এ দিনটার জন্য সরফরাজ খানের অপেক্ষা বেশ দীর্ঘই। বয়স ২৬, তবে টেস্ট দলে তাঁর আসা নিয়ে আলোচনা চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত পারফর্ম করে গেলেও সুযোগটা পাচ্ছিলেন না। অবশেষে আজ রাজকোটে ভারতের হয়ে খেলার স্বপ্নপূরণ হলো তাঁর। শুধু তাঁর নয়, যে স্বপ্ন ছিল তাঁর বাবারও।
অনিল কুম্বলের কাছ থেকে টেস্ট ক্যাপ পাওয়ার পর বাবা নওশাদ খান ও স্ত্রীর সঙ্গে সরফরাজের আবেগঘন মুহূর্তের ভিডিও এরই মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। প্রথম দিনই ভারত ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও সরফরাজকে ক্রিজে নামতে অপেক্ষা করতে হয়েছে বেশ কিছুক্ষণ। রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে রোহিত শর্মার জুটি ব্যাটিং করেছে প্রায় ৫৫ ওভার।
সে সময় নিজের মনোভাব নিয়ে সরফরাজ দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘প্রায় চার ঘণ্টা প্যাড পরে বসে ছিলাম। আমি শুধু ভাবছিলাম, জীবনে অনেক ধৈর্য ধরেছি। আরেকটু ধরলে ক্ষতি নেই।’
নামার পর প্রথম বলেই মার্ক উড তাঁকে বাউন্সার দেন। সে সময় একটু নড়বড়েই ছিলেন সরফরাজ, ‘যাওয়ার পর প্রথম কয়েক বল একটু স্নায়ুচাপে ভুগছিলাম। তবে এত কঠোর পরিশ্রম ও অনুশীলন করেছি, সবই ভালোভাবে গেছে।’
৬৬ বলে ৬২ রানের ইনিংসের পর সরফরাজ হয়েছেন রানআউট। শতকের অপেক্ষায় থাকা রবীন্দ্র জাদেজার ডাকে সাড়া দিয়ে সিঙ্গেল নিতে গিয়েছিলেন, তবে জাদেজা আবার ফিরিয়ে দেন তাঁকে। জাদেজার সঙ্গে এ ঘটনাকে ‘ভুল–বোঝাবুঝি হতেই পারে’ বলেছেন সরফরাজ।
সব মিলিয়ে অভিষেক টেস্টের প্রথম দিনের পর দারুণ খুশি তিনি, ‘মাঠে প্রথমবার এসেছি, আব্বুর সামনে ক্যাপ নিয়েছি। ছয় বছর বয়সে তিনি আমার ক্রিকেট শুরু করেছিলেন। তাঁর সামনে ভারতীয় দলের হয়ে খেলা আমার স্বপ্ন ছিল। তিনি বেঁচে থাকতে ভারতের হয়ে খেলা স্বপ্ন ছিল। ভারতের হয়ে খেলা আমার আব্বুরও স্বপ্ন ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি পারেননি কিছু কারণে। বাসা থেকেও তখন তেমন সহায়তা ছিল না। এরপর তিনি আমাকে নিয়ে অনেক খেটেছেন, এখন আমার ভাইকে নিয়ে খাটছেন। আমার জীবনের সবচেয়ে গর্বের মুহূর্ত।’
সরফরাজের প্রশংসা করেছেন ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ পল কলিংউডও, ‘বেন (স্টোকস) আক্রমণাত্মক ফিল্ডিং সাজিয়েছিল, যাতে সুযোগ তৈরি করা যায়। তাকে কৃতিত্ব দিতে হবে, সে ওপর দিয়ে মারার সাহস দেখিয়েছে। সুইপ সত্যিই ভালো খেলেছে, বোলারদের চাপে ফেলেছে। অভিষেকে এভাবে খেলতে অনেক সাহসের দরকার।’