বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি সাকিব আল হাসানের নিবেদন নিয়ে কখনোই প্রশ্ন তোলেননি, এমন দাবি করেছেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। এমন কথা তাঁর কাছে একেবারেই নতুন বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশের নতুন প্রধান কোচ।
২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথেই নিজের পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলেন হাথুরুসিংহে। এরপর বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, সে সফরে টেস্ট সিরিজ থেকে ছুটি নেওয়া সাকিবের নিবেদন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন হাথুরুসিংহে। দলের ক্রিকেটারদের মানসিকতা নিয়েও প্রশ্ন ছিল তাঁর।
দ্বিতীয় দফা দায়িত্ব নেওয়ার পর আজ প্রথমবারের মতো সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন হাথুরুসিংহে। যে সাকিবের নিবেদন নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, সেই সাকিবই এখন টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক। এবার তাঁকে কীভাবে সামলাবেন, এমন প্রশ্ন শুনে বিস্মিতই হলেন হাথুরুসিংহে। সাকিবের নিবেদন নিয়ে তিনি নাকি কখনোই প্রশ্ন তোলেননি, ‘এটা তো আমার কাছে একেবারেই নতুন (খবর)। আমি তো এমন কিছু বলিনি।’
এখন জাতীয় দলে যাঁরা মোটামুটি সিনিয়র, তাঁদের সঙ্গে হাথুরুসিংহের সম্পর্ক কেমন হবে—সেটি নিয়ে বরাবরই আলোচনা আছে। আগেরবারও তাঁদের সঙ্গে কোনো সমস্যা ছিল না, এবারও হবে না, এমনটাই বলছেন হাথুরুসিংহে, ‘একদমই সমস্যা নেই। আমি সবার সঙ্গেই কথা বলেছি। সবার নজর এখন দলের ভালোর দিকে। প্রথমবারও কোনো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হইনি। আমার চ্যালেঞ্জ ছিল দলের ভালোর দিকে সবার নজর রাখা।’
তাঁদের নিয়ে নিজেদের প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন এই শ্রীলঙ্কান, ‘ওরা ১৫-১২-১০ বছর ধরে ভালো করছে। আশা করি সেটাই করে যাবে। যত দিন খেলবে, দলে থাকবে। আমার মনে হয় না তাদের ভূমিকা বদলেছে। তারা বিশ্বমানের খেলোয়াড়। আমার মনে হয় তারা নিজেদের ভূমিকাটা জানে।’
হাথুরুসিংহে মানেই ‘কড়া হেডমাস্টার’ ধরনের এক কোচ, প্রচলিত আছে সেটিও। বাংলাদেশের দায়িত্ব ছাড়ার পর শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নিয়েছিলেন, সেটির শেষটাও সুখকর ছিল না। এবার কি পুরোনো হাথুরুসিংহে ফিরছেন নাকি নতুন, আগের হাথুরুসিংহের সঙ্গে এখনকার হাথুরুসিংহের পার্থক্য কী—এমন প্রশ্ন শুরুতে একটু এড়িয়ে যেতে চাইলেও পরে হাসতে হাসতে বললেন, ‘একটু বয়স বেড়েছে হয়তো!’
এর আগে হাথুরুসিংহেকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্ট একাধিকজন বলেছিলেন, এবার হাথুরুসিংহে আরও পরিণত হয়ে ফিরছেন বলেই আশা তাঁদের। এ কোচের কথাতেও মিলল সে ইঙ্গিত, ‘যখন এই চাকরি নেওয়ার ব্যাপারে ভেবেছি, বড় পরিসরে ভেবে এসেছি। শেষবার যখন বাংলাদেশে এসেছিলাম, অনেকের সঙ্গে নিজেকেও দেখাতে হতো—আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারব। জানতাম না কোথায় এসে পড়েছি। এবার জানি—বাংলাদেশের ক্রিকেট কীভাবে কাজ করে, এখন আমি নিজের ব্যাপারেও জানি অনেক। এখন অনেক বেশি অভিজ্ঞও। আমি অনেক সম্ভাবনা দেখেছি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য দেশের কোচদের উন্নতির ব্যাপারেও। সেটা করতেও সহায়তা করবে। ডেভিড মুর এসেছে, সে আমাকে সাহায্য করবে। পরের প্রজন্মকে সামনে আনতে বোর্ডের সঙ্গে কাজ করব। আমার মূল লক্ষ্য অবশ্যই বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতানো। কিন্তু একই সঙ্গে কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই, কিছু রেখে যেতে চাই।’