আম্পায়ার শন জর্জ মারা গেছেন
আম্পায়ার শন জর্জ মারা গেছেন

৫৬-তেই চলে গেলেন মিলার-ঝড়ের সেই ম্যাচের আম্পায়ার

গত বছরের মার্চে আম্পায়ারিংকে বিদায় বলেছিলেন। এরপর থেকে ঘরোয়া ক্রিকেটে ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালন করছিলেন। এক বছর না যেতেই এবার পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন শন জর্জ।

গত বৃহস্পতিবার স্ট্রোক করেছিলেন জর্জ। গেবেখার একটি হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। গতকাল শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন দক্ষিণ আফ্রিকান এই আম্পায়ার। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।

আজ জর্জের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার (সিএসএ) প্রধান নির্বাহী ফোলেটসি মোসেকি। তিনি বলেছেন, ‘শনের আকস্মিক প্রস্থান দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। যাঁরা তাঁকে জানার বিশেষ সুযোগ পেয়েছেন, সবাই তাঁর অনুপস্থিতি অনুভব করবেন। তাঁর অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, উদারতা ও মহত্ত্ব সবাই ভীষণ মিস করবেন।’

ছেলেদের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ১১০ ম্যাচে মাঠের আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন জর্জ। আর ছেলেদের তিন সংস্করণ মিলিয়ে টিভি আম্পায়ার ছিলেন ২২ ম্যাচে।  সব মিলিয়ে মেয়েদের ক্রিকেট ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন ৪৭ বার।

আম্পায়ারিং ক্যারিয়ারে জর্জের উল্লেখযোগ্য ম্যাচগুলোর একটি ২০১৭ সালে লর্ডসে মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনাল। ওই ম্যাচে ভারতকে ৯ রানে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্বাগতিক ইংল্যান্ড।

এ ছাড়া ২০১৭ সালের বাংলাদেশের বিপক্ষে ডেভিড মিলারের ৩৫ বলে সেঞ্চুরির ম্যাচটিও মাঠের আম্পায়ার হিসেবে পরিচালনা করেন। ওই ম্যাচেই মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের এক ওভারে ৫ ছক্কা মেরেছিলেন মিলার। ৩৫ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে সে সময় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরি রেকর্ডও গড়েছিলেন। গত বছর চীনের হাংজুতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩৪ বলে সেঞ্চুরি করে মিলারের রেকর্ড ভেঙে দেন নেপালের কুশল মাল্লা।  

খেলোয়াড়ি জীবনে দক্ষিণ আফ্রিকার ইস্টার্ন প্রভিন্স ও ট্রান্সভালের হয়ে ১৭টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছেন জর্জ। করেছেন ২৩০ রান, নিয়েছেন ২৯ উইকেট। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জর্জের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও দক্ষিণ আফ্রিকার আরেক আম্পায়ার মারে ব্রাউন মারা যান। মাত্র ১৬ দিনের ব্যবধানে চলে গেলেন জর্জও।  

বাংলাদেশ–দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে আম্পায়ারের দায়িত্বে শন জর্জ। ২০১৭ সালের ২৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সেই ম্যাচেই ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ডেভিড মিলার

শন জর্জের মৃত্যুতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আইসিসির সাবেক ম্যাচ রেফারি দেবদাস গোবিন্দজি বলেছেন, ‘আমি বহু বছর শনের সঙ্গে কাজ করেছি। তাকে জাতীয় থেকে আন্তর্জাতিক আম্পায়ার হতে দেখেছি। প্রস্তুতি নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সূক্ষ্ম এবং সিদ্ধান্ত জানানোর ক্ষেত্রে দৃঢ়সংকল্পবব্ধ। এই গুণগুলোই আইসিসির অনেক টুর্নামেন্টে তাকে ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ করে দিয়েছিল।’

এ ছাড়া জর্জের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রেকর্ড পাঁচবার আইসিসি বর্ষসেরা আম্পায়ারের খেতাব জয়ী সাইমন টফেল