বড় জয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সুপার সিক্সে শ্রীলঙ্কা
বড় জয়ে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের সুপার সিক্সে শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কার বড় জয়, বিশ্বকাপ-স্বপ্ন শেষ আয়ারল্যান্ডের

বিশ্বকাপে যাওয়ার দৌড়ে টিকে থাকতে হলে আয়ারল্যান্ডের জিততেই হতো। সেটাও এবারের বাছাইপর্বে দারুণ ফর্মে থাকা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আইরিশদের এমন বাঁচা–মড়ার ম্যাচেই শ্রীলঙ্কা আগে ব্যাট করে ৩২৫ রানের পাহাড় গড়ে। বুলাওয়ের কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব মাঠে সে রান তাড়া করতে নেমে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস থামে ১৯২ রানেই। ১৩৩ রানের বিশাল জয়ে সুপার সিক্সে জায়গা করে নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। অন্যদিকে স্কটল্যান্ড, ওমানের পর শ্রীলঙ্কার কাছেও হেরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হচ্ছে আয়ারল্যান্ডের। ফলে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলা হচ্ছে না তাদের। তবে শ্রীলঙ্কার জয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে ওমান ও স্কটল্যান্ডও পেয়েছে সুপার সিক্সের টিকিট।

রান তাড়ার শুরু থেকেই চাপে ছিল আইরিশরা। দুই লঙ্কান পেসার লাহিরু কুমারা ও কাসুন রাজিতার বোলিংয়ে ৬.২ ওভারের মধ্যে পল স্টার্লিং ও তাঁর সঙ্গে ওপেনিংয়ে আসা অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনকে হারায় আয়ারল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডের পরের উইকেটগুলো ভাগ করে নেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দাশুন শানাকা ও মহীশ তিকসানা। হাসারাঙ্গা ১০ ওভারে ৭৯ রান দিলেও ৫ উইকেট নিয়েছেন। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচে ৫ উইকেট নিলেন এই লেগ স্পিনার। লঙ্কান বোলারদের দাপটের দিনে আয়ারল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন কার্টিস ক্যাম্ফার। স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট হয়নি তা।

টানা ৩ ম্যাচে ৫ উইকেট নিলেন হাসারাঙ্গা

শ্রীলঙ্কার ব্যাটিংয়ের গল্পটা অবশ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। দলটির ওপেনার দিমুথ করুনারত্নে নামের পাশে ১৬টি টেস্ট সেঞ্চুরি। কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেটে একটি সেঞ্চুরিও ছিল না। আজ সে অভাবটা পূরণ করলেন। ১০৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে লঙ্কানদের বড় রানের ভিত গড়ে দিয়েছেন করুনারত্নেই। চারে নামা সাদিরা সামারাবিক্রমার সঙ্গে করুনারত্নে ১৬৮ রানের জুটি গড়েন। সামারাবিক্রমার ব্যাট থেকে আসে ৮২ রান। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটি তাঁরও ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান। শেষের দিকে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ৩৫ বলে ৪২ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেললে শ্রীলঙ্কার রান তিন শ ছাড়িয়ে যায়।

করুনারত্নে অবশ্য পাথুম নিশাঙ্কাকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন। ২৬ বলে ২০ রান করে ইনিংসের শুরুতে করুনারত্নের কাজটা সহজ করে দিয়েছেন নিশাঙ্কা। কিন্তু ইনিংসের নবম ওভারে নিশাঙ্কাকে আউট করেন ব্যারি ম্যাকার্থি। ভালো লেংথ থেকে লাফিয়ে ওঠা চতুর্থ স্টাম্পের বলে পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে গ্যারেথ ডিলানিকে ক্যাচ দেন নিশাঙ্কা। ঠিক পরের বলেই এলবিডব্লিউ তিনে নামা কুশল মেন্ডিস।

ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন ম্যাকমুলেন

ব্যাটিং পাওয়ারপ্লেতেই জোড়া উইকেট হারানোর ধাক্কাটা শ্রীলঙ্কা কাটিয়ে ওঠে করুনারত্নের দৃঢ়তায়। মাঝের ওভারে আর কোনো উইকেট পড়তে দেননি এই বাঁহাতি। ক্যারিয়ারের দ্বাদশ ওয়ানডে খেলতে নামা সামারাবিক্রমাও দারুণ খেলেছেন। করুনারত্নের মতো ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিটা হতে পারত তাঁরও। কিন্তু ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে ডিলানির ফুল লেংথের বলে শর্ট কাভারে ক্যাচ তোলেন। ৮২ রানের ইনিংসে মাত্র চারটি চার মারলেও স্ট্রাইক রেট ছিল ৯৫.৩৪।

করুনারত্নের ইনিংসও এগিয়েছে প্রায় একই গতিতে। ১০০ বল খেলে ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন করুনারত্নে। মার্ক অ্যাডাইরের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ১০৩ বলে ১০৩ রান করেন তিনি। ৮টি চার ছিল এই বাঁহাতি ওপেনারের ইনিংসে। দুই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের গড়ে দেওয়া মঞ্চ কাজে লাগিয়েছেন চারিত আসালাঙ্কা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। আউট হওয়ার আগে আসালাঙ্কা ৩০ বলে ৩৮ রান করেন, ডি সিলভা অপরাজিত ছিলেন ৩৫ বলে ৪২ রানে। শেষের দিকে দ্রুত রানের পেছনে ছুটতে গিয়ে ইনিংসের এক বল বাকি থাকতে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। আয়ারল্যান্ডের অ্যাডাইর নেন ৪ উইকেট।

দিনের অন্য ম্যাচে ওমানকে ৭৬ রানে হারিয়েছে স্কটল্যান্ড। করুনারত্নের মতো প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন স্কটল্যান্ডের ব্রেন্ডন ম্যাকমুলেনও। ওমানের বিপক্ষে ম্যাকমুলেনের ১২১ বলে ১৩৬ রানের ইনিংসে স্কটল্যান্ড আগে ব্যাটিং করে তোলে ৫০ ওভারে ৩২০ রান। জবাবে ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ২৪৪ রান তুলেই থামে ওমান।