ভারতের ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) গতকাল নিশ্চিত করেছে, জাতীয় দলের প্রধান কোচ পদে থাকছেন রাহুল দ্রাবিড়। নতুন এই চুক্তি কত দিনের তা জানায়নি বিসিসিআই। তবে ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছিল, অন্তত ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকবেন দ্রাবিড়। আর দ্রাবিড় এ দায়িত্বে চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন বিসিসিআইয়ের সঙ্গে প্রায় এক সপ্তাহ আলোচনার পর।
ইএসপিএনক্রিকইনফোর মতো ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াও জানিয়েছে, ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত প্রধান কোচের দায়িত্ব পালনে সম্মত হয়েছেন দ্রাবিড়। পরের ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে এখনই ভাবতে চাইছে না বিসিসিআই। এ নিয়ে বোর্ডের এক সূত্রের উদ্ধৃতিও প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া, ‘দ্রাবিড় এবং তার সাপোর্ট স্টাফকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মনোযোগ দিতে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই টুর্নামেন্ট জেতাই লক্ষ্য। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা আপাতত হচ্ছে না। (টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর) তার পর থেকে এসব নিয়ে ভাবা হবে।’
ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, দ্রাবিড় প্রধান কোচের দায়িত্বে থাকুক, এটা চান ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার। সেটা অন্তত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বিসিসিআই নাকি আগামী বছর সংক্ষিপ্ততম এই সংস্করণের বিশ্বকাপ পর্যন্তই নতুন চুক্তির প্রস্তাব করেছে দ্রাবিড়কে। আর আলোচনার পর তাতে সম্মতি জানিয়েছেন ভারতীয় কিংবদন্তি।
তবে সংবাদমাধ্যমটি এমন তথ্যও জানিয়েছে, বিসিসিআই দ্রাবিড়কে নতুন চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে একজনের কাছে প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর। তিনি আশিস নেহরা! তাঁকে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের কোচ হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল বিসিসিআই। নেহরা দায়িত্ব নিলে ভারতীয় ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো আলাদা সংস্করণের জন্য আলাদা কোচ দেখা যেত। কিন্তু নেহরা বিসিসিআইয়ের প্রস্তাবে রাজি হননি। এরপর দ্রাবিড়ের কাছে ফিরে গেছে বিসিসিআই। শুধু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস নয়, নিজেদের সূত্র মারফত একই খবর জানিয়েছে এনডিটিভিও।
বিশ্বকাপে দ্রাবিড়ের অধীনে দারুণ খেলেছে ভারত। লিগ ও সেমিফাইনাল মিলিয়ে টানা ১০ ম্যাচ জেতার পর ফাইনালে হেরেছে অস্ট্রেলিয়ার কাছে। ভারতের খেলার প্রশংসা করেছেন অনেকেই। বিসিসিআই সেক্রেটারি জয় শাহও সমর্থন দিয়েছেন দ্রাবিড়ের প্রতি।
১৯ নভেম্বর ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালের মধ্য দিয়ে কোচ হিসেবে প্রথম দফায় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় দ্রাবিড় এবং তাঁর কোচিং স্টাফদের। নতুন চুক্তিতে সবারই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। যদিও এর আগে ভিভিএস লক্ষ্মণকে নিয়েও গুঞ্জন শোনা গেছে। চলতি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করছেন লক্ষ্মণ। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, দ্রাবিড়ের একসময়ের জাতীয় দল সতীর্থ লক্ষ্মণকে ‘ব্যাকআপ’ হিসেবে ভাবা হয়েছিল। দ্রাবিড় নতুন মেয়াদে দায়িত্ব নিতে রাজি না হলে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির (এনসিএ) প্রধান লক্ষ্মণ ছিলেন বিসিসিআইয়ের পরিকল্পনায়।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ৬ ডিসেম্বর উড়াল দেবে ভারতীয় ক্রিকেট দল। ১০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। এরপর ওয়ানডে ও টেস্ট সিরিজ। এই সিরিজে কোচের দায়িত্ব নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার জন্য লক্ষ্মণের কাছে পাসপোর্ট চেয়েছিল বিসিসিআই। তখনই দায়িত্ব নেওয়ায় লক্ষ্মণের অনাগ্রহটা বোঝা যায়। টাইমস অব ইন্ডিয়া এ নিয়ে সূত্রের উদ্ধৃতি প্রকাশ করেছে, ‘লক্ষ্মণ বলেছে, তার পরিবারকে বেশি সময় দেওয়া প্রয়োজন। অনেক ভ্রমণের ঝামেলা সে নিতে চায়নি। এ ছাড়া এনসিএকে (জাতীয় ক্রিকেট একাডেমি) আরও শক্তিশালী করে খেলোয়াড়দের পাইপলাইন সমৃদ্ধ করতেই সে বেশি আগ্রহী।’