লিটন দাস ও তাওহিদ হৃদয় আছেনই। এসএ২০ শেষে এ দুজনের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন উইল জ্যাকস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে এসেছেন জনসন চার্লস। তাঁদের কেউ ব্যর্থ হলে হাল ধরার জন্য আছেন মঈন আলী। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং স্বর্গে এমন ব্যাটিং লাইনআপকে দমিয়ে রাখতে যে রান দরকার, তা করতে পারেনি খুলনা টাইগার্স।
আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়ে ২০ ওভার শেষে তারা তোলে ৮ উইকেটে ১৬৪। রান তাড়ায় কুমিল্লার টপ অর্ডারের বাকিরা ব্যর্থ হলেও হৃদয় ছিলেন শেষ পর্যন্ত। এক ম্যাচ আগেই ১০৮ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলা হৃদয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৭ বলে অপরাজিত ৯১ রানের ইনিংস। ৪০ রান করে তাঁকে সঙ্গ দিয়েছেন জাকের আলী। দুজনের যুগলবন্দীতে ১৬.৩ ওভারে ৭ উইকেট হাতে রেখেই খুলনার রান টপকে যায় কুমিল্লা।
ম্যাচটা জমিয়ে তুলতে খুলনার পাওয়ার প্লেতেই বিশেষ কিছু করতে হতো। বিপিএলে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামা ওয়েইন পারলেন ও মুকিদুল ইসলাম তা করেছেন লিটন ও জ্যাকসকে আউট করে। কিন্তু ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই হৃদয় ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত রান তোলায় পুষিয়ে গেছে সে ক্ষতি। প্রথম ৬ ওভারেই কুমিল্লার রান ৬০। রান তাড়ার যা চাপ ছিল, তা থেকে যেন পাওয়ারপ্লেতেই মুক্তি কুমিল্লার। এরপর চার্লস ১৩ রান করে আউট হলেও জাকের আলীর সঙ্গে হৃদয়ের ৫৪ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৪ রানের জুটিতে আনুষ্ঠানিকতা সেরেছে চারবারের চ্যাম্পিয়নরা। হৃদয়ের ১৯৩ স্ট্রাইক রেটের অপরাজিত ইনিংসে ছিল ৭টি করে চার ও ছক্কা। জাকের ৪০ রান করেছেন ৩১ বলে।
কুমিল্লার স্থানীয় ব্যাটসম্যানরা যা করছেন, খুলনার কেউ তেমন কিছু করতে পারেননি। এনামুল হক-আফিফ হোসেনরা বিপিএলের শুরুটা ভালো করলেও মাঝপথে এসে খেই হারিয়েছেন। খুলনার বিদেশি ক্রিকেটারদের বহর এখনো এসে পৌঁছায়নি। ব্যাটিং অর্ডারে যে দুজন আছেন, সেই অ্যালেক্স হেলস ও এভিন লুইস মূলত ওপেনার। কিন্তু খুলনা আজ দুজনকে খেলিয়েছে দুই ভূমিকায়। পিএসএল খেলতে আগামীকাল সকালে বিমান ধরার আগে হেলস (২২) এসেছিলেন ইনিংস উদ্বোধনে। কিন্তু মাঝের ওভার থেকে শুরু করে ডেথ ওভারে পেসারদের বিপক্ষে মারকুটে ব্যাটিংয়ের জন্য চারে নামানো হয় লুইসকে (৩৬)। তাঁদের আগে-পরে খেলেন এনামুল (১৮) ও আফিফ (২৯)।
এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা যে ঠিক কাজে লাগেনি, তা স্কোরকার্ড দেখেই বোঝা যায়। টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানের কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ২০-৩০-এর ঘরে এসে আউট হয়েছেন দুজনই। সে ধারা বজায় রেখেছেন পাঁচ ও ছয়ে নামা মাহমুদুল হাসান (২৮) ও ওয়েইন পারনেলও (২০)। ব্যাটসম্যানদের মাঝারি মানের ব্যাটিংয়ে খুলনার রানও হয়েছে মাঝারি আকারের। গতকাল জাতীয় দলে ডাক পাওয়া কুমিল্লার স্পিনার আলিস আল ইসলাম ৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন। ২টি করে উইকেট নেন মঈন আলী ও ম্যাথু ফোর্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৬৪/৮ (হেলস ২২, আফিফ ২৯, এনামুল ১৮, লুইস ৩৬, মাহমুদুল ২৮, পারনেল ২০, উড ০, নাসুম ২, রুবেল ০*, মুকিদুল ৪*; মঈন ৪–০–৪৬–২, ফোর্ড ৪–০–৩৬–২, তানভীর ২–০–১৪–০, আলিস ৪–০–২৩–১, মোস্তাফিজ ৪–০–২৮–১, রিশাদ ২–০–১৬–০)।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস: ১৬.৩ ওভারে ১৬৮/৩ (লিটন ২, জ্যাকস ১৮, তাওহিদ ৯১*, চার্লস ১৩, জাকের ৪০*; উড ৩.৩–০–২৫–০, পারনেল ৪–০–৩৪–১, নাসুম ৩–০–৩২–০, মুকিদুল ২–০–২৮–১, রানা ৩–০–৩৪–১, রুবেল ১–০–১৫–০)।
ফল: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: তাওহিদ হৃদয়।