টি-টোয়েন্টিতেও তো ঘরের মাঠে ‘অজেয়’ ভারত

বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে ২০১৯ সালের ৩ নভেম্বর তারিখটার গুরুত্ব কম নয়। ওই দিনই যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভারতের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ভারতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে দিল্লি জয় করেছিল মাহমুদউল্লাহর দল।

দিল্লি জয় করলেও সিরিজটা ‘দূর অস্তই’ ছিল বাংলাদেশের জন্য। শেষ দুই ম্যাচে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজ জিতে নেয় ভারত। পাঁচ বছর পর সেই ভারতে আবারও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নামছে বাংলাদেশ। গোয়ালিয়রে রোববার তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম ম্যাচ।

বাংলাদেশ যদি এবার সিরিজটা জিততে পারে, তাহলে বড় ঘটনাই হবে। টেস্টের মতো টি-টোয়েন্টিতেও যে ভারতের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জয় ক্রিকেটের সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি। বাংলাদেশকে ধবলধোলাই করে ঘরের মাঠে টানা ১৮তম টেস্ট সিরিজে নিজেদের রেকর্ডটাকে আরেক ধাপ উঁচুতে তুলেছে ভারত।

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতেও ঘরের মাঠে ‘অজেয়’ ভারতীয়রা। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে সিরিজ হারের পর দেশের মাটিতে টানা ১৫টি টি-টোয়েন্টি সিরিজে অপরাজিত ভারত। এই ১৫ সিরিজের ১৩টিই জিতেছে ভারত, ড্র হয়েছে অন্য দুটি সিরিজ।

২০১৯ সালে বাংলাদেশ সিরিজের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ২ ম্যাচের সিরিজ ড্র করেছিল ভারত। এরপর বাংলাদেশ সিরিজসহ টানা সাতটি সিরিজ জেতা দলটি ২০২২ সালে দেশের মাটিতে সিরিজ জিততে ব্যর্থ হয়। এবারও ভারতকে সিরিজ জিততে না দেওয়া দলটির নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। পাঁচ ম্যাচের ওই সিরিজটি ড্র হয়েছিল ২-২ ম্যাচে। এরপর দেশের মাটিতে ভারত সিরিজ জিতেছে টানা ছয়টি।

টেস্ট খেলুড়ে দলগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান ঘরের মাঠে এখনো কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক ম্যাচই খেলেনি। অন্য সব কটি দলেরই সর্বশেষ দুই বছরে ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের অভিজ্ঞতা আছে। এদের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কথা আলাদা করে বলতেই হয়। ২০২২ সালে দেশের মাটিতে সর্বশেষ সিরিজ হারের পর খেলা টানা চারটি সিরিজই জিতেছে এই সংস্করণের দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।

ঘরের মাঠে ভারত একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে ২৬ বার। ১৮ বার সিরিজ জেতা দলটি হেরেছে দুবার। ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে (০-২) ও ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে (০-২)।

অন্যদিকে বাংলাদেশ দেশের বাইরে একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলেছে ১৭টি। এই ১৭ সিরিজে বাংলাদেশ জিতেছে চারটিতে—২০১২ সালে আয়ারল্যান্ড, ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ে ও ২০২২ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশের বাইরে বাংলাদেশ ড্র করেছে চারটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ। হেরেছে অন্য নয়টিতে। সর্বশেষ হারটি তো বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি সামর্থ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছিল। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ছিল সেই হার।

বাংলাদেশের জন্য আশার কথা, ঘরের মাঠে টানা পাঁচ বছর টি-টোয়েন্টি সিরিজ না হারলেও ভারতকে অবশ্য একদম অজেয় বলা যায় না। সিরিজ না হারলেও ঘরের মাঠে সর্বশেষ ১৫ সিরিজের ১০টিতেই অন্তত একটি ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়েছে দলটি। ২০১৯ সালের দিল্লি কি ২০২৪ সালে ফেরাতে পারবে বাংলাদেশ?