তামিম ইকবালের ৪৮ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে কুমিল্লাকে হারিয়েছে বরিশাল
তামিম ইকবালের ৪৮ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে কুমিল্লাকে হারিয়েছে বরিশাল

কুমিল্লাকে হারিয়ে প্লে–অফে তামিমের বরিশাল, মাঠে নামার আগেই বিদায় খুলনার

দিনের প্রথম ম্যাচে নিজেরা কুমিল্লার কাছে বাজেভাবে হারবে না আর পরের ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে খুলনা টাইগার্স খুব ভালোভাবে জিতবে না, তাহলেই প্লে-অফ নিশ্চিত। আজ মাঠে নামার আগে বরিশালের প্লে-অফে খেলার হিসাবটা ছিল এ রকমই। কিন্তু তামিম ইকবালের দল বিষয়টি সমীকরণের এই মারপ্যাঁচের দিকে যেতেই দেয়নি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে তারা। বরিশালের এই জয়ে সমীকরণ মেলানোর জন্য মাঠে নামার আগেই এবারের বিপিএলের প্রথম রাউন্ড থেকেই ছিটকে পড়েছে টুর্নামেন্টের প্রথম ৪ ম্যাচ জেতা খুলনা।

প্লে-অফে জায়গা করে নেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে টসে জিতে কুমিল্লাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান বরিশালের অধিনায়ক তামিম। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করে ম্যাচের প্রথম ভাগেই কুমিল্লাকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় বরিশালের বোলাররা। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪০ রানের বেশি কুমিল্লাকে করতে দেননি তাঁরা। জবাবে ২ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বরিশাল।

রান তাড়ায় বরিশাল লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মূলত তামিম ইকবালের ৪৮ বলে ৬৬ রানের ইনিংসে। তামিম তাঁর ইনিংসে ৬ চারের পাশাপাশি মেরেছেন ৩টি ছয়। বরিশালের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন কাইল মায়ার্স। তাঁর ২৫ বলে ২৫ রানের ইনিংসটিতে আছে ১টি চার ও ২টি ছয়ের মার।

তাইজুলের উইকেট পাওয়ার উচ্ছ্বাস। ২০ রান দিয়ে কুমিল্লার ৩ উইকেট নিয়ে বরিশালের সেরা বোলার তিনিই

এর আগে জিততে মরিয়া বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইনিংসের প্রথম চার ওভারেই চারজন বোলারকে আক্রমণে আনেন। চতুর্থ ওভারে এসে সাফল্য পান তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার ওবেড ম্যাকয় তাঁর প্রথম ওভারের শেষ বলে ফেরান স্বদেশি সুনীল নারাইনকে। ইনিংসের সপ্তম ওভারে আক্রমণে এসে দ্বিতীয় বলেই লিটন দাসকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাইজুল উইকেট পেয়েছেন নিজের পরের ওভারেও। ৮.১ ওভারে কুমিল্লার স্কোর হয়ে যায় ৩ উইকেটে ৪০ রান।

এখান থেকে কুমিল্লা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে মঈন আলী ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটিংয়ে। কিন্তু ৩০ বলে ৩৬ রানের জুটি ভাঙে ম্যাকয়ের বলে ২৫ রান করে হৃদয় আউট হয়ে ফিরলে। এরপর তেমন উল্লেখ করার মতো কোনো জুটি হয়নি কুমিল্লার ইনিংসে। এরপরও যে তারা বরিশালকে ১৪১ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে, সেই অবদান মূলত জাকের আলীর। সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬ বলে ২ চার ও ৪ ছয়ে অপরাজিত ৩৮ রান করেছেন জাকের। মূলত এই ইনিংসই কুমিল্লাকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ দিয়েছে।

বরিশালের পক্ষে ৩ ওভার বল করে ২০ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও ম্যাকয়।

কোয়ালিফায়ারে মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস আর এলিমিনেটরে মুখোমুখি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও ফরচুন বরিশাল।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

কুমিল্লা: ২০ ওভারে ১৪০/৮ (নারাইন ১৬, লিটন ১২, হৃদয় ২৫, মাহিদুল ১, মঈন ২৩, রাসেল ১৪, জাকের ৩৮*, ফোর্ডে ০, এনামুল ৩, তানভীর ০*; মেয়ার্স ৩-০-১৭-০, সাইফউদ্দিন ৪-০-১৬-২, জাভেদ ৪-০-৩২-১, ম্যাকয় ৪-০-৪০-২, তাইজুল ৩-০-২০-৩, মিরাজ ২-০-১৩-০)।

বরিশাল: ১৯.৪ ওভারে ১৪১/৪ (তামিম ৬৬, শেহজাদ ১, মায়ার্স ২৫, মুশফিক ১৭, মাহমুদউল্লাহ ১২*, সৌম্য ৬*; ফোর্ডে ৩-০-২৭-০, এনামুল ৪-০-২২-১, নারাইন ৪-০-১৮-০, মঈন ১-০-১৩-০, রাসেল ৪-০-৩৯-১, মুশফিক ৩.৪-১৯-২)।

ফল: বরিশাল ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তামিম ইকবাল (বরিশাল)।