লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে অষ্টমবার ৫ উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি
লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে অষ্টমবার ৫ উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ

মাঠে ফিরেই মাশরাফির ৫ উইকেট, রূপগঞ্জের সহজ জয়

জাতীয় সংসদে হুইপের দায়িত্ব নিতে গত জানুয়ারিতে বিপিএলের মাঝপথে বিরতি নেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কদিন পর তাঁর ফ্র্যাঞ্চাইজি সিলেট স্ট্রাইকার্সের কোচ রাজিন সালেহ জানান, এ বছর আর বিপিএলে মাশরাফি ফিরবেন না।

বিপিএলে সিলেটের হয়ে প্রথম পাঁচ ম্যাচ খেলে বিরতিতে যাওয়া মাশরাফি অবশেষে আজ মাঠে ফিরলেন। তাঁর এই ফেরাটাকে ‘রাজসিক প্রত্যাবর্তন’ই বলতে হয়। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমেই ৫ উইকেট নিয়েছেন তিনি। তাঁর দারুণ বোলিংয়ের সুবাদে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে অনায়াসে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।

সাভারে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে গাজী গ্রুপের দেওয়া ১৩৭ রানের লক্ষ্য ৬ উইকেট আর ২২ ওভার হাতে রেখে ছুঁয়ে ফেলেছে রূপগঞ্জ। টুর্নামেন্টের এটি মাশরাফির দলের টানা চতুর্থ জয়। আগের তিন ম্যাচে দলটি মাশরাফিকে ছাড়াই হারিয়েছিল ব্রাদার্স ইউনিয়ন, সিটি ক্লাব ও রূপগঞ্জ টাইগার্সকে।

৪০ বছর বয়সী মাশরাফি ধীরগতিতে কয়েক কদম দৌড়ে বল ছুড়েছেন। নিখুঁত লাইন-লেংথের পাশাপাশি আউট সুইংও করিয়েছেন আগের মতোই। তাতেই হয়েছেন সফল। প্রথম পাওয়ার প্লের শেষেই বোলিংয়ে আসা মাশরাফি নিজের পঞ্চম বলে প্রিতম কুমারকে ফিরিয়ে উইকেট শিকার শুরু করেন, শেষ করেন মাহফুজুর রাব্বিকে ফিরিয়ে। মাঝে নিয়েছেন সাব্বির হোসেন, ফয়সাল আহমেদ ও মঈন খানের উইকেট।

বিপিএলের মাঝপথে বিরতিতে গিয়েছিলেন মাশরাফি

৮ ওভার বল করে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক এ নিয়ে অষ্টমবার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৫ উইকেট পেলেন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে তাঁর চেয়ে বেশি ৫ উইকেট আছে শুধু আবদুর রাজ্জাকের। বাংলাদেশ জাতীয় দলের বর্তমান নির্বাচক রাজ্জাক ৫ উইকেট পেয়েছেন ৯ বার।

মাশরাফি বোলিংয়ে আসার আগে গাজী গ্রুপ দারুণ খেলছিল। দলটি ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে তুলেছিল ৫৭ রান। ওপেনার আনিসুল ইসলাম শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাট করছিলেন, তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন তিনে নামা প্রিতম। এ জুটি ভাঙতে সবচেয়ে অভিজ্ঞ মাশরাফির হাতেই বল তুলে দেন লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ অধিনায়ক শুভাগত হোম।

নিজের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলটিতে ফিরতি ক্যাচ নিয়ে প্রিতমকে আউট করে আস্থার প্রতিদান দেন মাশরাফি। এরপর নিহাদুজ্জামান দলীয় সর্বোচ্চ ৪১ রান করা আনিসুলকে ফেরালে খেই হারিয়ে ফেলে গাজী গ্রুপ। নিজের চতুর্থ ওভারে মাশরাফি নেন ২ উইকেট। হালকা বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সাব্বির হোসেন। এক বল পরে আউট হন ফয়সাল আহমেদ। মাশরাফির পরের ওভারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হন মঈন খান। এরপর মাহফুজুর রাব্বিকে আউট করে পূরণ করেন ৫ উইকেট।

মাশরাফির সঙ্গে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের তরুণ ব্যাটসম্যান চৌধুরী রিজওয়ান। মাশরাফির ৫ উইকেটের দিনে ৪৭ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েছেন রিজওয়ান

মাশরাফির তোপেই একপর্যায়ে ২ উইকেটে ৮২ রান তুলে ফেলা গাজী গ্রুপ ১০৫ রানে ৭ উইকেটের দলে পরিণত হয়। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব হয়নি। আর ৩১ রান যোগ করতেই বাকি ৩ উইকেটও হারায় গাজী গ্রুপ।

১৩৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে ভালো শুরু এনে দেন ইমরানুজ্জামান ও তাওফিক খান। দুজনের জুটি থেকে আসে ৪৪ রান। এরপর শেখ পারভেজ জীবনের দারুণ বোলিংয়ে ৭৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে রূপগঞ্জ। তবে এখান থেকে আর ক্ষতি হতে দেননি চৌধুরী রিজওয়ান ও শামীম হোসেন। পঞ্চম উইকেটে দুজনের ৫৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রূপগঞ্জ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৩৫.৪ ওভারে ১৩৬

(আনিসুল ৪১, মারুফ ১৮, আল আমিন জুনিয়র ১৭; মাশরাফি ৫/১৯, হালিম ২/২৪, শুভাগত ১/১৪)

লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ২৮ ওভারে ১৩৭/৪

(রিজওয়ান ৪৭*, তাওফিক ৩৬, শামীম ২৬*; জীবন ৩/১৭, রুয়েল ১/৩৭)

ফল: লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ৬ উইকেটে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাশরাফি বিন মুর্তজা।