ঝোড়ো ফিফটি করেন মাহমুদউল্লাহ
ঝোড়ো ফিফটি করেন মাহমুদউল্লাহ

সিলেটকে ‘পাঁচে পাঁচ’ উপহার দিলেন শেহজাদ-মাহমুদউল্লাহ

বিপিএলে ‘হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে’ নেই বলে সে অর্থে স্বাগতিক দল নেই। কিন্তু সিলেটে আবহটা থাকে আলাদাই। গতবারের রানার্সআপ সিলেট স্ট্রাইকার্স সমর্থকদের প্রত্যাশাও মিটিয়েছিল অনেকটা। কিন্তু এবার হতাশার রংটা দিন দিন শুধু গাঢ়ই হচ্ছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দলের। সিলেটে গিয়েও বদলাচ্ছে না সেটি। এবার ফরচুন বরিশালের কাছে ৪৯ রানে হেরেছে তারা, ৫ ম্যাচে এ নিয়ে ৫টিই হারল সিলেট। এর মধ্যে ‘ঘরের মাঠে’ই হার তিনটি। অন্যদিকে টানা ৩ ম্যাচ হারের পর দ্বিতীয় জয়ের দেখা পেল তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল।

বরিশালের বোলারদের পারফরম্যান্স ছিল সমন্বিত, কিন্তু ব্যাটিংয়ে তাদের নায়ক দুজন—শুরুতে আহমেদ শেহজাদের পর শেষে মাহমুদউল্লাহ। শেহজাদের ৪১ বলে ৬৬ রানের পর মাহমুদউল্লাহর ২৪ বলে ৫১ রানের ইনিংসে বরিশাল তোলে ২০ ওভারে ১৮৬ রান। এর মধ্যে শেষ ৩ ওভারেই আসে ৫২ রান। জবাবে একসময় ১১০ রানে ৩ উইকেট থাকলেও সিলেট গুটিয়ে গেছে ১৩৭ রানেই, সেটিও ১৫ বল বাকি থাকতেই।

পাওয়ারপ্লের মধ্যে তামিম ইকবাল ও প্রীতম কুমারের উইকেট হারালেও টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বরিশালকে ৪৭ রান তুলতে সহায়তা করেন শেহজাদ। ক্রিজে তামিমের সময়টা স্বস্তির ছিল না মোটেও, ৮ বলে ২ রান করে নাঈম হাসানের বলে এলবিডব্লু হয়ে থামেন বরিশাল অধিনায়ক। শেহজাদকে অবশ্য দ্রুতই থামাতে পারেনি সিলেট। তৃতীয় উইকেটে সৌম্য সরকারকে নিয়ে ৩৫ বলে ৫০ রানের পর এই পাকিস্তানি মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে তোলেন ১৯ বলে ২৫ রান। শেষ পর্যন্ত বেনি হাওয়েলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে থামেন তিনি, তাঁর ইনিংসে ৯টি চারের সঙ্গে ছিল ২টি ছক্কা।

৫ ম্যাচ খেলে ৫টিই হারল সিলেট

শেহজাদ ফেরার পর বরিশালকে একটু আটকে রাখতে পেরেছিল সিলেট, এরপর মাহমুদউল্লাহর কবলে পড়ে তারা। মাহমুদউল্লাহ প্রথম ১২ বল খেলে করেছিলেন ১৫ রান, সেখান থেকেই ফিফটিতে যান মাত্র ২৩ বলে। ২৪ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ৭টি চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি। বরিশাল শেষ ৩ ওভারে ওঠা ৫২ রানের মধ্যে রিচার্ড এনগারাভার ১২ বলে আসে ৩৮ রান।

বরিশালের মতো সিলেটও প্রথম ৬ ওভারে হারায় ২ উইকেট, এর মধ্যে আছে নাজমুল হোসেনের উইকেটও। এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত নিজেকে খুঁজে ফেরা এই বাঁহাতি ৭ বলে করেন ৯ রান। পাওয়ারপ্লেতে আসে ৪৪ রান। চারে এসেছিলেন এ ম্যাচে বোলিং না করা সিলেট অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, ৩ বলে ২ রান করেই ফেরেন তিনি।

সিলেটকে অবশ্য আশা জোগায় চতুর্থ উইকেটে জাকির হাসান ও হাওয়েলের ৪২ বলে ৫৮ রানের জুটি। কিন্তু দুজন থামেন পরপর ২ বলে—মোহাম্মদ ইমরানের বলে ৩৪ বলে ৪৬ রান করা জাকির, মিরাজের বলে ১৯ বলে ২৪ রান করা হাওয়েল। ১৪ ও ১৫তম ওভারে ৭ রানের বিপরীতে নেই ২ উইকেট—সিলেটের সামনে এরপর ৩০ বলে ৭৪ রান তোলার কঠিন সমীকরণ। সেটি মেলাতে গিয়ে উল্টো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়েছে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল: ২০ ওভারে ১৮৬/৫ (তামিম ২, শেহজাদ ৬৬, প্রীতম ১, সৌম্য ২০, মুশফিক ২২, মাহমুদউল্লাহ ৫১*, মিরাজ ১৫*; আরিফুল ১-০-১১-০, নাঈম ৪-০-৩৬-১, প্যাটেল ৪-০-৩৬-০, এনগারাভা ৪-০-৪৯-১, রেজাউর ৩-০-৩১-০, হাওয়েল ৪-০-২১-৩)
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৭.৩ ওভারে ১৩৭ (নাজমুল ৯, শামসুর ২৫, জাকির ৪৬, মাশরাফি ২, হাওয়েল ২৪, বার্ল ১, আরিফুল ২, প্যাটেল ৮*, নাঈম ১, রেজাউর ১২, এনগারাভা ০; ইমরান ৩.৩-০-২৯-৪, জাভেদ ৩-০-২২-১, মিরাজ ৩-০-২১-২, ভেল্লালাগে ৩০-২৪-০, খালেদ ৪-০-২৯-২, সৌম্য ১-০-৮-০)
ফল: বরিশাল ৪৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ (ফরচুন বরিশাল)।