আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি–মার্চে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হওয়ার কথা রয়েছে পাকিস্তানে। আইসিসির টুর্নামেন্টটি ঘিরে আবারও ‘লড়াই’য়ে নামার উপক্রম ভারত ও পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই ও পিসিবি)। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে না যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে বিসিসিআই। আর পিসিবি বলছে, আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলে করণীয় ঠিক করবে তারা।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হতে বছরখানেক বাকি থাকলেও ভারতের পাকিস্তান–যাত্রার বিতর্কের শুরু রোহিত শর্মার সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের সূত্র ধরে। গত সপ্তাহে ‘ক্লাব প্রেইরি ফায়ার’ নামের পডকাস্টে ভারতের তিন সংস্করণের অধিনায়ক বলেন, ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে নিয়মিত দ্বিপক্ষীয় সিরিজ চান তিনি। এ প্রসঙ্গে সোমবার পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ভারত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দল পাঠাতে রাজি হলে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের কথা ভাববে পিসিবি।
নাকভির এ মন্তব্য নিয়ে বিসিসিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস (আইএএনএস)। সংবাদমাধ্যমটির কাছে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করে বিসিসিআইয়ের একটি সূত্র। এমনকি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়েও অনিশ্চয়তার কথা জানিয়ে দেওয়া হয়, ‘দ্বিপক্ষীয় সিরিজের কথা ভুলে যান। ভারত দল তো চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্যই পাকিস্তানে না যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভেন্যু বদলানো হতে পারে, হাইব্রিড মডেলেরও সম্ভাবনা আছে।’
২০২৩ এশিয়া কাপের মূল আয়োজন ছিল পাকিস্তান। কিন্তু ভারত সেখানে যেতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত টুর্নামেন্ট হয়েছিল হাইব্রিড মডেলে। ভারত ছাড়া বাকি সব দল পাকিস্তানে গেলেও রোহিতদের ম্যাচ হয়েছে শ্রীলঙ্কায়। এবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও একই পথে হাঁটতে চায় বিসিসিআই। তবে এ ক্ষেত্রে বড় পার্থক্য টুর্নামেন্টের কর্তৃপক্ষে।
এশিয়া কাপের কর্তৃপক্ষ এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আইসিসি। ক্রিকেটের বৈশ্বিক সংস্থায় ভারতের জোরালো অবস্থান থাকলেও চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হাইব্রিড মডেল বা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে নিয়ে যাওয়া সহজ হবে না বলে মনে করে বিসিসিআইও, ‘যেকোনো সফরের জন্য বিসিসিআইকে সরকারের অনুমতি পেতে হয়। তবে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভালো নেই। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আইসিসির টুর্নামেন্ট বলে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা কঠিনই হবে। তবে সরকারের নির্দেশ বা সবুজসংকেত ছাড়া কিছু করারও নেই। আর দ্বিপক্ষীয় সিরিজের ব্যাপারে বলব, অদূর ভবিষ্যতে এমন কিছু হওয়া প্রায় অসম্ভব।’
ভারত–পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেছে ২০১২–১৩ মৌসুমে। এখন দ্বিপক্ষীয় সিরিজের পাশাপাশি আইসিসির টুর্নামেন্টেও যদি ভারত পাকিস্তানে না যায়, সে ক্ষেত্রে পিসিবির করণীয় কী হবে আগেই ভেবে রাখা হচ্ছে। আইএএনএসকে পিসিবির একটি সূত্র গতকাল বলেন, ‘এখানে রোহিত শর্মা ও বিসিসিআই সূত্রটির মন্তব্য পরিষ্কার বৈপরিত্য দেখা যাচ্ছে। বোঝা যাচ্ছে, ক্রিকেট নিয়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে সমস্যা নেই, তারা খেলতে চায়। কিন্তু ভারতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সব সময় ঝামেলা পাকাচ্ছে।’
পাকিস্তান সর্বশেষ আইসিসি টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে ১৯৯৬ সালে, যা ছিল যৌথভাবে আয়োজিত বিশ্বকাপ।