প্যাট কামিন্সের সেই কথাগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নতুন করে ভাইরাল। কোন কথা, মনে আছে নিশ্চয়!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে টেলিভিশন চ্যানেল সিএনবিসি টিভি১৮-কে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন কামিন্স। সাক্ষাৎকারে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, বিশ্বকাপে কোন চার দল সেমিফাইনালে খেলবে?
কামিন্স অস্ট্রেলিয়ান হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই অস্ট্রেলিয়াকে রেখেছিলেন। কিন্তু বাকি তিন দলের নাম বলতে বললে এই তারকা পেসার কিছুটা দাম্ভিকতার সুরে বলেন, ‘বাকি তিন দলের পরোয়া করি না। আপনার যাকে খুশি, তাকে রাখতে পারেন।’
সেন্ট ভিনসেন্টে গত পরশু সুপার এইটের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে আফগানিস্তান। কামিন্সের অস্ট্রেলিয়া ছিটকে পড়েছে সেমিফাইনালের আগেই।
এর পর থেকেই সেই সাক্ষাৎকার ফেসবুক-এক্স-ইনস্টাগ্রামে রিপোস্ট দিয়ে চলছে রসিকতা, যেখানে শামিল নজিবউল্লাহ জাদরানও। আফগানিস্তানের এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান তো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) আর কামিন্সকে মেনশন করে ট্রলও করেছেন। সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া দলকে বাড়ির পথ দেখিয়ে দিয়েছেন কয়েকটি বিমানের ইমোজি দিয়ে।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী তাহলে এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল!
এমনিতেও বিশ্বকাপের চার সেমিফাইনালিস্ট বেছে নেওয়া খুব একটা সহজ কাজ নয়। কারও কারও ভবিষ্যদ্বাণী মেলে, বেশির ভাগই মেলে না। এই ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে যেহেতু নিয়তিরও একটা যোগসূত্র আছে, তাই ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়া জরুরি।
এবার যেমন আফগানদের দিকে ক্রিকেট–বিধাতা মুখ তুলে তাকিয়েছেন। তাই সাবেক কোনো ক্রিকেটাররেই ভবিষ্যদ্বাণী মেলেনি। এক ব্রায়ান লারা ছাড়া রশিদ-নবী-গুরবাজদের কজনই–বা শেষ চারে রেখেছিলেন? কিংবদন্তি লারারও সব পূর্বানুমান শেষ পর্যন্ত মেলেনি। ভারত-ইংল্যান্ডকে নিয়ে লারা টিক চিহ্ন পেলেও নিজ জাতীয় দল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে রেখে ভুল করেছেন।
লারা থেকে সুনীল গাভাস্কার; ম্যাথু হেইডেন থেকে ডেল স্টেইন কিংবা পল কলিংউড থেকে অ্যারন ফিঞ্চ—সবাই শেষ চারে ভারতকে রেখেছিলেন। ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে একটু এদিক-সেদিক হয়েছে। কেউ কেউ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দলকেই রেখেছিলেন, আবার কেউ শুধু ইংল্যান্ড অথবা শুধু অস্ট্রেলিয়াকে রেখেছিলেন।
ও হ্যাঁ, বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেনও কিন্তু ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার আগে প্রথম আলোকে দেওয়া দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে নাজমুল জানিয়েছিলেন, ভারত, ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ড সেমিফাইনালে খেলবেন। আরেকটি জায়গা তিনি ফাঁকা রেখেছিলেন। শূন্যস্থানটা বাংলাদেশ ভরবে, নিশ্চয় সে কামনাই করেছিলেন। সেটা হয়নি। জায়গাটা নিয়ে নিয়েছে আফগানিস্তান আর নিউজিল্যান্ডের জায়গায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
আজ আফগানিস্তান-দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম সেমিফাইনালে কোন দল জিতবে, এমন কোনো ভবিষ্যদ্বাণী এখনো পাওয়া যায়নি। তবে রাতে ভারত-ইংল্যান্ডের আরেক সেমিফাইনাল নিয়ে পল কলিংউডের পূর্বানুমান ভারতীয় সমর্থকদের মনে আনন্দের সুবাতাস বয়ে আনতে পারে। ইংল্যান্ডকে ২০১০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক কলিংউড বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না ভারত ইংল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে হারবে।’
রমিজ রাজা অবশ্য এক ধাপ এগিয়ে চ্যাম্পিয়ন দলের নামই বলে ফেলেছেন। পাকিস্তানের সাবেক এই অধিনায়কের মনে হচ্ছে, ‘চোকার’ অপবাদ ঘুচিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা এবারই বিশ্বকাপ ঘরে তুলবে!