আবারও সাকিব আল হাসান, তীর–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কার ২০২১–এর বর্ষসেরা খেলোয়াড় হয়েছেন তিনি। সাকিব এ নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো জিতলেন পুরস্কারটা। এবার তো প্রথমবারের মতো পাঠকের ভোটেও হয়েছেন বর্ষসেরা। গতকাল বর্ষসেরা পুরস্কার অনুষ্ঠান শেষে বাংলাদেশ টেস্ট ও টি–টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক জানালেন তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া—
বর্ষসেরার পুরস্কার জেতার প্রতিক্রিয়া আগেও পাঁচবার দিয়েছেন। ষষ্ঠবারে কী বলবেন?
সাকিব আল হাসান: (হাসি) অবশ্যই খুব ভালো লাগছে। যেকোনো পুরস্কার জিতলেই ভালো লাগে। ষষ্ঠবারের মতো এই পুরস্কার পাওয়াটা আমার কাছে অনেক বড় অর্জন। পুরস্কার নিতে গিয়েই বলেছি, ২০১৯ সালে পুরস্কার দেওয়া হলে হয়তো সেটাও আমিই পেতাম। তখন এটা সপ্তম হতো। আমার কাছে আরও ভালো লাগত। যেকোনো অর্জনের স্বীকৃতি পেলে সেটা অবশ্যই ভালো লাগে। এ রকম ধারাবাহিকতা ধরে রাখাটাও অনেক চ্যালেঞ্জের ব্যাপার।
২০১৯ সালের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, পুরস্কার দিলে আপনিই পাবেন। ২০২১ সালের ব্যাপারে কেন দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল?
সাকিব: ভেবেছিলাম এবার অন্য কেউ পাবে। সত্যি বলতে কি আমি চিন্তাও করিনি যে এবার আমাকে দেওয়া হবে। অনুষ্ঠানে আমার পাশে বসা সুমন ভাইকে (হাবিবুল বাশার) পুরস্কার নিতে যাওয়ার পাঁচ মিনিট আগেও বলছিলাম, খেলাধুলার এ রকম অনুষ্ঠান যখনই হয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের আসা উচিত। কারণ, আমাদের নিয়েই আসলে অনুষ্ঠানটা। পুরস্কার পাই না পাই সেটা বড় কথা নয়।
ছয়বার তো হলো, ভবিষ্যতেও নিশ্চয়ই এই পুরস্কারে চোখ থাকবে আপনার…
সাকিব: যেহেতু আমি ভালো করতে পারছি, সেহেতু নতুন বছর আমার জন্য আরও একটা নতুন চ্যালেঞ্জ। নতুন বছরে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারব কি না, সেটাই হচ্ছে বড় ব্যাপার। মূল প্রেরণাটা আসলে ওই চিন্তাতেই…আমি যদি ছয়বার জিততে পারি, সাতবার কেন নয়? চেষ্টা থাকবে অবশ্যই। ইচ্ছা আছে যত দিন খেলতে থাকব, প্রতিবছরই যেন এই পুরস্কার পাই। কাজটা অবশ্য বেশ কঠিন। অন্যান্য খেলা আছে, আমাদের ক্রিকেটারদের মধ্যেও অনেক প্রতিযোগিতা। তবে যত প্রতিদ্বন্দ্বিতাই থাকুক, আমি এই পুরস্কারটা জিততে চাই এবং আমার চেষ্টাও থাকবে।
পাঠকের ভোটেও আপনি বর্ষসেরা, মানে প্রথম আলোর পাঠকেরা আপনাকে বেশি পছন্দ করেন। জনপ্রিয়তায়ও আপনি এগিয়ে। এটা কেমন লাগে?
সাকিব: ওই একটা জায়গায় আত্মবিশ্বাস আমার সব সময়ই থাকে (হাসি)। পারফর্ম করি আর না করি, তারপরও কেন জানি মনে হয় পাঠকের ভোটে বা দর্শক–সমর্থকদের ভোটে কিছু দেওয়া হলে সেটা আমি অবশ্যই পাব, এই পুরস্কার আমার জন্যই। আমি সবার কাছে খুবই কৃতজ্ঞ যে মানুষ আমাকে এত পছন্দ করে। তাদের থেকেই আমি আত্মবিশ্বাস পাই। প্রতিমুহূর্তেই তারা আমাকে উৎসাহ দেয়।
২০২৩ সালে বাংলাদেশ দলের অনেক খেলা, বিশ্বকাপও আছে। নতুন বছরে বর্ষসেরা হওয়ার মতো পারফর্ম করার ব্যাপারে কতটা আত্মবিশ্বাসী?
সাকিব: তার আগে বলে নিই, ২০২২ সালের পারফরম্যান্সের জন্য যে পুরস্কারটা দেওয়া হবে, মনে হয় না সে তালিকায় আমার থাকা হবে। তবে মঞ্চে না থাকলেও দেশে থাকলে অন্তত দর্শকের সারিতে থাকব ইনশা আল্লাহ। হ্যাঁ, ২০২৩ সালে অবশ্যই খুব ভালো খেলার চেষ্টা করব যেন শিরোপা পুনরুদ্ধার করতে পারি (হাসি)। ২০২৩ আমাদের ক্রিকেটের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ বছর। চেষ্টা থাকবে ভালো কিছু যেন করতে পারি। সেটা যেমন আমার পুরস্কার জেতার জন্য ভালো হবে ঠিক আছে, তবে ভালো খেলতে চেষ্টা করার মূল উদ্দেশ্য থাকবে আমি যেন দলের জন্য অবদান রাখতে পারি। আমি যত বেশি অবদান রাখতে পারব, স্বাভাবিকভাবে দলেরও তত বেশি ভালো করার সুযোগ থাকবে। সঙ্গে অন্যদেরও ভালো খেলতে হবে। তবে আমি যদি ভালো খেলি, তাতে দলের জন্য বেশি ভালো হবে।
আপাতত আপনার জীবনের সর্বশেষ পুরস্কার তো তীর–প্রথম আলো বর্ষসেরা পুরস্কার–২০২১। জীবনে প্রথম যে পুরস্কারটা পেয়েছিলেন, তার অনুভূতির সঙ্গে সর্বশেষ এই পুরস্কারের অনুভূতির কোনো পার্থক্য আছে?
সাকিব: প্রতিটি পুরস্কার জয়ের অনুভূতি একই রকম। প্রতিটাতেই আনন্দ লাগে। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন মঞ্চে আমি ঘেমে গিয়েছিলাম (হাসি)। এসি রুমে এমনিতে তো ঘামার কথা নয়। বুঝতেই পারছেন…নার্ভাসও লাগে, মজাও লাগে।