ভারতের সাবেক ব্যাটসম্যান, কোচ ও নির্বাচক অংশুমান গায়কোয়াড় ৭১ বছর বয়সে মারা গেছেন। দীর্ঘদিন ব্লাড ক্যানসারে ভুগছিলেন ভারতের হয়ে ৪০ টেস্ট ও ১৫ ওয়ানডে খেলা গায়কোয়াড়। গত জুন পর্যন্ত লন্ডনে চিকিৎসা নেওয়ার পর দেশে ফিরেছিলেন। এরপর আবারও শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দেওয়ায় বরোদার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়। সেখানেই গতকাল মারা যান।
১৯৭৫ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ভারত জাতীয় দলে খেলেন গায়কোয়াড়। এরপর জাতীয় দলের নির্বাচক এবং পরে কোচের দায়িত্বও নিয়েছিলেন। ৭০ টেস্ট ইনিংসে ১৯৮৫ রান করেছেন তিনি।
জলন্ধরে ১৯৮৩ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে খেলেছিলেন ২০১ রানের ইনিংস। টেস্টে এটি তাঁর সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এবং প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মন্থরতম ডাবল সেঞ্চুরিও। ৪৩৬ বলের এই ইনিংসটি খেলার পথে মোট ৬৭১ মিনিট ব্যাট করেছিলেন গায়কোয়াড়। পেসারদের বিপক্ষে রক্ষণাত্মক মানসিকতার জন্য কেউ কেউ তাঁকে ‘দ্য গ্রেট ওয়াল’ নামেও ডেকেছেন।
১৯৭৬ সালে জ্যামাইকায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর অপরাজিত ৮১ রানের ইনিংসও অনেকের কাছে স্মরণীয়। মাইকেল হোল্ডিং, ওয়েন ড্যানিয়েল, রয় ফ্রেডরিকসের মতো পেসারদের বিপক্ষে হেলমেট ছাড়াই ইনিংসটি খেলেছিলেন। তখন বাউন্সার দেওয়ারও সীমারেখা ছিল না। তবে হোল্ডিংয়ের বাউন্সেরই তাঁকে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। বাউন্সারে তাঁর কানের পর্দা ফেটে গিয়েছিল। যেতে হয় অস্ত্রোপচারের টেবিলে। ক্যারিয়ারের শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচে সেঞ্চুরিও আছে গায়কোয়াড়ের।
১৯৯৭ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে গায়কোয়াড় দুই মেয়াদে ভারতের কোচের পদ সামলেছেন। তাঁর কোচিংয়ে ২০০০ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল খেলেছে ভারত। চলতি মাসের শুরুর গায়কোয়াড়ের চিকিৎসার জন্য ১ কোটি রুপি দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। তাঁর বাবা দত্ত গায়কোয়াড়ও ভারতের হয়ে টেস্ট খেলেছেন।