই লেগ স্পিনারের খোঁজ শুরু হয়েছিল জুবায়ের হোসেনকে দিয়ে। এরপর তানভীর ইসলামকে দিয়েও বাংলাদেশ দলে লেগ স্পিনারের শূন্যতা পূরণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেটি সফল হয়নি। নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নিয়ে সে অসমাপ্ত কাজটাই যেন শুরু করলেন হাথুরুসিংহে।