১০ ম্যাচে ১৯৭ রান, ৬ উইকেট—আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের জার্সিতে হার্দিক পান্ডিয়ার পারফরম্যান্স এটি। ভারতের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাবেন কি না, সংশয় থাকলেও শেষ পর্যন্ত সুখবরই পেয়েছেন পান্ডিয়া। শুধু বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দলেই জায়গা পাননি, সহ–অধিনায়কের দায়িত্বও পেয়েছেন।
ফর্মে না থাকা এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে লম্বা সময় অনুপস্থিত থাকা পান্ডিয়াকে এভাবে দলে রাখায় প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার ইরফান পাঠান। তবে আরেক সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এমএসকে প্রসাদ পান্ডিয়ার দলভুক্তিতে সমস্যা দেখছেন না। বরং প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতীয় দলে পান্ডিয়ার বিকল্প কে?
৩০ বছর বয়সী পান্ডিয়া ভারতের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত বছরের অক্টোবরে, বিশ্বকাপে। বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে চোট পাওয়ার পর দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। আইপিএলের আগে ভারতের শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটারদের রঞ্জি ট্রফিতে খেললেও পান্ডিয়া মাঠে ফেরেননি। ওই সময় রঞ্জি ট্রফিতে না খেলায় ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন শ্রেয়াস আইয়ার ও ঈশান কিষান, যাঁদের পরে কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়। আইয়ার, কিষান ভারতের বিশ্বকাপ দলেও জায়গা পাননি।
ইরফানের কথা, ঘরোয়া ক্রিকেটে না খেলেও পান্ডিয়ার জাতীয় দলে থাকাটা ভুল বার্তা দেয়। স্টার স্পোর্টসে সাবেক পেসার বলেন, ‘একজন খেলোয়াড় এসব শর্ত পূরণ ছাড়াই চোট থেকে ফিরে দলে জায়গা পেয়ে গেল। এমনটা হওয়া উচিত নয়। কারণ, এটা দলের বাকিদের ওপর ভুল বার্তা দেয়। যখন আপনি দেখবেন একজন খেলোয়াড় বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে, সেটা দলের পরিবেশে প্রভাব ফেলে। ক্রিকেট টেনিস নয়। এটা দলীয় খেলা। এখানে সমতা গুরুত্বপূর্ণ। সবাইকে সমভাবে দেখতে হয়। আপনি নতুন খেলোয়াড় হোন বা রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলির মতো অভিজ্ঞ হন, ক্রিকেটে দলই সবার ওপরে।’
শুধু খেলোয়াড় হিসেবে দলে ডাকা নয়, পান্ডিয়াকে সহ–অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত নিয়েও ভিন্ন পর্যবেক্ষণ পাঠানের। এ ক্ষেত্রে যশপ্রীত বুমরার কথা ভাবা যেতে পারত বলে মনে করেন তিনি, ‘আমি বুঝতে পারছি নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পান্ডিয়াকে সহ–অধিনায়ক করা হয়েছে। তবে আমার মনে হয় বুমরার মতো কেউ একজনকে দায়িত্বটা দিলে মন্দ হতো না।’
বিসিসিআইর নির্বাচক কমিটির সাবেক প্রধান এমএসকে প্রসাদ অবশ্য পান্ডিয়াকে দলে নেওয়া এবং সহ–অধিনায়কত্ব দেওয়ার কোনো বিকল্প দেখছেন না। চলতি মৌসুমে মুম্বাইয়ে যোগ দিয়েই দলটির অধিনায়ক হয়েছেন পান্ডিয়া, এত দিন নেতৃত্বে থাকা রোহিত খেলছেন তাঁর নেতৃত্বে। এর প্রভাব পড়ছে পান্ডিয়ার পারফরম্যান্সে, রেভস্পোর্টজের সঙ্গে আলাপে এমনই ধারণার কথা জানান প্রসাদ, ‘এটা ঠিক যে পান্ডিয়ার সময়টা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। কারণ, এরই মধ্যে অনেক কিছু ঘটেছে। মুম্বাইয়ে নেতৃত্বে পরিবর্তন এসেছে, যেটা ওর খেলায় প্রভাব ফেলেছে। কিন্তু একবার যখন ভারতের জার্সি গায়ে তুলবে, আইপিএল পেছনে পড়ে যাবে।’
প্রসাদের মতে বর্তমান ভারতে পান্ডিয়াই সেরা ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার, আর রোহিতের অনুপস্থিতিতে ২০২২ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাও তাঁর বড় শক্তি, ‘আমার মনে হয় না হার্দিকের দলে থাকা এবং সহ–অধিনায়ক করা নিয়ে ভিন্ন কিছু ভাবার ছিল। সে রোহিতের অবর্তমানে অধিনায়কত্ব করেছে। সুতরাং, পরবর্তী নেতৃত্বের জন্য তাঁকে ভাবা হচ্ছে এটা স্পষ্ট। নির্বাচকেরা সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন। আমাকে বলুন তো, এই দেশে এই মুহূর্তে হার্দিকের চেয়ে ভালো ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার আর কে আছে?’