৪ ম্যাচে একসঙ্গে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নেমে লিটন-রিজওয়ান জুটির সর্বোচ্চ রান মাত্র ২৬
৪ ম্যাচে একসঙ্গে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নেমে লিটন-রিজওয়ান জুটির সর্বোচ্চ রান মাত্র ২৬

লিটন ও নিজের ফর্ম নিয়ে রিজওয়ান, ‘আমরা মানুষ, মেশিন নই’

দল জিতছে ঠিকই, কিন্তু এখনো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের টপ অর্ডার জ্বলে ওঠেনি। এবারের বিপিএলে কুমিল্লার দুই ওপেনার লিটন দাস ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের একজনও এখনো অর্ধশতকের দেখা পাননি। দুজনের যুগলবন্দীও ফলপ্রসূ হচ্ছে না। ৪ ম্যাচে একসঙ্গে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নেমে লিটন-রিজওয়ান জুটির সর্বোচ্চ রান মাত্র ২৬। তবু কুমিল্লা ৫ ম্যাচ খেলে ৩টি জিতেছে, পয়েন্ট তালিকায় তাদের অবস্থান ৪-এ। পাকিস্তান তারকা রিজওয়ানের কাছে নিজেদের ফর্মের চেয়ে দলের সাফল্যটাই মুখ্য।

আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে কুমিল্লার অনুশীলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের রিজওয়ান সে কথাই বললেন। তাঁর যুক্তি, ‘আমরা পয়েন্ট টেবিলে ভালো জায়গায় আছি। চার ম্যাচ খেলেছি। আমরা যে ম্যাচগুলো হেরেছি, সেগুলো বড় ব্যবধানে হারিনি। ছোট ছোট ভুল করেছি। প্রথম ম্যাচ আর সর্বশেষ ম্যাচ দেখুন, যে সব ভুল করেছি আশা করি, সেগুলো থেকে কুমিল্লার ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াবে।’

কুমিল্লার ৫ ম্যাচের ৪টিতে খেলেছেন রিজওয়ান। এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচে তাঁর রান ৬৪, গড় ২১.৩৩, স্ট্রাইক রেট ৮৫.৩৩। নিজের এমন মলিন পারফরম্যান্সের প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে রিজওয়ান বলেছেন, ‘আমি একজন মানুষ! কোনো মেশিন নই। দলের জন্য নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করছি। তবে আমি দলের ফলাফলে খুশি। আমি ও দলের সবাই এটিই চাই। এটি ভালো। আমার পারফরম্যান্সের কথা বললে, আমি যেমন চাই, তেমন হয়নি। আমার কাছে মানুষের প্রত্যাশাও এমন নয়। তবে আমি মেশিন নই। কঠোর পরিশ্রম করছি, নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করছি।’

এবারের বিপিএলে ব্যাট হাতে জ্বলতে পারছেন না লিটন

কুমিল্লার আরেক ওপেনার লিটন ৫ ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ৩৭ রান, ৭.৪০ তাঁর গড়। স্ট্রাইক রেটও (৭৫.৪১) দৃষ্টিকটু। সতীর্থের ব্যাপারেও রিজওয়ান একই ব্যাখ্যা দিলেন, ‘(লিটনের ব্যাপারে প্রশ্নের আগে) আমার পারফরম্যান্সের ব্যাপারেও একজন জিজ্ঞাসা করল। এটি কুমিল্লার জন্য একটি প্রশ্ন যে আমরা দুজন পারফর্ম করছি না। তবে যেটা বললাম, আমরা মেশিন নই। আমরা মানুষ।’

তবে লিটনের রানে ফেরার চেষ্টায় কোনো কমতি দেখছেন না রিজওয়ান, ‘লিটনকে আমি দেখেছি, অনেক পরিশ্রম করছে। তবু আপনার সেই মোমেন্টামটা পেতে হবে। ক্রিকেটার হিসেবে আমি লিটন দাসকে একজন সাউন্ড প্লেয়ার হিসেবে দেখি। আপনি যদি তার আউটগুলো দেখেন, কিছু কিছু জায়গায় দুর্ভাগা ছিল। তবে আমি যা দেখছি, সে সব সময় পরিশ্রম করছে। আশা করি, সে পরের ম্যাচে পারফর্ম করবে।’

রিজওয়ানের মতো ক্রিকেটাররা সংবাদ সম্মেলনে এলে প্রশ্নগুলো খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটাই স্বাভাবিক। দ্বিতীয়বারের মতো বিপিএল খেলতে আসা এই পাকিস্তানি ক্রিকেটারের কাছে তাই অন্য টুর্নামেন্টের সঙ্গে বিপিএলের তুলনা করতে বলা হয়। বিপিএলের কোথায় উন্নতি দরকার, সে প্রসঙ্গও এসেছে।

রিজওয়ানও উত্তরে বলেছেন, ‘সত্যি বললে, অন্যান্য লিগের সঙ্গে তুলনায় আসতে হলে বিপিএলকে আরও কয়েক ধাপ এগোতে হবে। বিশ্বের সব প্রান্তে ভিন্ন কন্ডিশন। বিপিএলের কথা জিজ্ঞাসা করলে, এখানে এশিয়ান কন্ডিশন। এখানে ভিন্ন কন্ডিশনের মোকাবিলা করতে হবে। আইএল টি–২০, বিগ ব্যাশ অথবা দক্ষিণ আফ্রিকায়ও ভিন্ন কন্ডিশন। তারা যদি বিশ্বকাপ অথবা এশিয়া কাপে আসে, ভিন্ন কন্ডিশনের সামনে পড়বে। বিপিএলের কন্ডিশন এমন কিছুই হবে। কারণ, এটি বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ায় গেলে বাউন্সের সামনে খেলতে হবে। প্রতিবছর আল্লাহ প্রকৃতিতেও ভিন্ন কিছু তৈরি করে। তবে বিপিএলের উন্নতির জন্য আরও কয়েক ধাপ এগোতে হবে।’

সে জন্য কী করণীয়, তা অবশ্য বলতে চাননি রিজওয়ান, ‘দেখুন আমি (বিপিএল) কমিটিতে নেই। বিপিএল কয়েক ধাপ এগোবে। কারণ, তারা জানে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কোনো ছোট বোর্ড নয়। তারা জানে। বাংলাদেশের বড় বড় ক্রিকেটার আছে। অনেক বড় বড় দলের বিপক্ষে সিরিজ তারা জিতেছে। তারা জানে, কোথায় উন্নতি করতে পারে।’